অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অনুশীলনী প্রশ্নের উত্তর (আঞ্চলিক শক্তির উত্থান) - Online story

Tuesday 3 January 2023

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অনুশীলনী প্রশ্নের উত্তর (আঞ্চলিক শক্তির উত্থান)

 

  অষ্টম শ্রেণী 

ইতিহাস (প্রথম অধ্যায়)

 


  "ইতিহাসে ধারণা" প্রথম অধ্যায়টি দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন

 ৩ অধ‍্যায় অনুশীলন উত্তর দেখুন

  অষ্টম শ্রেণী 

ইতিহাস 

প্রথম অধ্যায় 

অনুশীলনী প্রশ্নের উত্তর

 আঞ্চলিক শক্তির উত্থান
ভেবে দেখো
খুঁজে দেখো


১।

ক-স্তম্ভের সঙ্গে খ-স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :

উত্তর-
অযোধ্যা               >      সাদাৎ খান
১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দ,     >     বক্সারের যুদ্ধ
স্বত্ববিলোপ নীতি।  >    লর্ডডালহৌসি
লাহোরের চুক্তি      >  প্রথম ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ
টিপু সুলতান         >      মহীশূর








২। ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :

ক) ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মুর্শিদকুলি খান ছিলেন বাংলার— (দেওয়ান/ফৌজদার/নবাব)।
উত্তর- দেওয়ান


খ) আহমদ শাহ আবদালি ছিলেন—(মারাঠা/আফগান/পারসিক)।
উত্তর-আফগান



গ) আলিনগরের সন্ধি হয়েছিল— (মির জাফর ও ব্রিটিশ কোম্পানির মধ্যে/সিরাজ ও ব্রিটিশকোম্পানির মধ্যে/মির কাশিম ও ব্রিটিশ কোম্পানির মধ্যে)।


উত্তর-সিরাজ ও ব্রিটিশকোম্পানির মধ্যে।




ঘ)ব্রিটিশ কোম্পানিকে বাংলা-বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানির অধিকার দেন—(সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম/সম্রাট ফাররুখশিয়র/
সম্রাট ঔরঙ্গজেব)।

উত্তর-সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম‌।




ঙ) স্বেচ্ছায় অধীনতামূলক মিত্রতার নীতি মেনে নিয়েছিলেন—(টিপু সুলতান/সাদাৎ খান/নিজাম)।

উত্তর- নিজাম

৩। অতি সংক্ষেপে উত্তর দাও (৩০-৪০টি শব্দ) :

(ক)ফাররুখশিয়রের ফরমানের গুরুত্ব কি ছিল?


উঃ।  মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়রের ফরমান অনুযায়ী ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে বার্ষিক ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে কোম্পানি বাংলায় বাণিজ্য করার সুযোগ পায়। কোম্পানিকে কোনো কর দিতে হতোনা।

এই ফরমান লাভের একটি ফরমান জারি করেন। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে এই  বাণিজ্যিক অধিকার দেওয়া হয়।  ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দেএই ফরমান অনুযায়ী বার্ষিক ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে কোম্পানি বাংলায় বাণিজ্য করতে পারে কিন্তু কোম্পানিকে কোনো কর দিতে হবে না। তারা ভারতীয় বণিকদের তুলনায় সুবিধাভোগী শ্রেণিতে পরিণত হয়।



(খ) কে, কীভাবে ও কবে হায়দরাবাদে আঞ্চলিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

উঃ। আসফ ঝা’ হায়দরাবাদে আঞ্চলিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

১৭২৪ খ্রিস্টাব্দে হায়দরাবাদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
 মির কামার-উদ-দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে মুঘল কর্তৃত্ব মেনে চলতেন। কিন্তু বাস্তবে
প্রশাসনের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ তিনি স্বাধীনভাবে চালাতেন। এর ফলে হায়দরাবাদে স্বাধীন আঞ্চলিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় ।






(গ) ‘পলাশির লুণ্ঠন’ কাকে বলে?
উত্তর-নবাব মির জাফরকে সহায়তা করার বিনিময়ে ব্রিটিশ কোম্পানি অবাধে সম্পদ হস্তগত করতে থাকে। পলাশির যুদ্ধের পর সিরাজের কলকাতা আক্রমণের
অজুহাতে ১ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নেয় কোম্পানি। তার উপরে ক্লাইভ সহ কোম্পানির উঁচু পদাধিকারীরা মির জাফরের থেকে প্রচুর সম্পদ ব্যক্তিগতভাবে পেয়েছিলেন। সব মিলিয়ে পলাশির
যুদ্ধের পরে পরে প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ মির জাফরের থেকে আদায় করে ব্রিটিশ কোম্পানি। কোম্পানির তরফে এই অর্থ আত্মসাৎকে "পলাশির লুণ্ঠন " বলা হয়। ।


(ঘ) দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা বলতে কী বোঝো?
উত্তর-


 কোম্পানির দেওয়ানি লাভের ফলে বাংলায় এক নতুন ধরনের রাজনৈতিক শাসনতন্ত্র কায়েম হয়। তৈরি হয়। একদিকে রাজনৈতিক ও নিজামতের দায়িত্ব যাবতীয় আইন শৃঙ্খলা দায়িত্ব রয়ে গিয়েছিল নবাব নজম উদ-দৌলার উপর। অন্যদিকে। আদায়ের অধিকার পেয়েছিল ব্রিটিশ কোম্পানি। ফলে ছিল অর্থনৈতিক ক্ষমতাহীন রাজনৈতিক দায়িত্ব। ব্রিটিশ কোম্পানি পেয়েছিল দায়িত্বহীন অর্থনৈতিক ক্ষমতা।
(Dual system of administration) বলা হয়।
(ঙ) ব্রিটিশ রেসিডেন্টদের কাজ কী ছিল?
উত্তর-
১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধের পরে কোম্পানি বাংলা, অযোধ্যা ও হায়দরাবাদের
রাজদরবারে নিজেদের প্রতিনিধি বা রেসিডেন্ট নিয়োগ করে। তবে সেইসময়ে
রেসিডেন্টরা নিজেদের কাজকর্ম বিষয়ে সংযত থাকতেন। লর্ড ওয়েলেসলির শাসনকালে রেসিডেন্টরা সাবধানতার বদলে আগ্রাসী নীতি নিয়েছিলেন। ওয়েলেসলির অধীনতামূলক মিত্রতার নীতি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। অনেক সময় রেসিডেন্টরা কোম্পানিকে সরাসরি এলাকা দখলের জন্য উসকে দিতে থাকে। তবে লর্ড কর্নওয়ালিস ভারতে আসার পর সাময়িকভাবে রেসিডেন্সি ব্যবস্থার আগ্রাসন থমকে যায়। কিন্তু কর্নওয়ালিস মারা যাওয়ার পরে নতুন করে কোম্পানি এলাকা দখলের কাজে উদ্যোগী হয়।

৪। নিজের ভাষায় লেখো (১২০-১৬০টি শব্দ) :
ক )  অষ্টাদশ শতকে ভারতে প্রধান আঞ্চলিক শক্তিগুলির উত্থানের পিছনে মুঘল সম্রাটদের ব্যক্তিগত অযোগ্যতাই কেবল দায়ী ছিল? তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর-ভারতে প্রধান আঞ্চলিক শক্তিগুলির উত্থানের পিছনে মুঘল সম্রাটদের ব্যক্তিগত অযোগ্যতাই কেবল দায়ী ছিল ।কারণ সম্রাট জাহাঙ্গীর ও শাহজাহানের সময় থেকে মুঘল কাঠামো দুর্বল হতে শুরু করে। সম্রাট ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে তা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। এর ফলে সামরিক কাঠামো সংস্কার করে উঠতে পারেনি । ভিতরে বিদ্রোহ ও বাইরে আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারিনি, । জায়গিদারী ও মনসবদারি ব্যবস্থাও মোগল শাসনব্যবস্থার কাঠামোকে বিপর্যস্ত করে তোলে । আর এই সুযোগেই আঞ্চলিক শক্তি গুলি তার প্রসার বৃদ্ধি ঘটায়।

খ) পলাশির যুদ্ধ ও বক্সারের যুদ্ধের মধ্যে কোনটি ব্রিটিশ কোম্পানির ভারতে ক্ষমতা বিস্তারের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর- পলাশীর যুদ্ধের তুলনায় বক্সারের যুদ্ধ ব্রিটিশ কোম্পানির ভারতে ক্ষমতা বিস্তারে লাভের বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পলাশী যুদ্ধে শুধু বাংলার নবাবের পরিবর্তন হয়েছিল। ব্রিটিশরা বাংলা ব্যবসা করার অভাব সুযোগ সরাসরি পায়নি । এবং রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা সরাসরি পায়নি। কিন্তু বক্সে যুদ্ধের ফলে বাংলা ,বিহার ,উড়িষ্যার তিনটি রাজ্যের অর্থনৈতিক ক্ষমতা বা রাজস্ব আদায় ব্রিটিশ সরকারের হাতে চলে গেছিল। ফলে তারা অনেক লাভবান হয়েছিল।


গ) মির কাশিমের সঙ্গে ব্রিটিশ কোম্পানির বিরোধের ক্ষেত্রে কোম্পানির বণিকদের ব্যক্তিগত ব্যবসার কী ভূমিকা ছিল
বাংলায় শাসন ব্যবস্থার প্রভাব কী হয়েছিল?


উত্তর-ব্রিটিশ কোম্পানি সহযোগিতায় নবাব পদ পাওয়ার ফলে প্রায় ২১ লক্ষ টাকার
সম্পদ কোম্পানির আধিকারিকদের
দিয়েছিলেন মির কাশিম। তাছাড়া
বর্ধমান, মেদিনীপুর ও চট্টগ্রামের
জমিদারির অধিকারও মির কাশিম
ব্রিটিশ কোম্পানিকে দিয়েছিলেন।
ফলে গোড়ায় মির কাশিমকে
নিজেদের বশংবদ হিসাবেই ভেবেছিল ব্রিটিশ কোম্পানি। কিন্তু তাদের সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। বাংলার রাজধানী হিসাবে মুর্শিদাবাদের বদলে মুঙ্গেরকে বেছে নিয়েছিলেন মির কাশিম। পাশাপাশি নবাবের পুরোনো সৈন্য বাহিনীকে খারিজ করে আধুনিক সেনাবাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। এমনকি ক্ষমতাবান জগৎ শেঠদের থেকেও দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন মির কাশিম। তবে গোড়ায় ব্রিটিশ কোম্পানি মির কাশিমের পদক্ষেপগুলি নিয়ে বিশেষ ভাবিত ছিল না। ক্রমে ব্রিটিশ কোম্পানির
কর্মচারীদের ব্যক্তিগত বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে মির কাশিমের সঙ্গে কোম্পানির বিবাদ শুরু হয়। কোম্পানির বণিকদের তরফে বেআইনি ব্যবসার ফলে বাংলার অর্থনীতি সমস্যার মুখে পড়েছিল। একদিকে কোম্পানি শুল্ক ফাঁকি দেওয়ায় নবাবের প্রাপ্য রাজস্বে
ঘাটতি পড়েছিল। অন্যদিকে দেশীয় বণিকরা শুল্ক দিতে বাধ্য হওয়ায় অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছিল। তাছাড়া অন্যান্য বিদেশি বণিক গোষ্ঠীও ব্রিটিশ কোম্পানির ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে নবাবের কাছে নালিশ জানাতে থাকে। শেষপর্যন্ত নবাব দেশীয় বণিকদের উপর থেকেও বাণিজ্য শুষ্ক তুলে নেন। ফলে অসম প্রতিযোগিতার হাত থেকে দেশীয় বণিকরা রক্ষা পেলেও নবাবি কোশাগার অর্থসংকটের মুখে পড়ে।

 

 

ওরে অধ্যায় দেখো