নবম শ্রেণির ইতিহাস ৪ অধ‍্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর শিল্প বিপ্লব , উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ - Online story

Monday 27 March 2023

নবম শ্রেণির ইতিহাস ৪ অধ‍্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর শিল্প বিপ্লব , উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ

 

 

 

পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্নের  প্রশ্নের উত্তর দেখুন বিংশ শতকে ইউরোপ

 নবম শ্রেণির
ইতিহাস
৪ অধ‍্যায়

অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
শিল্প বিপ্লব , উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ
বিভাগ (ক) বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলি
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো।

১. সর্বপ্রথম শিল্পবিপ্লব ঘটেছিল
(A)
ইংল্যান্ডে
(B)ফ্রান্সে
(C)জার্মানিতে
(D) সোভিয়েত রাশিয়ায়
উত্তর-(A)ইংল্যান্ডে




২.ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপট রচনা করে--
(A )বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার
( B)বৈদেশিক যুদ্ধ
 (C)গৃহযুদ্ধ
(D)ভৌগোলিক অভিযান

উত্তর-(A )বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার



৩. উদীয়মান স্থানীয় ভদ্র শ্রেণি বা জেনট্রি আর্থসামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়–
(A) ফ্রান্সে
(B)ইটালিতে
(C) ইংল্যান্ডে
(D)জার্মানিতে
উত্তর-(C) ইংল্যান্ডে

৪. বিশ্বে পুঁজিবাদী অর্থনীতির গুরুত্ব বাড়ে—

(A) ফরাসি বিপ্লবের পর
(B)শিল্পবিপ্লবের পর
(C) রুশ বিপ্লবের পর
(D) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর

উত্তর-(B)শিল্পবিপ্লবের পর


৫. বিশ্বে প্রথম কারখানা হিসেবে পরিচিত দেশটি হল—

(A) ব্রিটেন
(B) ফ্রান্স
(C) জার্মানি
(D) ইটালি
উত্তর-(A) ব্রিটেন


বিভাগ খা অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলি
একটি বাক্যে উত্তর দাও।

১. ‘ডেভিড কপারফিল্ড’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর- ডেভিড কপারফিল্ড’ গ্রন্থের রচয়িতা হলেন চার্লস ডিকেন্স।


২. ‘দাস ক্যাপিটাল’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর-দাস ক্যাপিটাল’ গ্রন্থের রচয়িতা হলেন কার্ল মার্কস ও তাঁর সহযোগী ফ্রেডারিক এঙ্গেল্স ।

৩. কে প্রথম রেল ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন?
উত্তর- প্রথম রেল ইঞ্জিন আবিষ্কার
করেন জর্জ স্টিফেনসন।

৪. নৈরাজ্যবাদের জনক কাকে বলা হয়?

উত্তর-নৈরাজ্যবাদের জনক বলা হয়" জোসেফ প্রুডো"কে।


৫. কবে প্রথম আটলান্টিক কেব্‌ল পাতা হয়?

উত্তর-১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম আটলান্টিক কেব্‌ল পাতা হয়।

৬. কোন্ দেশ চিনে উন্মুক্ত দ্বার নীতির প্রস্তাব তোলে?
উত্তর- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনে উন্মুক্ত দ্বার নীতির প্রস্তাব তোলে।


৭. কে সেফটি ল্যাম্প আবিষ্কার করেন?


উত্তর-সেফটি ল্যাম্প আবিষ্কার করেন "হামফ্রি ডেভি"।

৮. ম্যাক্সিম গোর্কির কোন্ উপন্যাসে রুশবাসীর নাগরিক জীবন কাহিনির বিবরণ রয়েছে?

উত্তর-ম্যাক্সিম গোর্কির "দ‍্য মাদার" উপন্যাসে রুশবাসীর নাগরিক জীবন কাহিনির বিবরণ রয়েছে।


৯. সেরাজেভো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সার্ব উগ্রজাতীয়তাবাদী সংগঠনটির নাম কী?
উত্তর-সেরাজেভো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সার্ব উগ্রজাতীয়তাবাদী সংগঠনটির নাম-"দ‍্য ব্লাক হ‍্যাণ্ড"।

১০. কোন্ দেশ ইউনিয়ন অব সাউথ আফ্রিকা গঠন করে?
উত্তর-  ইংল্যান্ড  অথাৎ"ব্রিটিশ রা ইউনিয়ন অব সাউথ আফ্রিকা গঠন করে।

১১. শিল্পবিপ্লব কীভাবে নগরসভ্যতার উন্মেষ ঘটায়?

উত্তর- শিল্প বিপ্লবের সূত্রে কলকারখানার বিকাশ‌ শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রসার এবং যাতায়াত ব্যবস্থা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা গুলির জন্য শহরগুলির প্রতি জনগণের আকর্ষণ ক্রমেই বাড়তে থাকে ।ফলে নগর সভ্যতার উন্মেষ বটে।


১২. ইউরোপে কীভাবে সাম্যবাদী ভাবধারার উদ্ভব ঘটে?
উত্তর- ইউরোপ মহাদেশে শিল্প বিপ্লব ঘটার সূত্রে সমাজের দুটি নতুন শ্রেণীর সৃষ্টি হয়েছিল। একটি মালিক শ্রেণী অপর টি শ্রমিক শ্রেণী ।একজনের ছিল মুনাফা লাভের উদ্দেশ্য ।অন্যজনে ছিল শ্রম বিনিময় করা এর ফলেই সাম্যবাদী ভাবধারার উদ্ভব ঘটে।

ঠিক বা ভুল নির্ণয় করো।



১. ঘেটো হল শিল্পবিপ্লবকালে ছোটো  শহরাঞ্চল।
উত্তর-ঠিক

২. শিল্পবিপ্লবের ফলে নতুন শহর গড়ে ওঠে।
উত্তর-ঠিক


৩. ভারত ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রত্ন।

উত্তর-ঠিক

৪.বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন
জেমস ওয়াট।

উত্তর-ঠিক


ক’স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও।
‘ক’ স্তম্ভ‘.                             খ’ স্তভ
ব্লাস্ট ফারনেস            C জন স্মিটন
® স্পিনিং জেনি          A হারগ্রিভস
3 ওয়াটার ফ্রেম        D রিচার্ড আর্করাইট
4 পাওয়ার লুম          B এডমন্ট কার্টরাইট


'ক' স্তম্ভ.                         'খ' স্তম্ভ

(1) অলিভার টুইস্ট     -  চার্লস ডিকেন্স
(2) দ্য টাউন লেবারার.  -  হ‍্যামণ্ডস
(3) কল্পনাতন্ত্রী সমাজবাদী  -শার্ল ফুরিয়ের
(4) নৈরাজ্যবাদী               -     বাকুনিন


■ প্রদত্ত রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত করো ও নাম লেখো।
১. ম্যানচেস্টার–শিল্পবিপ্লবের ফলে গড়ে ওঠা একটি শহর।
২. সেরাজেভো—যেখানে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে গ্যাভরিলো
প্রিন্সেপের হাতে অস্ট্রিয়ার যুবরাজ নিহত হন। ৩. মস্কো
রাশিয়ার রাজধানী। ৪. রুঢ়—জার্মানির শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চল।



শূন্যস্থান পূরণ করো।

১. উড়ন্ত মাকু আবিষ্কার করেন----

উত্তর-জন কে

২."মাদার'উপন্যাসের রচয়িতা হলেন--
উত্তর-ম‍্যাক্সিন গোর্কি


৩.ইউরোপীয় সমাজবাদী হলেন--

উত্তর- টমাস মোর অথবা শার্ল ফুরিয়ের।

৪. টেলিগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার-----
করেন

উত্তর- স্যামুয়েল এফ বি মোর্স।

 ৫. ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে কার্ল মার্কস ও তাঁর সহযোগী ফ্রেডারিক এঙ্গেল্স --- প্রকাশ করেন।

উত্তর- দাস ক্যাপিটাল

৬. সপ্তদশ শতকে --- রাস্তার উন্নতির লক্ষ্যে গঠিত হয় টার্নপ্রাইক ট্রাস্টস।
উত্তর- ব্রিটেনের

৭. টিয়েনসিন সন্ধির দ্বারা চিনের---বন্দর বিদেশি বণিকদের ব্যবহারের জন্য খুলে দিয়েছিল?
উত্তর- এগারো টি।



নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্বাচন করো।
১. বিবৃতি: ঘেটো ছিল মূলত শহরের সবচেয়ে গরিব ও দুর্দশাগ্রস্ত অঞ্চল
ব্যাখ্যা : (ক) এখানে বসবাসকারী কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
 (খ) এখানে কর্মচ্যুত শ্রমিকদের বাসভূমি নির্দিষ্ট হয়েছিল।
 (গ) এখানে সাধারণত দরিদ্র শ্রমিক শ্রেণির বসবাস ছিল।

উত্তর-(গ) এখানে সাধারণত দরিদ্র শ্রমিক শ্রেণির বসবাস ছিল।



২. বিবৃতি: ইংল্যান্ডে সবার আগে শিল্পবিপ্লব ঘটেছিল।
ব্যাখ্যা : (ক) ইংল্যান্ডে সবার আগে শিল্প পরিকাঠামো গড়ে উঠেছিল।
(খ) ইংল্যান্ডের মানুষ অন্য দেশের তুলনায় অধিক শিক্ষিত ছিল।
(গ) ইংল্যান্ডে শিল্পজাত পণ্যসামগ্রীর চাহিদা
ছিল সর্বাধিক।
উত্তর-: (ক) ইংল্যান্ডে সবার আগে শিল্প পরিকাঠামো গড়ে উঠেছিল।


বিভাগ গ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলি
২-৩টি বাক্যে উত্তর দাও।


১. শিল্পবিপ্লর কাকে বলে?
উত্তর- মানুষের শ্রমের পরিবর্তে যন্ত্রের সাহায্যে উৎপাদন ব্যবস্থায় এবং উৎপাদনের মাত্রায় যে বিশাল পরিবর্তন ঘটে তা হলো শিল্প বিপ্লব।


 ২. শিল্পবিপ্লবের অঞ্চল উল্লেখ করো।
উত্তর-শিল্পবিপ্লর সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে শিল্পবিপ্লব ইউরোপীয় মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে । ইংল্যান্ডের পর ইউরোপের বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়ায় শিল্পবিপ্লবের ঢেউ আছড়ে পরে। এরপর আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করে শিল্পবিপ্লব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছোয়


৩. ফ্যাক্টরি বা কারখানা প্রথা বলতে কী  বোঝ ?
উত্তর-শিল্পবিপ্লবের সুবাদে ফ্যাক্টরি প্রথা বা কারখানা প্রথার উদ্ভব ঘটে | লৌহ-ইস্পাত শিল্পের মতো ভারী শিল্পের প্রসার ঘটলে কারখানা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন দেখা দেয়। কারখানা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন হয় জমি,মূলধন, কাঁচামাল, শ্রমিক, ব্যাংকিং বা যৌথ বা একক মালিকানা ব্যবস্থার। মিলিতভাবে এই পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাটি হল ফ্যাক্টরিবা কারখানা প্রথা


৪. আফ্রিকাকে ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ' বলা হয় কেন?
উত্তর- দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিকা অন্যান্য মহাদেশের তুলনা পিছিয়ে ছিল। কোন সভ্যতার আলো আফ্রিকা মহাদেশে পৌঁছায়নি। তাই আফ্রিকাকে অন্ধকারাছন্ন মহাদেশ বলা হয়।

 ৫. উত্তর-দক্ষিণ বিভাজন বলতে কী বোঝ?
উত্তর-

৬. নৈরাজ্যবাদ কী?

উত্তর- সমাজবাদের বিপরীত ধর্মী মতবাদ হল নৈরাজ্যবাদ।


 ৭. প্যারি কমিউনী কী?
উত্তর-1870-71 খ্রিস্টাব্দের ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়ান যুদ্ধে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ান পরাজিত ও বন্দি হওয়ার পর রাজতন্ত্রী ফ্রান্সের প্রাচীন রাজধানী ভার্সাইতে একটি
প্রজাতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। এই সরকার প্রাশিয়ার সঙ্গে অপমানজনক শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে। কিন্তু বিপ্লবী ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস শহরে সমাজতন্ত্রী, মার্কসবাদী এবং পুরোনো জ্যাকোবিন নেতাদের উদ্যোগে একটি সমাজতন্ত্রী
ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। একে বলা হয় ‘প্যারি কমিউন’।


 ৮. টার্নপাইক ট্রাস্ট বলতে কী বোঝ?
উত্তর- সপ্তদশ শতকে বৃটেনের রাস্তায় উন্নতি লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে গঠিত হয় টার্নপাইক ট্রাস্ট। এর ফলে ব্রিটেনে রাস্তাঘাট নির্মাণ শিল্পে অনেক উন্নতি ঘটেছিল


৯. শিল্পবিপ্লবকালের ইংল্যান্ডকে বিশ্বের কারখানা বলা হয় কেন?
উত্তর- শিল্প বিপ্লবকালে ইংল্যান্ডৈ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার কে কাজে লাগিয়ে শিল্পজাত পণ্য সামগ্রী উৎপাদন বহুগুণ বেড়ে যায়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত শিল্প বিপ্লবের জন্য বহি বিশ্বে বাজার দখলে প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়‌ বিশ্বের বিভিন্ন ব্রিটিশ উপনিবেশ গুলিতে ইংল্যান্ড জাতীয় পণ্য বিক্রয় শুরু হয় ।ইংল্যান্ড পরিণত হয় বিশ্ব কারখানায়।


১০. Semaphore Relay কী?
উত্তর-Semaphore Relay হইল প্রথম দিকের টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা । ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে সংবাদ পাঠানোর জন্য এর এর ব্যবহার শুরু হয়। এই ব্যবস্থায় কয়েক মাইল দূর পর্যন্ত সংবাদ পাঠানো যেত।


মান 8
বিভাগ ঘ বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নাবলি
৭-৮টি বাক্যে উত্তর দাও।




১. শিল্পবিপ্লবের সময়কালের ওপর নানা মত সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর-শিল্পবিপ্লবের সময়কাল
শিল্পবিপ্লবের সময়কাল নিয়ে অর্থনীতিবিদ এবং ইতিহাসবিদদের মধ্যে মত পার্থক্য রয়েছে। অনেকের ধারণায় শিল্পবিপ্লব ছিল এক আকস্মিক ঘটনা। আবার কেউ কেউ মনে করেন, শিল্পবিপ্লব ছিল এক দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া। আর্নল্ড টয়েনবির মতে, শিল্পবিপ্লব ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ শুরু হয়।
রস্টোর ধারণায় ১৭৮৩ থেকে ১৮০২ খ্রি. পর্যন্ত সময়কালে শিল্পক্ষেত্রে জোয়ার আসে। ১৫৪০-এর দশকে ইংল্যান্ডের মঠগুলির উচ্ছেদ ঘটানোর পর শিল্পায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়।অনেকের ধারণায় শিল্প বিপ্লবের প্রকৃত সময়কাল হল ১৮৩০-১৮৪০ খ্রিস্টাব্দ।



২.শিল্পসমাজের সংক্ষিপ্ত সমালোচনা তুলে ধরো।

উত্তর-
শিল্পসমাজের উদ্ভব ও তার মধ্যেকার বিভাজন
প্রাক্-শিল্পবিপ্লব যুগের সমাজে কৃষি উৎপাদন ও শিল্প উৎপাদন পরস্পরের হাত ধরে চলেছে। একই পরিবার প্রয়োজন ও অবসর মতো নিযুক্ত থেকেছে কৃষি বা শিল্প উৎপাদনে। পৃথক শিল্পসমাজের উদ্ভব তখনও হয়নি। বাণিজ্য ও শিল্পজাত পণ্যের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পেলে শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হয়। গ্রামীণ কুটির শিল্পকেন্দ্রিক উৎপাদন ব্যবস্থার বদলে আসে শহুরে কারখানা ভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা। নতুন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত শ্রমিক এবং পুঁজিপতি মালিক উভয়েই ছিল নতুন শিল্পসমাজের অঙ্গ। নতুন শিল্পসমাজের মধ্যে অবশ্যই স্পষ্ট বিভাজন ছিল। প্রাক্-শিল্পবিপ্লব যুগে পণ্যের উৎপাদক গোটা উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকত এবং অনেক ক্ষেত্রেই সে ছিল উৎপাদিত পণ্যের মালিক। কিন্তু পরবর্তী যুগে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় তার যোগ থাকে কেবল বিশেষ বিশেষ।ক্ষেত্রে । পণ্যের মালিকানা চলে যায় পুঁজিপতি সম্প্রদায়ের হাতে। শ্রমিক ও পুঁজিপতি মালিকের মধ্যে একটা স্পষ্ট বিভাজনরেখা গড়ে ওঠে যা পূর্ববর্তী যুগে ছিল না।
 ৩. যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার কী ভূমিকা ছিল?
উত্তর-প্রথমদিকে টেলিগ্রাফ
ব্যবস্থাকে মূল্য ও বাজার সম্পর্কে বাণিজ্যিক তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এই ব্যবস্থার সাহায্যে শিল্পবিপ্লবজাত পণ্যসামগ্রীর সংবাদ আদানপ্রদানে সুবিধা হয় । বাণিজ্যে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশগুলির জাহাজের
সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। পণ্যসামগ্রীর আর্থিক মূল্যনির্ধারণ, নগদ পরিশোধ-সহ বাণিজ্য সম্পর্কিত যাবতীয় সংবাদের লেনদেন আগের তুলনায় অনেকগুণ সহজ হয়ে ওঠে।


 ৪. “ভারত, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রত্ন”—এই উক্তির যথার্থতা উল্লেখ করো।
উত্তর-ব্রিটিশ কোম্পানির আমলে গোড়ার দিকে মূল সমস্যা ছিল ভারতে তৈরি সুতিবস্ত্র, রেশম শিল্পসামগ্রীর চাহিদা ইংল্যান্ড ও ইউরোপের বাজারে যথেষ্ট থাকলেও ইংল্যান্ড ও ইউরোপের তৈরি শিল্পসামগ্রীর চাহিদা ভারতে প্রায় ছিলই না। ফলত, ব্রিটেন থেকে সোনা বা রুপোর মতো মূল্যবান ধাতুর বিনিময়ে ভারতীয় পণ্য ক্রয় করতে হত। কিন্তু পলাশির যুদ্ধ ও দেওয়ানি লাভের পরবর্তী অধ্যায়ে চিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছিল। কোম্পানি বাংলার দেওয়ানি থেকেbপ্রাপ্ত অর্থ দিয়েই দ্রব্যসামগ্রী কিনে ইংল্যান্ডে পাঠাত। এইভাবে ভারতীয় সম্পদের নিগর্মন হতে থাকে। আরও পরে ইংল্যান্ডের ম্যাঞ্চেস্টারে তৈরি বস্ত্রের চাপে ভারতীয় বস্ত্রশিল্পের সর্বনাশ ঘটে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ।করে। ভারতীয় পণ্য ব্রিটেনে রপ্তানির পরিমাণ অনেক কমে আসে। যদিও এর পশ্চাতে ব্রিটিশ সরকারের শুল্কনীতিও অনেকখানি দায়ী ছিল ফল স্বরূপ উনবিংশ শতাব্দী থেকে পশ্চিম ভারতের তুল্য বাংলার পাঠ আসামের চা পাঞ্জাবের ঘুম দক্ষিণ ভারতের তৈলবির চামড়া ইত্যাদি ইংল্যান্ডে চালান হতে থাকে।




 ৫. ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার
অর্থনৈতিক দিকটি তুলে ধরো।

উত্তর
শিল্পবিপ্লবের সুবাদে ইংল্যান্ডে বস্ত্রশিল্প ছাড়াও ইস্পাত,কয়লা, লোহা, ধাতু, রাসায়নিক, ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে উন্নতি ঘটে। কয়লা ও লোহা উৎপাদনে ইংল্যান্ড ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে
প্রথম স্থানে ছিল। এ ছাড়াও বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রেও ইংল্যান্ড শীর্ষস্থানে ছি।।।শল্পীবপ্লবজাত এই সমস্ত শিল্পপণ্যের উদ্বৃত্ত অংশ বিক্রয়ের জন্য ইংল্যান্ডও ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত ইংল্যান্ডে মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের অর্থমূল্য ছিল ২.৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে ফ্রান্সে দ্রুত হারে শিল্পায়ন শুরু হয়। বস্ত্র, রেশম, পশম ও সুতির নানা ধরনের শিল্প ও ধাতু শিল্পে ফ্রান্স সুনাম অর্জন করে। এই সমস্ত শিল্প পণ্যের বৈদেশিক বাণিজ্যের লক্ষ্যে ফ্রান্সও উদ্যোগী
হয়। তবে এক্ষেত্রে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত ফ্রান্সের বৈদেশিক বাণিজ্য ছিল জার্মানির অর্ধেক।জার্মানিতে অনেক পরে শিল্পবিপ্লব শুরু হলেও মাত্র ৩০ বছরের মধ্যে এই কৃষিনির্ভর দেশটি ইউরোপের এক শ্রেষ্ঠ শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়। বহির্বিশ্বের বাণিজ্যে জার্মানির স্থান ছিল ইংল্যান্ডের পরে। জার্মানির বার্ষিক
মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের অর্থমূল্য ছিল ২.৫ বিলিয়ন ডলারের সামান্য কম। কয়লা, লোহা, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিদ্যুৎ, রাসায়নিক শিল্প ও বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রে জার্মানি সুনাম অর্জন করে। শিল্পজাত পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার গড়ে তোলার লক্ষ্যে জার্মানি সক্রিয় হয়ে ওঠে। রেলপথ, রাসায়নিক ও বিদ্যুৎ শিল্পে জার্মানি ইংল্যান্ডের থেকে এগিয়ে ছিল।ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে দেরিতে শিল্পায়ন শুরু হয়েছিল সোভিয়েত রাশিয়ায়। ধাতু শিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প ও খনি শিল্প (কয়লা ও পেট্রোলিয়াম) প্রভৃতি ক্ষেত্রে রাশিয়ায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটে।

 ৬. চিনে ব্রিটিশ আগ্রাসনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর-
■ চিনে ঔপনিবেশিক আগ্রাসন : আফ্রিকার মতো চিনও ঊনবিংশ শতাব্দীতে আগ্রাসী উপনিবেশবাদের শিকার
হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে প্রথম বড়ো ধরনের আগ্রাসী অভিযান চালিয়েছিল জাপান। 1895 খ্রিস্টাব্দের চিন-জাপান
যুদ্ধের ফলে ফরমোজা দ্বীপ, লিয়াওটাং উপদ্বীপ এবং মাঞ্চুরিয়ার দক্ষিণ অংশে জাপানের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি জাপানের আগ্রাসনে অসন্তুষ্ট হয়। 1895 থেকে 1898 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং গ্রেট ব্রিটেন চিন আক্রমণ করে। চিনের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদেশি শক্তির আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। জার্মানির দখলে যায় চিনের কিয়াওচাও অঞ্চল। রাশিয়ার অধিকারে আসে পোর্ট আর্থার। ব্রিটিশ আগ্রাসনের ফলে ‘ওয়েই হাই ওয়েই’ অঞ্চলে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হয়। ফরাসিরা দক্ষিণ চিনে তাদের প্রভাব বাড়াতে সচেষ্ট হয়। কিন্তু চিন শেষ পর্যন্ত আফ্রিকার মতো সম্পূর্ণ পরাধীন হয়ে পড়েনি। প্রধানত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে এবং ব্রিটেনের সমর্থনে ঔপনিবেশিক দেশগুলি চিনের ক্ষেত্রে ‘মুক্ত দ্বার’ নীতি গ্রহণ করে। এই নীতিতে বলা হয়, চিনে উপনিবেশ বিস্তার না করে শিল্পোন্নত দেশগুলি সেখানে বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করবে এবং বাণিজ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। সরাসরি সাম্রাজ্য বিস্তার না করে, সাম্রাজ্যের যাবতীয় সুবিধা অর্জন করাই ছিল এই নীতির লক্ষ্য।




৭. আফ্রিকার ব্যবচ্ছেদের প্রেক্ষাপট লেখো।
উত্তর-আফ্রিকা দখলের জন্য ঔপনিবেশিক দেশগুলির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার নিয়মকানুনও ঠিক করে নেওয়া হয়েছিল 1884-85 খ্রিস্টাব্দের বার্লিন কনফারেন্সে। এই সভায় দাস-ব্যাবসার নিন্দা করে প্রস্তাব নেওয়ার পাশাপাশি স্থির হয় যে, কঙ্গো নদীর অববাহিকা বরাবর বেলজিয়ামের অংশ দ্বিতীয় লিওপোল্ডের অধীনে থাকবে। কোনো রাষ্ট্র অপরকে না জানিয়ে আফ্রিকার কোনো অঞ্চলে দাবি জানাবে না এবং আফ্রিকার কোনো অঞ্চলে দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে সেই অঞ্চলকে আগে অধিকার করতে হবে।কিন্তু এই সমস্ত নিয়মকানুন মেনে বা না মেনে আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে ইউরোপীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটেনের দখলে যায় সুদান, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা এবং কেপ কলোনি। দক্ষিণ আফ্রিকার দখল নিয়ে ব্রিটেনের লড়াই হয় বুয়োরদের সঙ্গে। ফরাসিরা পশ্চিম দিক থেকে আফ্রিকায় দখল নেয়। সেনেগাল,মালি, নাইজের, আলজিরিয়া প্রভৃতি অঞ্চল তাদের অধিকারে ছিল। জার্মানি দখল করে আফ্রিকার পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ। বড়ো মাপের শিল্পোন্নত দেশ না হওয়া সত্ত্বেও ইটালি কিন্তু অন্যদের মতোই উপনিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিল। ইটালি সোমালিল্যান্ড বা ইরিট্রিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে।প্রাথমিকভাবে নাটাল, ট্রান্সভাল এবং অরেঞ্জ নদীর উপত্যকা অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করে ওলন্দাজরা।পরবর্তী সময়ে এই অঞ্চলগুলিকে ব্রিটেন ঐক্যবদ্ধ করে 1910 খ্রিস্টাব্দে এর নামকরণ করে 'ইউনিয়ন অফ সাউথ আফ্রিকা’। এই সময় যে সমস্ত অঞ্চলগুলিকে কেন্দ্র করে ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছিল তার মধ্যে আফ্রিকার সুদান, মরক্কো এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।



৮. কীভাবে ইংল্যান্ডে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসে?





৯. অতি-রাষ্ট্রিক অধিকার কী?
উত্তর-।চিনে আফিম বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ইংরেজদের সঙ্গে
চিনের যুদ্ধ বাধে। যুদ্ধে হেরে গিয়ে চিনের মাঞ্জু রাজারা
ইংরেজদের সঙ্গে অপমানজনক নানকিং সন্ধি স্বাক্ষরে
(২৯ আগস্ট, ১৮৪২ খ্রি.) বাধ্য হন। সন্ধির শর্ত অনুযায়ী
ইংরেজ বণিকরা হংকং লাভ করে। ক্যান্টন বন্দরসহ চিনের পাঁচটি বন্দর ইউরোপীয়দের বাণিজ্যের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
ব্রিটিশরা চিনে ‘অতি-রাষ্ট্রিক আইন লাভ করে