হাট "কবিতা যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা - Online story

Thursday 25 May 2023

হাট "কবিতা যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা

" হাট "কবিতা 

যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা



১.১ কোন সাহিত্যিক গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
উত্তর। দুঃখবাদী কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত কল্লোল সাহিত্যগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।


১.২ তার রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর। 'মরুমায়া' এবং 'মরুশিখা' তার লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম।


২. নীচের বাক্যগুলি থেকে এমন শব্দ খুঁজে বের করো যার প্রতিশব্দ কবিতার মধ্যে আছে। কবিতার সেই শব্দটি পাশে লেখো।
উত্তর। ২.১ আবার-সাঁঝে বনের মাঝে উল্লাসে প্রাণ ঢেলেছে। -  সাঁঝে-সন্ধ্যায়

২.২ আলো আমার আলো, ওগো আলো ভুবন ভরা। আলো আলোক বর্ণ


২.৩ তুমি আমার সকালবেলার সুর।
সকাল বেলা। প্রভাত- বেলা


২.৪ আমার রাত পোহালো শারদস্রাতে।
রাত - নিশা

২.৫ দিনের বেলা বাঁশি তোমার বাজিয়েছিলে।
= দিনের বেলা-  দিবসেতে

৩.. সমোচ্চারিত বা প্রায় সমোচ্চারিত ডিমার্থক শব্দগুলোর অর্থ পার্থক্য দেখাও

দীপ-প্রদীপ
দ্বীপ-  জলবেষ্টিত ভূখণ্ড

বাঘা - বিপদ
 বাঁধা- বেঁধে রাখা

 দর - দাম
 দড় - দক্ষ


নিতা-দৈনিক
নৃতা-নাচ


 শাখ - ডালপালা
 শাঁখ- শঙ্খ অথবা বাদ্যযন্ত্র




৫. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর লেখো :
৫.১ কতকগুলি গ্রামের পরে সাধারণত একটি হাট চোখে পড়ে?
উত্তর। সাধারণত দশ-বারোটা গ্রামের পর একটা হাট চোখে পড়ে।


৫.২ হাটে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না কেন?
উত্তর। ফাঁকা মাঠের মাঝখানে হাট বসে। দিনের শেষে সন্ধ্যায় সকলে নিজ নিজ গৃহে ফিরে যায়। তাই হাট নির্জনে একা পড়ে থাকে, সেখানে প্রদীপ জ্বলে না।


৫.৩ কার ডাকে রাত্রি নেমে আসে?
উত্তর। হাটের মধ্যে একক কাকের ডাক রাত্রি নেমে আসে।।

৫.৪ ওপারের লোক কেন এপারেতে আসে?
উত্তর। বিক্রেতারা তাদের পণ্যসামগ্রী নিয়ে এপারে পসরা নামায়। সেই সামগ্রী কেনার জন্য ওপারের লোক এপারে আসে।



৫.৫ ‘হিসাব নাহিরে—এল আর গেল কত ক্রেতা বিক্রেতা’—কোনো হিসাব নেই কেন?
উত্তর। দিনেরবেলা হাট চলাকালীন অসংখ্য মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে হাটে আসে। সেখানে মানুষের আনাগোনার হিসাব রাখার মতো লোক কেউ থাকে না। সেজন্যই কবি বলেছেন হাটে মানুষের আনাগোনার কোনো হিসাব নেই।



৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :


৭.১ হাটের স্থান ছাড়িয়ে দূরের গ্রামের ছবি কীভাবে কবিতায় ফুটে উঠেছে?
উত্তর। ‘হাট’ কবিতায় কবি একটি হাটের সুন্দর বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন। দশ-বারোখানি গ্রামের মাঝখানে একটি
হাট দেখা যায়। গ্রামের লোকজন হাটের জন্য নির্দিষ্ট দিনে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনাবেচা করে এবং যে যার ঘরে ফিরে
যায়। গ্রামের প্রতিটি গৃহকোণে সন্ধ্যাবেলায় প্রদীপ জ্বলে ওঠে। সন্ধ্যার অন্ধকারে ঢেকে যাওয়া হাট গ্রামের পাশেই বয়ে
যাওয়া নদীর বাতাসের দীর্ঘশ্বাস শুনতে পায়। গ্রামের লোকজন স্ব স্ব কাজে ব্যস্ত থাকলেও হাট নির্জনে একা পড়ে থাকে
চেনা-অচেনা মানুষের আগমনের প্রতীক্ষায়।
৭.২ প্রকৃতির ছবি কীরূপ অসীম মমতায় কবিতায় আঁকা হয়েছে—তা আলোচনা করো।
উত্তর। দুঃখবাদী কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত তার ‘হাট’ কবিতায় মমতামেদুর দৃষ্টি নিয়ে প্রকৃতির ছবি আমাদের উপহার
দিয়েছেন। হাট প্রাণহীন, কিন্তু অচেতন হাটের মধ্যে প্রাণসঞ্চার করে কবি হাটের এক জীবন্ত বর্ণনা উপহার দিয়েছেন।

হাট দুপুরবেলা বসে এবং সন্ধ্যায় ভেঙে যায়। হাটের অবসানে সকলে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে যায়। সেখানে সন্ধ্যাবেলায় প্রদীপ জ্বালানো এবং ঝাঁট দেবার জন্য কেউ অপেক্ষা করে থাকে না। সারারাত অন্ধকারের মধ্যে হাট নির্জনে আকাশ এবং মুক্ত বাতাসের স্বচ্ছন্দ গতির মাধ্যমে চিরকাল একই খেলা চলতে থাকে।




৭.৩ ‘বাজে বায়ু আমি বিদ্রূপ বাঁশি’—কবির এমন মনে হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর-দিনের শেষে সন্ধ্যায় হাট ভেঙে যায়। সবাই যে যার মতো নিজ নিজ গৃহে ফিরে যায়। হাট নির্জনে একাই থাকে। হাটের দরজা সর্বদা সকলের জন্য উন্মুক্ত। প্রবহমান বাতাসহীন বাঁশের ছিদ্রপথ দিয়ে প্রবেশ করে বাঁশির মতো শিসের আওয়াজ করে। কবির কল্পনায় মনে হয়েছে প্রকৃতি হাটের নির্জনতাকে ব্যঙ্গ করছে শিসধ্বনির মাধ্যমে।



৭.৪ ‘উদার আকাশে মুক্ত বাতাসে চিরকাল একই খেলা’—কোন্ প্রসঙ্গে কবি আলোচ্য পঙ্ক্তিটি লিখেছেন?তিনি এখানে কোন্ ‘খেলা’র কথা বলেছেন? ‘চিরকাল' চলে বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর। হাট কবিতায় কবি এই পৃথিবীকে একটি নাট্যমঞ বলে কল্পনা করেছেন। পৃথিবী রূপ রঙ্গমঞ্চে আমরা জন্মাই আবার মৃত্যুবরণ করি। সুতরাং মানবজীবনের জন্মমৃত্যুর উল্লেখ করে কবি চিরকাল একই খেলার কথা বলেছেন। কবি এখানে খেলা বলতে মানুষের জন্ম ও মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেছেন, মানুষের জন্মকে আসা এবং মৃত্যুকে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করে একথা বলা হয়েছে।
চিরকাল চলার অর্থ হল জীবনের গতিময়তা যা নিরবচ্ছিন্নভাবে সর্বদা চলতে থাকে। পৃথিবী যখন সৃষ্টি হয় তখন থেকেই মানুষের জন্ম এবং মৃত্যু ঘটে চলেছে। এটি একটা চলমান ধারা যা সনাতন, বিরামহীন। কবি এই জন্মমৃত্যুর নিরবচ্ছিন্ন প্রবহমানতাকে চিরকাল চলার কথা বলেছেন।