সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস আট অধ‍্যায় অনুশীলনী প্রশ্ন উত্তর এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন - Online story

Sunday 16 July 2023

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস আট অধ‍্যায় অনুশীলনী প্রশ্ন উত্তর এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন

 


নয় অধ্যায় ইতিহাস অনুশীলনী দেখুন

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস আট অধ‍্যায়

ভেবে দেখো

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১। নীচের নামগুলির মধ্যে কোন্‌টি বাকিগুলির সঙ্গে মিলছে না তার তলায় দাগ দাও :



(ক) পুণে, কোঙ্কন, আগ্রা, বিজাপুর। 

উঃ। আগ্রা



(খ) বান্দা বাহাদুর, আফজল খান, শায়েস্তা খান, মুয়াজ্জম। 

উঃ। বান্দা বাহাদুর।



(গ) অষ্টপ্রধান, বর্গি, মাবলে, খালসা। 

উঃ। খালসা।



(ঘ) রামদাস, তেগবাহাদুর, জয়সিংহ, হরগোবিন্দ। 

 উঃ। জয়সিংহ।



(ঙ) কেশ, কৃপাণ, কলম, কঙ্ঘা। 


উঃ। কলম।


২। ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :

 


‘খ’ স্তম্ভ

 

রায়গড়         -      শিবাজি

হিন্দুপাদপাদশাহি -প্রথম বাজীরাও

গোলকোন্ডা।   -    দাক্ষিণাত্য

সৎনামি      -    নারনৌল

পাঠান উপজাতি -উত্তর-পশ্চিম   

                                       সীমান্ত



৩ ) সংক্ষেপে (৩০-৫০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :


(ক) ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে কী কী অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছিল?

উ। ঔরঙ্গজেবের সময় মনসবদারি ও জায়গিরদারি সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল কৃষি সংকট। উজের বিজাপুর ও গোলকোল্ডা জয়ের পর দাক্ষিণাত্যের বিশাল অঞ্চল মুঘলদের হাতে এসেছিল। কিন্তু ওই অঞ্চলের ভালো জমিগুলি খাস জমি বা খালিসা হিসাবে ঔরঙ্গজেব রেখে দেওয়ায় জায়গির হিসাবে জমির পরিমাণ কমে গেছিল।

মুঘল শাসকরা নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমির উর্বরতা বাড়াতে না পারায় সমস্যা আরও গভীর হয়েছিল। ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মারাঠা রাজ্যের সৃষ্টি হয়েছিল। শিখদের সঙ্গেও মুঘলদের রাজনৈতিক সম্পর্ক তিক্ত হয়েছিল।



(খ) কবে, কাদের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি হয়েছিল। এই সন্ধির ফল কী হয়েছিল?

উঃ। ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে শিবাজি এবং ঔরঙ্গজেবের প্রতিনিধি রাজা জয়সিংহের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি হয়েছিল। এই চুক্তির ফলে শিবাজি মুঘলদের নিজের অধিকৃত ২৩টি দুর্গ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এরপর শিবাজি আগ্রার মুঘল দরবারে পৌঁছোলে তাঁকে অপমান করা হয় এবং আগ্রার দুর্গে বন্দি করে রাখা হয়। শিবাজি সুকৌশলে একটি ফলের ঝুড়িতে করে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন এবং দাক্ষিণাত্যে পৌঁছে মুঘলদের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব আবার শুরু হয়। শিবাজির নেতৃত্বে মারাঠাদের উত্থান ঘটে এবং তাদের জাতীয় চেতনা জেগে ওঠে।




(গ) জাঠদের সঙ্গে মুঘলদের সংঘাত কেন বেঁধেছিল।

উঃ। দিল্লি-আগ্রা অঞ্চলের জাঠরা ছিল প্রধানত কৃষক গোষ্ঠী। তাদের মধ্যে অনেকে আবার জমিদারও ছিল। রাজস্ব দেওয়া নিয়ে জাহাঙ্গির ও শাহজাহানের আমলে তাদের সঙ্গে মুঘলদের সংঘাত শুরু হয়। ঔরঙ্গজেবের আমলে তারা স্থানীয় এক জমিদারের নেতৃত্বে জোটকা হয়ে বিদ্রোহ করে। জাঠরা একটি পৃথক রাজ্য গঠন করতে চেয়েছিল।

মুঘলদের বিরুদ্ধে জাঠ প্রতিরোধ ছিল একদিকে কৃষক বিদ্রোহ, অন্যদিকে একটি আলাদা গোষ্ঠী পরিচয়ে জাঠরা একজেট হচ্ছিল।



 (ঘ) শাহজাহানের সময়ে মনসবদারি ও জায়গিরদারি ব্যবস্থায় কী সমস্যা দেখা দিয়েছিল?

উঃ। শাহাজাহানের সময় মনসবদারি ও জায়গিরদারি ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই মনসবদারদের তাদের পদ অনুযায়ী যা বেতন পাওয়ার কথা, তা দেওয়া যেত না। অনেক সময় আবার কৃষক বিদ্রোহের কারণে রাজস্ব আদায় করা যেত না। এ ছাড়া দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করাও সবসময় সম্ভব হচ্ছিল না। মনসবদাররা বেতন না পেলে তাদের যতজন ঘোড়সওয়ারের দেখাশোনা করার কথা, ততজনের দেখাশোনা করা যেত না, অর্থাৎ খাতায় কলমে হিসাবের সঙ্গে আসলে যা হচ্ছে তার তফাত বেড়েই চলেছিল। মনসবদারদের মধ্যে দুর্নীতির কারণে মনসবদারি ও জায়গিরদার ব্যবস্থা পতনের দিকে এগিয়ে চলেছিল।




(ঙ) বিজাপুর ও গোলকোন্ডা জয়ের ফলে মুঘলদের কী সুবিধা হয়েছিল?

উঃ। ঔরঙ্গজেবের বিজাপুর ও গোলকোন্ডা জয়ের পর দাক্ষিণাত্যের বিশাল অঞ্চল মুঘলদের হাতে এসেছিল। এই অঞ্চলের সব থেকে ভালো জমিগুলি ঔরঙ্গজেব খাসজমি বা খালিসা হিসাবে রেখেছিলেন। সেগুলি জায়গির হিসাবে দেওয়া হতো না। খাস জমির রাজস্ব সরাসরি কেন্দ্রীয় কোষাগারে জমা হতো।




৪. বিশদে (১০০ – ১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :

(ক) মুঘলদের বিরুদ্ধে শিখরা কীভাবে নিজেদের সংগঠিত করেছিল?

উঃ। নানা কারণ থাকলেও মূলত রাজনৈতিক কারণেই মুঘলদের সঙ্গে শিখদের সংঘাত শুরু হয়। শিখদের সঙ্গে জাহাঙ্গির এবং শাহজাহানের আমলে মুঘলদের সংঘাত দেখা দেয়। এই সংঘাতের চরিত্র ছিল রাজনৈতিক। শিখরা তাদের গুৰুৱ প্রতি অনুগত ছিল। তাই নিয়ে অনেক সময় মুঘল রাষ্ট্রের সঙ্গে শিখদের সংঘাত বেঁধে যেত। শিখদের দশজন গুপ্ত ছিলেন। ষোড়শ শতকের শেষের দিকে চতুর্থ গুরু রামদাসের পুত্র অর্জুনদেব শিখদের গুরু হন। এই সময় থেকেই শিখদের মধ্যে বংশানুক্রমিকভাবে গুরু নির্বাচন করা শুরু হয়। এই শিখদের উত্থান অনেকটাই একটা স্বাধীন শক্তির উত্থানের মতোই হয়ে উঠেছিল যা মুঘলদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। নবম শিখ গুরু তেগবাহাদুর ঔরঙ্গজেবের ধর্মীয় নীতির বিরোধিতা করেন। তেগবাহাদুরকে বন্দি করে মুঘলরা হত্যা করে। এই ঘটনার পর শিখরা পাঞ্জাবের পাহাড়ি এলাকায় চলে  যান এবং সেখানেই দশম শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহের নেতৃত্বে তারা সংঘবদ্ধ হতে থাকেন। ১৬৯৯ খ্রিস্টাব্দে গুরু গোবিন্দ সিংহ খালসা নামক একটি সংগঠন তৈরি করেন। খালসার প্রধান কাজ ছিল শিখদের নিরাপদে রাখা। গুরু গোবিন্দ সিংহ।

মুঘলদের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারেননি ঠিকই কিন্তু উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মুঘলদের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই শিথিল হয়ে গিয়েছিল।




(খ) মুঘল যুগের শেষ দিকে কৃষি সংকট কেন বেড়ে গিয়েছিল? এই কৃষি সংকটের ফল কী হয়েছিল?

মুঘল যুগের শেষের দিকে ফসলের উৎপাদন বেড়ে গিয়েছিল কিন্তু কৃষির উপর নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যাও বেড়ে গিয়েছিল।

উঃ। মুঘল যুগে অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি ছিল কৃষি, নানা কারণে মুঘল যুগের শেষ দিকে কৃষি সংকট বেড়ে গিয়েছিল। দাক্ষিণাত্যে যুদ্ধের সময়ে রাজস্ব আদায়ের জন্য মুঘল মনসবদাররা মারাঠা সর্দারদের সাহায্য নিত ওইসব অঞ্চলে মুঘলদের নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে গিয়েছিল। এদিকে সপ্তদশ শতকে আবার জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এর জন্যে অভিজাতরা

চাইলেন জমি থেকে তাদের আয় আরও বাড়াতে। তাঁরা জমিদার এবং কৃষকদের উপর চাপ বাড়াতে থাকেন। ফলে কৃষকরা বিদ্রোহের পথ বেছে নেয়। কোনো কোনো সময়ে কৃষকরা রাজস্ব না-দিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেত। তখন তাদের জমিতে চাষ হতো না। চাষ না-হলে রাজস্বও আদায় হতো না। এইভাবে কৃষিতে সংকট বেড়ে উঠেছিল।. এই কৃষি সংকটের ফলে মনসবদারি ব্যবস্থা সংকটপূর্ণ হয়ে পড়ে। দাক্ষিণাত্যের সবথেকে ভালো জমিগুলি ঔরঙ্গজেব খাস জমি করে রেখেছিলেন। এগুলিকে জায়গির দেওয়া হতো না। সুতরাং জমির অভাব না থাকলেও ভালো আবাদি জমির পরিমাণ কমে যায়। মুঘল শাসকরা নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে জমির উর্বরতা বাড়াতে পারেননি। ফলে কৃষি সংকট আরও গভীর হয়।



(গ) মুঘল যুগের শেষ দিকে জায়গিরদারি ও মনসবদারি ব্যবস্থায় কেন সংকট তৈরি হয়েছিল? মুঘল সাম্রাজ্যের উপর এই সংকটের কী প্রভাব পড়েছিল?

উঃ। মুঘল আমলে জায়গিরদারি ব্যবস্থা ছিল শাসনব্যবস্থার মূল ভিত্তি। মুঘল আমলে মনসবদাররা নগদ বেতন অথবা জায়গির পেতেন। শাহজাহানের আমল থেকেই জায়গিরদারি ও মনসবদারি ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই মনসবদারদের তাদের পদ অনুযায়ী যা বেতন পাওয়ার কথা তা দেওয়া যেত না। অনেক সময় আবার কৃষক বিদ্রোহের কারণে রাজস্ব আদায় করা যেত না। এ ছাড়া দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করাও সবসময় সম্ভব হচ্ছিল না। মনসবদারেরা বেতন না পেলে তাদের পক্ষেও ভালোভাবে ঘোড়সওয়ারের দেখাশোনা করা সম্ভব ছিল না, অর্থাৎ খাতায় কলমে হিসাবের সঙ্গে আসলে যা হচ্ছে তার তফাত বেড়েই চলেছিল। ঔরঙ্গজেবের সময় এই সমস্যা আরও বেড়েছিল।

ঔরঙ্গজেব মনসবদারেরা ভালোভাবে ঘোড়সওয়ারের ভরণপোষণ করতে না পারার ফলে সৈন্যবাহিনীর ক্ষমতা কমতে থাকে। এ ছাড়া ভালো জমির পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে জায়গির হিসাবে ভালো জমি দেওয়া যাচ্ছিল না। ফলে সমস্যা আরও গভীর হয়েছিল। আয়ের পথ অনিশ্চিত হওয়ায় বেতনভুক দক্ষ সেনার ভরণপোষণে সম্রাট অপারগ হয়ে ওঠেন। ভালো জায়গির পাওয়ার জন্য জায়গিরদাররা ষড়যন্ত্র ও দলাদলি করতে থাকেন এর ফলস্বরূপ মুঘল সাম্রাজ্যের সংহতি বিনষ্ট হয়। ফলে মুঘল সাম্রাজ্যের পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে।




(ঘ) সম্রাট ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মুঘল সাম্রাজ্যের সামগ্রিক অবস্থা বিষয়ে তোমার মতামত কী?

উঃ। ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে সাম্রাজ্য অনেক বড়ো হয়ে পড়েছিল এবং মনসব নিয়ে অভিজাতদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। এ ছাড়া সেই সময়ে মারাঠাদের মতো এক আঞ্চলিক শক্তির উত্থান হয়। এরা মুঘলদের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করে। শিখদের সঙ্গে মুঘলদের সম্পর্কও তিক্ত হয়ে উঠেছিল। এতদিন ধরে মুঘলরা নিজেদের যে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেই ধারণায় আঘাত করা হয়। মুঘলদের বিরুদ্ধে জাঠ প্রতিরোধ ছিল একদিকে কৃষক বিদ্রোহ, অন্যদিকে একটি আলাদা গোষ্ঠী পরিচয়ে জাঠরা একজোট হচ্ছিল। মথুরার কাছে নারনৌল অঞ্চলে একদল কৃষক মুঘল উপজাতিরা মুঘলদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। এ ছাড়া জায়গিরদারি ও মনসবদারি ব্যবস্থাতেও অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছিল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল। এরা ছিল সত্নামি নামে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষ। উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পাঠান। এবং সর্বোপরি ঔরঙ্গজেবের সময় থেকে কৃষি সংকটও বেড়ে গেছিল। তাই সামগ্রিকভাবে বলা যায় ঔরঙ্গজেবের আমল থেকেই শুরু হয়েছিল মুঘল সাম্রাজ্য পতনের সূচনা।



কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর


● অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১. মারাঠারা কীসের স্বপ্ন দেখেছিল?

 উঃ। মারাঠারা নিজেদের স্বরাজ্য গঠনের স্বপ্ন দেখেছিল।



২. মারাঠাদের বসতি কোথায় ছিল? 

উঃ। পুণে ও কোন অঞ্চলে মারাঠাদের বসতি ছিল।



৩. শিবাজির বাবা ও মায়ের নাম কী ছিল?

 উঃ। বাবার নাম ছিল শাহড়ি ভোঁসলে এবং মায়ের নাম জিজ্ঞাবট।



৪. কোন্ অস্ত্র দিয়ে শিবাজি আফজল খানকে হত্যা করেন?

 উঃ। বাঘনথ নামক একটি অস্ত্র দিয়ে।



৫. ঔরঙ্গজেব শিবাজিকে দমন করতে কাদের পাঠিয়েছিলেন?

উঃ। ঔরঙ্গজেব শিবাজিকে দমন করতে শায়েস্তা খান, মুরাজ্জম ও মির্জা রাজা জয়সিংহকে পাঠান।



৬. কত খ্রিস্টাব্দে এবং কোথায় শিবাজির অভিষেক হয়?

উঃ। ১৬৭৪ খ্রিস্টাব্দে রায়গড়ে শিবাজির অভিষেক হয়।

৭. পেশওয়া প্রথম বাজীরাও-এর হিন্দুরাজ্যের আদর্শকে কী বলা হয়?


 উঃ। হিন্দুপাদপাদশাহী।



৮. গুরু অর্জুনদেব কে ছিলেন?

 উঃ। শিখদের চতুর্থ গুরু রামদাসের পুত্র।


৯. সত্নামী গোষ্ঠীর মানুষরা কোথায় বিদ্রোহ করেছিল?

 উঃ। মথুরার কাছে নারনৌল অঞ্চলে।



১০. দাক্ষিণাত্য যুদ্ধের সময়ে মুঘল মনসবদররা কাদের সাহায্য নিয়েছিল? 

উঃ। মারাঠা সর্দারদের সাহায্য নিয়েছিল।



১১. বগি কাদের বলা হতো? 

উঃ। যেসব সৈনিক মারাঠা রাজ্যে স্থায়ীভাবে চাকরি করত তাদের বর্গি বলা হতো।



১২. দশম শিখ গুরু কে ছিলেন?

 উঃ। গুরু গোবিন্দ সিংহ।



১৩. গোবিন্দ সিংহের মৃত্যুর পর কে লড়াই চালিয়ে যান?

উঃ। গোবিন্দ সিংহের মৃত্যুর পর তাঁর শিষ্য বান্দা মুঘল শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যান।



১৪. কত খ্রিস্টাব্দে পুরন্দরের সন্ধি হয়?

 উঃ। ১৬৩৫ খ্রিস্টাব্দে।



১৫. অষ্টপ্রধান কারা? 


উঃ। শিবাজির আটজন মন্ত্রীকে অষ্টপ্রধান বলা হত।



১৬. খালসাপন্থী শিখরা কোন পদবি ব্যবহার করতেন?

 উঃ। সিংহ পদবি ব্যবহার করতেন।




১. মুঘল সাম্রাজ্য কতটা শক্তিশালী ছিল। আলোচনা করো।

উঃ। মুঘল সাম্রাজ্য কতটা শক্তিশালী ছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে নানা বিতর্ক

প্রয়েছে। একদল ঐতিহাসিক মনে করেন মুঘলরা ছিল দারুণ ক্ষমতাশালী। আসমুদ্র হিমাচলে

তাদের ক্ষমতা ছড়িয়ে ছিল। আরেক দল ঐতিহাসিক মনে করেন যে এতটা শক্তিশালী মুঘলরা

ইলেন না। তাদের একজনের মতে মুঘল সাম্রাজ্য একটি নিশ্ছিদ্র গালিচার মতো ছিল এটা

ক নয়। বরং মোটামুটিভাবে জোড়াতালি দেওয়া কম্বলের সঙ্গে তুলনা করা চলে। উত্তর ভারতে মুঘল আধিপত্য থাকলেও অন্যান্য অঞ্চলে তাদের ক্ষমতা ছিল সীমিত।



২. 'খালসা' কী? গুরু গোবিন্দ সিংহ খালসাপন্থীদের কী কী নিয়ম মেনে চলতে বলেন?




উঃ। দশম শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহ ১৬৯৯ খ্রিস্টাব্দে 'খালসা' নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। খালসার কাজ ছিল খদের নিরাপদে রাখা। সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়া ছিল শিখদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ। গুরু গোবিন্দ সিংহ শিখদের বা পথ ঠিক করে দেন। তিনি তাদের পাঁচটি জিনিস সবসময় নিজের কাছে রাখতে বলেন। এই পাঁচটি জিনিসের মই 'ক' অক্ষর দিয়ে শুরু। এগুলি হলোকেশ (চুল), কঙ্খা (চিরুনি), কচ্ছা (বস্ত্র), কৃপাণ (তরওয়াল) এবং কড়া (হাতের বালা)। তাছাড়া খালসাপন্থী শিখরা 'সিংহ' পদবি ব্যবহার করা শুরু করে। এভাবেই গুরু গোবিন্দ সিংহের নেতৃত্বে শিখরা ঘরুষ হয়ে ওঠে।



৩. শাহজাহানের সময়ে মনসবদারি ও জায়গিরদারি ব্যবস্থায় কী সমস্যা দেখা দিয়েছিল?

উঃ। শাহজাহানের সময়ে মনসবদারি ও জায়গিরদারি ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই মনসবদারদের

দের পদ অনুযায়ী যা বেতন পাওয়ার কথা, তা দেওয়া যেত না। অনেক সময় আবার কৃষক বিদ্রোহের কারণে রাজস্ব আদায় করা যেত না। এ ছাড়া দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করাও সবসময় সম্ভব হচ্ছিল না। মনসবদাররা বেতন না-পেলে তাদের যতজন ঘোড়সওয়ারের দেখাশোনা করার কথা, ততজনের দেখাশোনা করা যেত না, অর্থাৎ খাতায় কলমে হিসাবের সঙ্গে আসলে যা হচ্ছে তার তফাত বেড়েই চলেছিল। ঔরঙ্গজেবের সময় এই সমস্যা আরও বেড়েছিল।

৪. শিবাজির সঙ্গে মুঘলদের দ্বন্দ্বের কারণ কী ছিল? শিবাজির শাসনব্যবস্থা কেমন ছিল বলে তোমার মনে হয়?

উঃ। শিবাজির উত্থান মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। শিবাজির নেতৃত্বে মারাঠাদের

উত্থান ছিল কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে একটি বড়োসড়ো প্রতিরোধ আন্দোলন। শিবাজি একটি সুপরিকল্পিত

এবং স্বাধীন শাসনব্যকথার প্রচলন করতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে শিবাজির সাথে মুঘলদের দ্বন্দ্ব শুরু

শিবাজি একটি সুপরিকল্পিত এবং স্বাধীন শাসনব্যবস্থার সূচনা করেন। রায়গড়ে তাঁর অভিষেক হয়।তাঁর আটজন মন্ত্রীকে বলা হত অষ্টপ্রধান। এঁদের মধ্যে প্রধান ছিলেন পেশওয়া। মারাঠারা

নিজেদের রাজ্যকে বলত স্বরাজ্য। স্বরাজ্যের বাইরে মারাঠা সেনারা আশপাশের মুঘল এলাকাগুলি

ক্রমণ করে সেখান থেকে কর আদায় করত। যেসব সৈনিক মারাঠা রাজ্যে স্থায়ীভাবে চাকরি করত তাদের বলা হত বর্গি। শিবাজির নেতৃত্বে মারাঠাদের মধ্যে জাতীয় চেতনা জেগে ওঠে।