অষ্টম শ্রেণীর বাংলা "দাঁড়াও" শক্তি চট্টোপাধ্যায় অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর - Online story

Friday 21 July 2023

অষ্টম শ্রেণীর বাংলা "দাঁড়াও" শক্তি চট্টোপাধ্যায় অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

 




অষ্টম শ্রেণীর বাংলা

দাঁড়াও 

শক্তি চট্টোপাধ্যায়

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর


হাতে-কলমে

১.১ শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?

উঃ। শক্তি চট্টোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার বহডু গ্ৰামে।





২. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

২.১ ‘মতো’ শব্দ ব্যবহার করা হয় কখন? তোমার যুক্তির পক্ষে দুটি উদাহরণ দাও।

উঃ। দুটি সমজাতীয় বা ভিন্ন বস্তুর সাথে তুলনা বোঝাতে ‘মতো কথাটি ব্যবহার করা হয়।

উদাহরণ— (১) আমার মা মাসির মতো গান জানে। (২) কাজলের মতো ভালো পড়াশোনা করো‌



২.২ কবি পাখির মতো পাশে দাঁড়াতে বলেছেন কেন?

উঃ। কবি পাখির মতো মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন পাখি স্বাধীন সুখ তার গায়ে লাগে না।তাই পাখির মতো স্বাধীনভাবে, দৃঢ় মনোভাব নিয়ে কবি মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। পাষ্টি মিষ্টি ভাকে যেমন মন ভরে ওঠে তেমনই দুঃখের দিনে পাশে দাঁড়ানো মানুষের আশ্বাসও যেন মনে আশার সঞ্চার করে।




২.৩ মানুষই ফাঁদ পাতছে – কবি কেন একথা বলেছেন? 'মানুষ' শব্দের মতো ই সনি যোগ করেছেন কেন? —তোমার কী মনে হয়?

উঃ। লোভ মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি তাই মানুষই মানুষকে ঠকায়। ঠকাবার জন্য নানা প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদ পাতে। মানুষের সীমাহীন আকাঙ্খা ও লোভ তার মানসিকতার পরিবর্তন ঘটায়। সে ভুল পথে অন্যকে ঠকিয়ে নিজে সুখ ভোগ করতে চায়। তাই কবি বলেছেন মানুষই ফাঁদ পাতে বা ছলচাতুরী করে। পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ দেখা যায়। একদল বিবেকবান, মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন ও অন্য দল লোভী ও চতুর। তারা সব সময় চাতুরির দ্বারা মানুষকে ঠকিয়ে লাভবান হতে চায়। এই দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষকে বোঝাতেই কবি মানুষ শব্দটির সঙ্গে ই’ প্রত্যয়টি যোগ করেছেন বলে আমার মনে হয়।


২.৪ তোমার মতো মনে পড়ছে এই পঙক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ কী?

উঃ। এই পঙক্তিটি কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘দাঁড়াও’ কবিতাটি থেকে নেওয়া হয়েছে।

একজন মানুষ যেমন করে অপর মানুষকে কাছে পেতে চায়, মানুষ যেমন করে তার পাশে অন্যজনকে জানে তেমন বোঝাতে উপরের উক্তিটি করা হয়েছে। পৃথিবী জুড়ে লোভী মানুষ কাঁদ পেতে রেখেছে। তারা অন্য কে কষ্ট দিয়ে নিজেদের স্বার্থপূরণ করে। বর্তমান সমাজের এই মানবিক অবক্ষয় কবিকে ব্যথিত করে তুলেছে। কিন্তু এটাই তো মানুষের একমাত্র চরিে নয়, যার বিবেকবোধ, সহানুভূতি ও মমতা আছে সেই তো প্রকৃত মানুষ। মানুষের এই দুর্দিনে তাই সরকার সহযোগী এক প্রকৃত মানুষের সন্ধান করেছেন। তাই এই সৎ মানুষের কথা কবির মনে পড়েছে।





২.৫ ‘এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালোবেসে দাঁড়াও'—এই পর্তুক্তিটির বিশেষত্ব কোথায়? এই ধরনের দুটি বাক্য তুমি তৈরি করো


উঃ। পঙক্তিটিতে, ধ্বনির দ্বারা একটি কাব্যসৌন্দর্য প্রকাশ করার চেষ্টা রয়েছে। তিনবার ব্যবহার করার ফলে এই পঙক্তিটিতে এই শব্দটিই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে এবং একটি নিয়ামানুগ হয়েছে। মানুষ অসহায় অবস্থায় রয়েছে তাদের দুঃখকষ্টের সীমা পরিসীমা নেই। এদের পাশে দাঁড়াতে পারবে সেইভাবে দাঁড়াতে হবে এটাই মূল কথা। এই অর্থ বোঝাতে কবি উপরের শব্দগুলি ব্যবহার করে বোঝাতে চেয়েছেন(১) দেশকে ভালোবাসো, দেশের মঙ্গল তোমার মঙ্গাল। (২) শে ডুবছে অন্ধকারে দেশের পাশে দাঁড়াও অন্ধকারের ঘূর্ণিস্রোতে ভেসে যাচ্ছে, যেভাবে পারো ভেসে এসে তাকে সাহায্য করো।



৩. মানুষ বড়ো কাঁদছে—কী কারণে কবি এই কথা বলেছেন?

উঃ। আজকের পৃথিবী বড়ো জটিল, বড়ো কঠিন। এত দ্রুত তার পরিবর্তন হচ্ছে যে মানুষ তাল মেলাতে পারছে না।অভাব, দারিদ্রতা, কর্মহীনতা মানুষের সহজ সরল সামাজিক জীবনের পরিবেশকে বিষিয়ে তুলছে। আধুনিক সভ্যতার নিমর্মতায় মানুষ ক্রমশ বিচ্ছিন্ন ও অসহায় হয়ে পড়ছে। স্বভাবতই এই অসহায় মানুষ একটু সহানুভূতি ও ভালোবাসা পাবার আশায় ব্যাকুল ও বড়ো দুঃখী, তাই সে কাঁদছে। নিঃসঙ্গ মানুষের এই অসহায় অবস্থা কে বোঝাতে কবি বলেছেন মানুষ বড়ো কাঁদছে।



৪. মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও।— এই পক্টিটিকে তিনবার ব্যবহার করার কারণ কী হতে পারে বলে মনে হয়?

উঃ। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘দাঁড়াও' কবিতাটিতে কবি বলতে চেয়েছেন যে নানা শোষণে, দুঃখে কষ্টে মানুষ ক্রমশই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে। তার দুঃখের কথা শোনার বা সান্ত্বনা দেবার মতো কেউ আর নেই। তাই কবি বলেছেন সেই একাকী মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই আজ সব থেকে বেশি প্রয়োজন। (১) মানুষ মানুষকে ঠকাবার জন্য কাঁদ পাতছে । অসহায় মানুষ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না অর্থাৎ সে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ও একলা হয়ে পড়ছে। (২)একাকী মানুষ প্রিয়জনকে পাশে পেতে চায়। তাকে না পেলে আরও বেশি করে হতাশা ও নিঃসঙ্গতায় ভোগে। (৩) মানুষ প্রগতির সাথে পা মেলাতে না পেরে হতভম্ব হয়ে পড়েছে, কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। তাই একলা হয়ে পড়ে সে কাদছে।



৫. কবিতাটির নাম 'দাঁড়াও' কতটা সার্থক? কবিতাটির নাম ‘মানুষ বড়ো কাঁদছো হতে পারে কি–তোমার উত্তরের ক্ষেত্রে যুক্তি দাও।

উঃ। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ‘দাঁড়াও’ কবিতাটির ক্ষেত্রে মূল ভাববস্তুকে মনে রেখে একটি ব্যাল্গুনধর্মী নামকরণ করেছেন।

‘দাঁড়াও’শব্দের এক অর্থ হয় থমকে দাঁড়াও। কোনো কাজ করা থেকে বিরত হও। এখানে সেই অর্থে “সড়াও' কথাটি ব্যবহার করা হয়নি। ‘দাঁড়াও’ অর্থে কবি বলতে চেয়েছেন নানা শোষণে দুঃখ কষ্টে জর্জরিত মানুষের কাছে এবং তার পাশে দাঁড়াতে। এই একলা মানুষের পাশে দাঁড়ানো সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই গুরুত্বের কারণেই কবি ‘দাঁড়াও’ শব্দটি কবিতার তিনবার উচ্চারণ করেছেন। এই অর্থে নামকরণ সার্থক হয়েছে।‘মানুষ বড়ো কাঁদছে’ নামটি কবিতার ক্ষেত্রে যথাযথ হতো বলে মনে হয় না কারণ গোটা কবিতা জুড়ে মানুষ নানাভাবে অসহায় অবস্থায় পড়ে মধ্যে কেঁদে চলেছে। এটি একটি ভাববস্তু অপরটি হল মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাই মানুষ বড়ো কাঁদছে’ এই নামটিতে প্রথম ভাববস্তুটি পরিস্ফুট হলেও দ্বিতীয় ভাবটি প্রকাশ পায় না কিন্তু দ্বিতীয় ভাবটিই কবিতার মূলস্বর এবং কবির আবেদন তাই মানুষ বড়ো কাঁদছে। এই নামকরণটিও সঠিক হত না।





৬. কবি কাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করেছেন বলে তোমার মনে হয়?

উঃ। যে প্রকৃত মানুষ, যার হৃদয় অন্যের জন্য কেঁদে ওঠে। অন্যের সুখে যে সুখী হয় সেই ধরনের মানসিকতা সম্পন্ন মানুষের কথা কবি বলেছেন। তাদের কাছে কবির অনুরোধ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য। অসহায় মানুষ বড়ো একলা হয়ে পড়েছে। তার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে জীবন যুদ্ধে পথ চলার শিক্ষা দেবে এবং দুঃখে তাদের সান্ত্বনা দেবে। এরকম একজন মানুষকে কবি পাশে দাঁড়াতে বলেছেন।



৭. কবিতাটি চলিত বাংলায় লেখা শুধু একটি শব্দ সাধু ভাষা। শব্দটি খুঁজে বার করো এবং শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করেছেন কেন কবি?

উঃ। শব্দটি হলো—তাহার। কবি মানুষকে সম্মান দিতে চেয়েছেন। কেন অসংখ্য মানুষজন অসহার এই অসহায়তা বোঝাতে ‘তাহার' কথাটি কবি ব্যবহার করেছেন।




৮. প্রথম স্তবকের তিনটি পক্তির প্রত্যেকটির দলসংখ্যা কত? প্রতিটি পক্তি কটি রুখল ও মুক্তল দিয়ে তৈরি?

উঃ। প্রথম পঙক্তি = মানুষ বড়ো কাঁদছে তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও।

(১) মা-নুষ-ব – ড়ো কাঁদ-ছে তুমি মা-নুষ হ-য়ে পাশে দাঁ - ড়াও [১৬টি দল রয়েছে। বুদ্ধ দল ৩টি রয়েছে।



(২) মা – নুষই-ফা – দ-পাত-ছে তু–মি পা-থির মতো পাশে দাঁড়াও [১৬টি দল আছে। রুব্বল ৩টি রয়েছে ]

তৃতীয় পঙক্তি = মানুষ বড়ো একলা তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও।


(৩) মা-নুষ-ব--ড়ো এ - ক্-লা তুমি তা+হার পা-শে, এ-সে দাঁড়াও। ১৬টি দল আছে। প্রতিটি পঙক্তিটিতে ১৬টি করে দল রয়েছে। প্রতিটি পঙক্তি ১২টি মুক্তদল ও ৪টি রুদ্ধদল নিয়ে গঠিত।




৯. কী ঘটেছে লেখো।

উঃ। সন্ধ্যা > সন্ধে। (স্বরসংগতি)। ফাদ > ফাঁদ। (নাসিক্যভবন)।



অন্য গুলি দেখুন

বোঝাপড়া

অদ্ভুত আতিথেয়তা

চন্দ্রগুপ্ত

বনভোজনের ব‍্যাপার

সবুজ জামা

চিঠি

আলাপ

পরবাসী

পথচলতি

একটি চড়ুই পাখি

দাঁড়াও

অন্য টা দেখুন দাঁড়াও

পল্লীসমাজ

ছন্নছাড়া

গাছের কথা

হাওয়ায় গান

কি করে বুঝবো

পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি

নাটোরের কথা

অন‍্যটা দেখুন নাটোরের কথা

গড়াই নদীর তীরে

জেলখানায় চিঠি

স্বাধীনতা

আদাব

অন্যটা দেখুন আদাব

শিকল পরার গান

হরিচরণ বন্দোপাধ্যায়

ঘুরে দাঁড়াও

সুভা

পরাজয়

মাসিপিসি

টিকিটের অ্যালবাম

লোকটা জানলই না



পথের পাঁচালী (১)

পথের পাঁচালী(২)

পথের পাঁচালী(৩)

পথের পাঁচালী বইয়ের অনুশীলন প্রশ্ন উত্তর

ভাষাচর্চা (১)

ভাষা চর্চা (২)