অষ্টম শ্রেণীর বাংলা "আদাব" সমরেশ বসু হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর - Online story

Saturday 22 July 2023

অষ্টম শ্রেণীর বাংলা "আদাব" সমরেশ বসু হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

 




অষ্টম শ্রেণীর বাংলা

"আদাব"

সমরেশ বসু

হাতে-কলমে

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১.১ সমরেশ বসুর ছদ্মনাম কী?

 উঃ সমরেশ বসুর ছদ্মনাম কালকূট'।




১.২ তাঁর লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখো। 

উঃ। তাঁর লেখা দুটি উপন্যাসের নাম ‘বি টি রোডের ধারে', 'গঙ্গা'।



২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাওঃ

২.১ কোন সময়পর্বের কথা গল্পে রয়েছে?

উঃ। গল্পের বর্ণিত সময়কালটি হলো স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৪৬-৪৭ খ্রিস্টাব্দের সময়।



২.২ ডাস্টবিনের দুই পাশে দুটি প্রাণী’—প্রাণীদুটির পরিচয় দাও।

উঃ। ডাস্টবিনের দুই পাশে দুটিমানুষের একজন সুতাকলের মজুর সে জাতিতে হিন্দু, আর একজন নৌকার মাঝি জাতিতে মুসলিম।


২.০ 'ওইটার মধ্যে কী আছে?–বক্তা কীসের প্রতি ইঙ্গিত করে?

উঃ। মাঝির হাতে একটি জামা-কাপড়ে ভরা পুটলি ছিল। বক্তা তার প্রতি ইঙ্গিত করেছে।




২.৪ গল্পে কোন নদীর প্রসঙ্গ রয়েছে? 

উঃ। গল্পে বুড়িগঙ্গা নদীর প্রসঙ্গ রয়েছে।


২.৫ সুতা-মজুরের ঠোটের কোণে একটু হাসি ফুটে উঠল...'- তার এই হাসির কারণ কী?

উঃ। সুতা-মজুর মাঝির ঘরে ফেরার দৃশ্যের কথা ভেবে হেসেছিল। সে ভেবেছিল মাঝি ঘরে ফিরলে তার বিবি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলবে-মরণের মুখ থেকে তুমি ফিরে এসেছ। তার ছেলেমেয়েরা নতুন আশা নিয়ে নতুন জামা পরবে।




৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় দাও:

৩.১ শহরে ১৪৪ ধারা আর কারফিউ অর্ডার জারী হয়েছে।'—লেখকের অনুসরণে গল্পঘটনার রাতের দৃশ্য বর্ণনা করো।

উঃ। 'আদাব' গল্পের শুরুতে দাঙ্গা কবলিত একটি রাতের ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রাত্রির নিস্তব্ধতা কে কাঁপিয়ে মিলিটারি টহলদার গাড়ি একবার ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশ দিয়ে পাক খেয়ে গেল। হিন্দু আর মুসলমানের মধ্যে দাঙ্গা বেঁধেছে। লুটেরারা বেরিয়েছে অভিযানে। অন্যদিকে গুপ্তঘাতকের দলও শানিত অস্ত্র হাতে পথে নেমেছে। তারা চোরাগোপ্তা আঘাত হানছে বাড়িতে বস্তিতে জ্বলছে আগুন। মৃত্যুকাতর নারী ও শিশুর চিৎকার আবহাওয়াকে বীভৎস করে তুলেছে। তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে সৈন্যবাহী গাড়ি। তারা আইন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দিক্‌বিদিক্ জ্ঞানশূন্য হয়ে গুলি ছুঁড়ছে।



৩.২ হঠাৎ ডাস্টবিনটা একটু নড়ে উঠল।”—ডাস্টবিন নড়ে ওঠা'র অব্যবহিত পরে কী দেখা গেল?

উঃ। দেখা গোল নড়ে ওঠা ডাস্টবিনের দুই পাশে দুটি মানুষ অসহায়, প্রাণভয়ে ভীত, দুচোখে সন্দেহের দোলা, তার একজন হিন্দু – অন্যজন মুসলমান। উৎকণ্ঠায় তাদের চোখে ভয়, সন্দেহ মিলেমিশে আছে। দু'জনেই দুজনকে হত্যাকারী ভাবছে।




৩.৩ হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির আবহ গল্পে কীভাবে রচিত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।

উঃ। সমরেশ বসু রচিত 'আদাব' গল্পটি স্বাধীনতার পূর্বের দাঙ্গাবিধ্বস্ত কলকাতা শহরের এক চিত্র। ভয়ংকর দাঙ্গা, খুন-আতঙ্ক-আর্ত চিৎকার – এইরকম পরিবেশে দুটি আতঙ্কিত প্রাণ একজন সুতা-মজুর ও অন্যজন নাওয়ের মাঝি একটি ভেঙে পড়া ডাস্টবিনের পাশে আশ্রয় নিয়েছে। সন্দেহের দোলায় দুলতে দুলতে একসময় তারা পরস্পরের কাছাকাছি আসে আর আতঙ্ক ভুলে একে অপরের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। নিজেদের সুখ দুঃখকে নিজেরা ভাগ করে নেয়। দুই জাতির মানুষ একে অপরের জীবনের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। মাঝি চলে যেতে চাইলে সুতা মজুর তাকে ধরে রাখতে চায়। তারা কেউ দাঙ্গা চায়না মানুষ যে এত নির্মম ও নিষ্ঠুর হতে পারে, এ তাদের ধারণায় ছিল না। মাঝি ইদের পরবে বাড়ি যেতে উত্তীর, ছেলে মেয়েরা বাবার ফেরার পথ চেয়ে বসে আছে। আটদিন ঘরের কোনো খবর নেই। দুজনে কোনক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে ইসলামপুর ফাঁড়ির কাছে আসে। মাঝি সুতা-মজুরকে বলে, তুমি ফেরির ঘাটের দিকে যেওন ওদিকটা মুসলমান এরিয়া, এদিকে হিন্দুর বাস বেশি। রাতটা কোনক্রমে কাটিয়ে সকালে বাড়ি চলে যেও। মাঝি বিদায় নিলে সুতা-মজুর ভগবানের কাছে করুণাভিক্ষা করে—ভগবান তুমি মাঝিকে বাঁচিয়ে দাও। সে যেন বিবি-সন্তানের কাছে পৌঁছাতে পারে। গুলির আওয়াজ ও আর্ত চিৎকারে তার মনে ভেসে আসে রাষ্ট্রে মাঝির পোলা মাইয়া ও বিবির জামা-শাড়ি রাঙা হয়ে উঠেছে, আর মাঝি বলছে দুশমনেরা আমাদের যাইতে দিল না—তার মন ভারি হয়ে আসে। গল্পের শেষে পুলিশের গুলিতে মাঝির মৃত্যু হয়। এভাবেই একে অপরের প্রতি বিশ্বাস, মানবিকতা ‘আদার গল্পটিতে ঘটা ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার  মাঝেও এক সম্প্রীতির আবহ রচিত করে। জন মুহূর্তগুলিও কাটে যেন মৃত্যুর প্রতীক্ষার মতো। সেই বৃদ্ধ উত্তেজনাকর মুহূর্তগুলির ছবি গল্পে কীভাবে ধরা পড়েছে তা দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো। শহর কলকাতার এক বীভৎস চিত্র লেখক সমরেশ বসু তাঁর "আমার"গঘটিতে সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সময় ও পরিবেশ যে ভয়াবহতা নিয়ে এসেছে তার সপে মৃত্যুর তুলনা চলে। সেখানে ডাস্টবিনের দুপাশে প্রাণভয়ে ভীত দুটি মানুষ। বিপদের মধ্যে থেকেও মুতা মঞ্জুর ও নাওয়ের মাঝির মধ্যে নির্ভরতা গড়ে ওঠে। কেউ কাউকে ছাড়তে চায় না। হঠাৎ করে শোরগোলটা মিলিয়ে যায় দূরে মৃত্যুর মতো নিজস্ব হয়ে আসে সব। মুহূর্তগুলিও কাটে যেন প্রতীক্ষার মতো। নিস্তবতার মাঝে দেশলাই জ্বলে ওঠার পর ‘সোহান আল্লা' শব্দটি এক উত্তেজক মুহূর্ত তৈরি করে। সুতা মজুর ভূত দেখার মতো চমকে ওঠে। আবার মাঝি মুসলমান জেনে সুতা মঞ্জুর যখন মাঝির পুঁটলিটিতে কী আছে প্রশ্ন করে তখন উত্তেজনা দানা বেঁধে ওঠে। অকার গলির মধ্যে ডাস্টবিনের দুই পাশে দুটি

প্রাণী ভাবে নিজেদের বিপদের কথা, ঘরের কথা, মা-বউ-ছেলেমেয়েদের...তাদের কাছে কি আর তারা প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে পারবে, না তারাই থাকবে বেঁচে? কোথা থেকে এল দাজ্জা? হাটে বাজারে এতত থা-দোকানে এত হাসাহাসি, কথা কওয়া কওয়ি আবার পরমুহূর্তেই মারামারি, কাটাকাটি-রক্তগঙ্গা বয়ে গেল। এমনভাবে মানুষ নির্মম নিষ্ঠুর হয়ে ওঠে কী করে? সুতা-মজুর ও মাঝি দুজনেই এক দীর্ঘশ্বাস পড়ে। নিঃশব্দ ও শ্বাসরুদ্ধ করে বসে থাকার এই চিত্র যেন বেঁচে থাকবার জন্য নয় তা যেন মৃত্যুর প্রতীক্ষার মতো ভয়ংকর।




৩.৫ এমনভাবে মানুষ নির্মম নিষ্ঠুর হয়ে ওঠে কী করে?'—উদ্ধৃতিটির আলোকে সেই সময়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটটি আলোচনা করো।


উঃ। উপরের উদ্ধৃতিটি সমরেশ বসু রচিত 'আদাব' গল্পটি থেকে নেওয়া। ভারতবর্ষে ১৯৪৬ সালে সংঘটিত দাঙ্গার ইতিহাসকে ফিরে দেখলে দেখা যাবে দীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলনে ব্রিটিশ সরকার সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও যখন সফল হতে পারছে না, সেই সময় তারা বিভেদ নীতির প্রয়োগ করে দেশের দুই প্রধান শক্তি হিন্দু ও মুসলমানকে রাজনৈতিকভাবে লড়িয়ে দিয়ে জনগণের ঐক্য ও সংহতি ভেঙে দিতে চায়। এর পরিণতি রূপে দেশে সৃষ্টি হয় এক ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাকে মানুষ নেমে পড়ে মারণযজ্ঞে। এই যজ্ঞে বলি হয় নিরীহ সাধারণ মানুষ, দাবি ওঠে দেশভাগের। শহরে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা, আর কারফিউ অর্ডার। মুখোমুখি লড়াই চলেদা, সড়কি, চুরি, লাঠি নিয়ে। তাছাড়া চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছে দাঙ্গাবাজ ও গুপ্ত ঘাতকদের দল, তারা চোরাগোপ্তা আঘাত হানে অনন্ধকারকে কেন্দ্র করে। এই নারকীয় হত্যালীলা থেকে নারী, বৃদ্ধা, শিশু কেউ বাদ পড়েনি। এই হানাহানির প্রেক্ষাপটেই বিখণ্ডিত হয়ে ভারত স্বাধীন হয়।



৪. নিম্নলিখিত বাক্যগুলির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো :

৪.১ রাত্রির নিস্তবন্ধতাকে কাঁপিয়ে দিয়ে মিলিটারি টহলদার গাড়িটা একবার ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশ দিয়ে একটা পাক খেয়ে গেল।'

উঃ। সমরেশ বসু রচিত 'আদাব' গল্পের অংশ এটি। ১৯৪৬ সালে সংঘটিত দাঙ্গার সময় একটি বিশেষ শহরের চিত্র এখানে ফুটে উঠেছে।


অন্য গুলি দেখুন

বোঝাপড়া

অদ্ভুত আতিথেয়তা

চন্দ্রগুপ্ত

বনভোজনের ব‍্যাপার

সবুজ জামা

চিঠি

আলাপ

পরবাসী

পথচলতি

একটি চড়ুই পাখি

দাঁড়াও

অন্য টা দেখুন দাঁড়াও

পল্লীসমাজ

ছন্নছাড়া

গাছের কথা

হাওয়ায় গান

কি করে বুঝবো

পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি

নাটোরের কথা

অন‍্যটা দেখুন নাটোরের কথা

গড়াই নদীর তীরে

জেলখানায় চিঠি

স্বাধীনতা

আদাব

অন্যটা দেখুন আদাব

শিকল পরার গান

হরিচরণ বন্দোপাধ্যায়

ঘুরে দাঁড়াও

সুভা

পরাজয়

মাসিপিসি

টিকিটের অ্যালবাম

লোকটা জানলই না



পথের পাঁচালী (১)

পথের পাঁচালী(২)

পথের পাঁচালী(৩)

পথের পাঁচালী বইয়ের অনুশীলন প্রশ্ন উত্তর

ভাষাচর্চা (১)

ভাষা চর্চা (২)