"স্বাধীনতা সংগ্ৰামের নারী" অনুশীলনী প্রশ্নের উত্তর সপ্তম শ্রেণি বাংলা
সপ্তম শ্রেণীর বাংলা
স্বাধীনতা সংগ্ৰামের নারী
কমলা দাশগুপ্ত
হাতে-কলমে
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১. ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো :
১.১ ননীবালা দেবী বিপ্লবের দীক্ষা পেয়েছিলেন (অমবেন্দ্র চ্যাটার্জী/ যাদুগোপাল মুখার্জী/ভোলানাথ চ্যাটার্জী)-র কাছে।
উঃ। অমরেন্দ্র চ্যাটার্জী।
১.২ ননীবালা দেবী (রিষড়াতে/চুঁচুড়াতে/চন্দননগরে) অমর চ্যাটার্জী ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে আশ্রয় দেন।
উঃ। রিষড়াতে।
১.৩ চন্দননগর থেকে পালিয়ে ননীবালা দেবী যান (পেশোয়ারে/কাশীতে/ রিষড়াতে)।
উঃ। পেশোয়ারে।
১.৪ কাশীর ডেপুটি পুলিশ সুপার (জিতেন ব্যানার্জী/হিতেন ব্যানার্জী/যতীন ব্যানার্জী) ননীবালা দেবীকে জেরা করতেন।
উঃ। জিতেন ব্যানার্জী।
১.৫ পুলিশ সুপার গোল্ডির কাছে ননীবালা দেবী (সারদামণি দেবী/ভগিনী নিবেদিতা/দুকড়িবালা দেবী)-র কাছেথাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
উঃ। সারদামণি দেবী।
১.৬ দুকড়িবালা দেবী বিপ্লবের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন (বোনপো/ ভাইপো/ ভাই) নিবারণ ঘটকের কাছে।
উঃ। বোনপো।
১.৭ নিবারণ ঘটক দুকড়িবালা দেবীকে সাতটা (মসার/কোল্ট/রাইফেল) পিস্তল লুকিয়ে রাখতে বলেন।
উঃ। মসার পিস্তল।
১.৮ বিপ্লবী হরিদাস দত্ত (গাড়োয়ান/পুলিশ/খালাসি)-র ছদ্মবেশে পিস্তল চুরি করেন।
উঃ। গাড়োয়ান।
১.৯ পিস্তল বাড়িতে রাখার অপরাধে দুকড়িবালা দেবীর (দু-বছর/পাঁচবছর/ যাবজ্জীবন) সশ্রম কারাদণ্ড হয়।
উঃ। দু-বছর।
১.১০ দুকড়িবালা দেবীর মৃত্যু হয় (১৯৬৯/১৯৭০/১৯৭১) সালে।
উঃ। ১৯৭০ সালে।
২. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
২.১ বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের ‘মসার’ (পিস্তল)-এর খোঁজ নেওয়ার জন্য ননীবালা দেবী কী কৌশল অবলম্বন করেছিলেন?
উঃ। বিধবা ননীবালা দেবী রামচন্দ্রবাবুর স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেলে যান সেখানে গিয়ে রামবাবুর ইন্টারভিউ নিয়ে পিস্তলের গুপ্ত খবর নিয়ে এসেছিলেন।
২.২ “এঁদের সকলেরই মাথায় অনেক হাজার টাকার হুলিয়া ছিল”—“হুলিয়া” শব্দের অর্থ কী? এঁরা কারা? এঁদের আশ্রয়দাত্রী কে ছিলেন? হুলিয়া থাকার জন্য এঁরা কীভাবে চলাফেরা করতেন?
উঃ। “হুলিয়া’ শব্দের অর্থ পলাতকের জন্য ঘোষিত পুরস্কার।
এঁরা ছিলেন যদুগোপাল মুখার্জী, অমর চ্যাটার্জী, অতুল ঘোষ, ভোলানাথ চ্যাটার্জী, নলিনীকান্ত কর, বিনয়ভূষণ দত্ত ও বিজয় চক্রবর্তী। এঁদের আশ্রয়দাত্রী ছিলেন ননীবালা দেবী। হুলিয়া থাকার জন্য এঁরা দিনের বেলা সারাদিন দরজা বন্ধ করে ঘরে থাকতেন, রাত্রে সুবিধামতো বেরোতেন।
২.৩ “ননীবালা দেবী পলাতক হলেন” -ননীবালা দেবী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন কেন? তিনি পালিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন? সেখানে তিনি কোন্ অসুখে আক্রান্ত হন?
উঃ। পুলিশ ননীবালা দেবীকে গ্রেপ্তার করতে তৎপর হয়ে ওঠায় ননীবালা দেবী পালিয়ে গিয়েছিলেন।
ননীবালা দেবী তাঁর বাল্যবন্ধুর দাদা প্রবোধ মিত্রকে অনুনয় বিনয় করে তাঁর সঙ্গে পেশোয়ারে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
সেখানে গিয়ে ননীবালা দেবী কলেরায় আক্রান্ত হন।
২.৪ “ননীবালা দেবী সবই অস্বীকার করতেন” – ননীবালা দেবী কোন্ কথা অস্বীকার করতেন? তার ফলশ্রুতিই বা কী হত?
উঃ। ননীবালা দেবী বিপ্লবীদের সাথে তাঁর যোগাযোগের কথা অস্বীকার করতেন। তিনি বলতেন কাউকেই তিনি চেনেন না ও কিছুই জানেন না।
তার ফলে কাশীর পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট জিতেন ব্যানার্জী তাঁকে রোজ প্রায় আধঘণ্টা আলোবাতাসহীন পানিশমেন্ট চেম্বারে অর্থাৎ শাস্তি কুঠুরিতে ঢুকিয়ে রাখাতেন।
২.৫ কাশীর জেলের ‘পানিশমেন্ট সেল’টির অবস্থা কেমন ছিল? সেখানে ননীবালা দেবীর উপর কী ধরনের অত্যাচার করা হত?
উঃ। কাশীর জেলটি ছিল পুরোনো, সেকেলে। সেই জেলের পানিশমেন্ট প্রাচীরের বাইরে সেলটি ছিল মাটির নীচে। তাতে দরজা ছিল একটাই, কিন্তু আলো বাতাস প্রবেশের কোনো জানালা ছিল না।
সেখানে তিন দিন প্রায় আধঘণ্টা ধরে ননীবালা দেবীকে ওই কবরের মতো স্থানে আটকে রাখা হত। তৃতীয় দিনে তাঁকে প্রায় ৪৫ মিনিট বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। কবরের মতো সেলে,আধঘন্টা আটকে রাখার পর দেখা যেত ননীবালা দেবীর অর্ধমৃত অবস্থা। তাঁর স্নায়ুর শক্তিকে চূর্ণ করে দেবার মতো অত্যাচার করা হত।
২.৬ “ননীবালা দেবী তখুনি দরখাস্ত লিখে দিলেন”—ননীবালা দেবী কাকে দরখাস্ত লিখে দিয়েছিলেন? দরখাস্তের বিষয়বস্তু কী ছিল? শেষ পর্যন্ত সেই দরখাস্তের কী পরিণতি হয়েছিল?
উঃ। ননীবালা দেবী আই বি পুলিশের স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট গোল্ডিকে দরখাস্ত লিখে দিয়েছিলেন।
দরখাস্তের বিষয়বস্তু ছিল, ননীবালা দেবী বাগবাজারে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের স্ত্রী সারদা মায়ের কাছে গিয়ে। থাকতে চান।
শেষ পর্যন্ত গোল্ডি সেই দরখাস্ত ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন।
২.৭ ‘এবার আমায় দলে নিয়ে নাও’–কে, কাকে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন? তিনি কেন, কোন্ দলে অংশগ্রহণ।
উঃ। দুকড়িবালা দেবী তার বোনপো নিবারণ ঘটককে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷
তিনি দেশ স্বাধীন করার জন্য স্বদেশিদের দলে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক ছিলেন।
২.৯ পুলিশ কোন্ অভিযোগে দুকড়িবালা দেবীকে গ্রেপ্তার করেন। বিচারে তাঁর কী শাস্তি হয়?
উঃ। ১৯১৭ সালে পুলিশ দুকড়িবালা দেবীর বাড়ি ঘিরে ফেলে তাঁর বাড়ি থেকে সাতটি মশার পিস্তল পায়। অস্থ রাখার অভিযোগে পুলিশ দুকড়িবালা দেবীকে গ্রেপ্তার করে। বিচারে তাঁর দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়।
৩. আট-দশটি বাক্যে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
৩.১ স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী স্বনামধন্য খ্যাতনামা বিপ্লবীদের তুলনায় ননীবালা দেবী ও দুকড়িবালা দেবীর অবদান সামান্য নয়—এ বিষয়ে তোমার মতামত জানাও।
উ: ননীবালা দেবী তৎকালীন বাংলার আর পাঁচজন মহিলার থেকে আলাদা ছিলেন। তিনি ছিলেন অসমসাহসী, নিজের কথা না-ভেবে বিপ্লবীদের তিনি আশ্রয় দিতেন। তৎকালীন বাংলায় ছদ্মবেশে বিধবা সেজে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে ইন্টারভিউ নিয়ে পিস্তলের সন্ধান আনেন। জেলের চরম অত্যাচারও এক মুহূর্তের জন্য তাঁকে টলাতে পারেনি।
দুকড়িবালা দেবী ছিলেন অত্যন্ত সাধারণ মহিলা। কিন্তু তিনিই বিপ্লবীদের আশ্রয় দিতেন। তাঁদের অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন। ধরা পড়ে তাঁর দু-বছরের জেল হয়। তখনও তিনি নিজের কথা না-ভেবে তাঁর বাবাকে চিঠিতে জানাতেন যেন তাঁর বাচ্চারা না-কাঁদে। এরা দুজনেই ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রগামী নারী সৈনিক এবং মহীয়সী বিপ্লবী।
৩.২ ননীবালা দেবী ও দুকড়িবালা দেবীর অনমনীয় বৈপ্লবিক মনোভাব কীভাবে পরবর্তীকালের বিপ্লবী নারীকে পথ দেখিয়েছে? পাঠ গদ্যাংশ অবলম্বনে তোমার মতামত জানাও।
উঃ। এই দুই বিপ্লবী নারীর এই ধরনের মানসিকতা ও অনমনীয় মনোভাব পরবর্তীকালেও ভারতীয় মহিলাদের প্রেরণা দিয়েছে। তাঁদের থেকে পরবর্তীকালের ভারতীয় নারীরা সহাশক্তি, আত্মবলিদান-এর শিক্ষা পেয়েছেন। তাঁদের
এইরূপ জীবন বহু নারীর কাছে অনুপ্রেরণার কাজ করেছে।
অন্য গুলি দেখন
(১) ছন্দে শুধু কান রাখো (১)
(২) কার দৌড় কদ্দুর
(৩) বঙ্গভূমির প্রতি
(৪) পাগলা গণেশ
(৫) আত্মকথা
(৬) চিরদিনের কবিতা
(৮) নোট বই
(৯) স্মৃতি চিহ্ন
(১০) দেবাতাত্মা হিমালয়
(১১) আঁকা- লেখা
(১২) খোকনের প্রথম ছবি
(১৩) ভারত তীর্থ
(১৫) রাস্তায় ক্রিকেট খেলা
(১৬) দিন ফুরালো
(১৭) গাধার কান
(১৮) পটল বাবু ফ্লিমস্টার
(১৯) মেঘ-চোর
(২০) কুতুব মিনারের কথা
(২১) চিন্তা শীল
(২২) একুশের কবিতা
মাকু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর
মাকু হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
মাকু গল্পের সকল প্রশ্নের উত্তর