সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ৪ অধ‍্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ class 7 history 4th chapter anoshulani answer - Online story

Tuesday 4 July 2023

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ৪ অধ‍্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ class 7 history 4th chapter anoshulani answer




পাঁচ অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর দেখুন

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ৪ অধ‍্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ 

 অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

ভেবে দেখো খুঁজে দেখো।  

১। নীচের নামগুলির মধ্যে কোন্‌টি বাকিগুলির সঙ্গে মিলছে না তার তলায় দাগ দাও :

(ক) ইলতুৎমিশ, রাজিয়া, ইবন বতুতা, বলবন।

 উঃ। ইবন বতুতা।



(খ) জাহিদ, সুনাম, সামানা, ঝিলম। 

উঃ। ঝিলম

(গ) খরাদ,খামস,জিজিয়া, আমির, জাকাত। 

উঃ। আমির।

(ঘ) আহমেগর, বিজাপুর, গোলকোঙা, পাঞ্জাব, বিদর। 

উঃ। পাঞ্জাব।

(ঙ) বারবোসা, মাহমুদ গাওয়ান, পায়েজ, নুনিজ।

 উঃ। মাহমুদ গাওয়ান।




২। "ক"স্তম্ভ র সঙ্গে 'খ' স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :


খলিফা            দুরবাশ

বলবন          তুর্কান-ই-চিহ্নলগানি

খলজি বিপ্লব    ইলবারি তুর্কি অভিজাতদের

                          ক্ষমতার অবসান


ৱুমি কৌশল      বাবর

রাজা গণেশ     বাংলা



৩। সংক্ষেপে (৩০–৫০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :

(ক) দিল্লির সুলতানদের কখন খলিফাদের অনুমোদন দরকার হতো?

উঃ। ইসলাম ধর্ম অনুসারে প্রধান শাসক একজনই তা হলের খলিফা। ইসলামের আওতায় যত অঞ্চল ছিল, তার মূল শাসক খলিফা। তিনি মুসলমানদের ধর্মগুরু। দিল্লির সুলতানির উপরেও খলিফারই অধিকার ছিল। যেহেতু মুসলিম সম্প্রদায় এক বিশাল অঞ্চল শাসন করতেন, একজন খলিফার পক্ষে সমস্ত অঞ্চল শাসন করা সম্ভব ছিল না। তাই খলিফার অনুমোদন নিয়ে নানান অঞ্চলে নানান ব্যক্তি শাসন করতেন। ভারতবর্ষের মুসলিম শাসকগণ সুলতান নামে

পরিচিত ছিলেন। এমনিতে সুলতানরা খলিফাকে যে খুব মেনে চলতেন তা নয়, তবে মাঝেমধ্যেই কে সুলতান হবে, এই নিয়ে গোলমাল লেগে যেত। তখন কে প্রকৃত সুলতান হবেন তা নিয়ে খলিফার অনুমোদন দরকার হত। খলিফার অনুমোদনের একটা সম্মান ছিল।



(1) সুলতান ইলতুৎমিশের সামনে প্রধান তিনটি সমস্যা কী ছিল?

উঃ। ইলতুৎমিশ যখন দিল্লির সুলতান হন তখন


তাঁর সামনে তিনটি সমস্যা দেখা দেয়। এগুলি

হলঃ (১)  বিদ্রোহী শক্তিগুলোকে কীভাবে

তিনি দমন করতে পারবেন। (২) সেই সময় মধ্য এশিয়ার দুর্ধর্ষ মোঙ্গল শক্তি ছিল একটা বড়ো

আতঙ্ক, সব দেশের সব রাজশক্তির কাছেই। তিনি কীভাবে এই মোঙ্গল শক্তিকে মোকাবিলা

করবেন, তা ছিল ইলতুৎমিশের কাছে একটা বড়ো সমস্যা। (৩) কীভাবে সুলতানিতে একটা

প্রাবলো তৈরি করা যাবে, যাতে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারী গোলমাল ছাড়াই সিংহাসনে

বসতে পারবেন।





(গ) কারা ছিল সুলতান রাজিয়ার সমর্থক? কারা ছিল তাঁর বিরোধী ?

উঃ। ইলতুৎমিশের সার্থক উত্তরাধিকারী ছিলেন সুলতান রাজিয়া। ইলতুৎমিশের সন্তানদের মধ্যে

নাজিয়া ছিলেন যোগ্যতম। ইলতুৎমিশের এক ছেলে অল্প কিছুদিনের জন্যে শাসক হলেও শেষ পর্যন্ত

প্লাজিয়াই ইলতুৎমিশের প্রকৃত উত্তরাধিকারী হতে পেরেছিলেন। রাজিয়ার সুলতান হওয়া নিয়ে সমর্থন

ছিল সেনাবাহিনী, অভিজাতদের একাংশ ও দিল্লির সাধারণ লোকেদের।


তাঁর বিরুদ্ধে ছিলেন ‘তুর্কি’ অভিজাতরা। এছাড়া উলেমা এবং রাজপুত শক্তিও তাঁর শাসনের

বিরোধী ছিলেন।




3 (ঘ) আলাউদ্দিন খলজি কীভাবে মোঙ্গল আক্রমণের মোকাবিলা করেন?

উঃ। আলাউদ্দিন খলজির সময়ে দিল্লি দুবার মোঙ্গলদের হাতে আক্রান্ত হয়। সুলতান আলাউদ্দিন খলজি বিরাট এক সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলেন মোঙ্গলদের প্রতিরোধ করার জন্য। সৈনিকদের থাকবার জন্য সিরি নামে এক নতুন শহর তৈরি

রা হয়। সেনাবাহিনীকে রসদ জোগানোর জন্যে দোয়াব অঞ্চলের কৃষকদের ওপর বেশি হারে কর চাপানো হয়। দুর্গনির্মাণ, পন্যসংগ্রহ ও মূল্যনিয়ন্ত্রণ করে সফলভাবে আলাউদ্দিন মোঙ্গল আক্রমণের মোকাবিলা করেন।





(ঙ) ইলিয়াসশাহি এবং হোসেন শাহি আমলে বাংলার সংস্কৃতির পরিচয় দাও।

উঃ। ইলিয়াস শাহি এবং হোসেন শাহির আমলে বাংলার সংস্কৃতির উন্নয়ন হয়েছিল। এই সময়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়। হোসেন শাহের আমলে বাংলা লেখালেখির চর্চা বাড়ে। ইলিয়াসশাহি ও হোসেনশাহি সুলতানরা ছিলেন অন্য ধর্মমত বিষয়েও উদার। সুলতানদের ধর্মীয় উদারতা বাংলায় সব ধর্মের মানুষকে কাছাকাছি আসতে

হায্য করেছিল। এই সময়েই বাংলায় শ্রীচৈতন্যের নেতৃত্বে ভক্তিবাদের প্রচার শুরু হয়।

৪। বিশদে (১০০–১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :

=) ৪.২ মানচিত্র থেকে আলাউদ্দিনের দাক্ষিণাত্য অভিযানের বিবরণ দাও।

উঃ। আলাউদ্দিন খলজি দিল্লির প্রথম সুলতান যিনি দক্ষিণ ভারতে সুলতানি সাম্রাজ্যের বিস্তার

ান। এই অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁর সেনাপতি মালিক কাফুর। আলাউদ্দিন খলজির সৈন্যদল

নাপতি মালিক কাফুরের নেতৃত্বে ১৩০৫ খ্রিস্টাব্দে মাণ্ডু জয় করে। তারপর ১৩১১ খ্রিস্টাব্দে দেবগিরি

ধিকার করে। ওই বছরেই আলাউদ্দিন খলজি ওয়ারঙ্গল জয় করেন। এরপর একে একে হোয়সল ও কাকতীয় দখল করেন। তারপর তাঁর দখলে আসে দ্বারসমুদ্র। এরপর তাঁর সৈন্যদল জয় করে তাঞ্জোর। সবশেষে মাদুরাই এবং পাণ্ড্য জয় করে আলাউদ্দিন তাঁর দাক্ষিণাত্য অভিযান শেষ করেন এবং ভারত মহাসাগরের সীমানা অবধি তাঁর রাজ্য বিস্তৃত হয়।



(খ) দিল্লির সুলতানদের সঙ্গে তাঁদের অভিজাতদের কেমন সম্বন্ধ ছিল তা লেখো।

উঃ। দিল্লির সুলতানদের সাথে তাঁদের অভিজাতদের সম্পর্ক ছিল অম্লমধুর। দিল্লির মসনদে বসার জন্যে মুসলিম শাসকদের অভিজাতদের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। অভিজাতরা সমর্থন জানালে সিংহাসন দখল করা ছিল সহজ কিন্তু বিতাড়িত হতে হত। এভাবেই জনসাধারণ এবং সৈন্যবাহিনীর সমর্থন থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র অভিজাতদের অসহযোগিতার

অভিজাতরা যদি বিরুদ্ধে থাকতেন তাহলে শাসনকার্য চালানো সহজ হত না এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সিংহাসন থেকে বিতারিত হতে হতো।সুলতান রাজিয়াকে শুধু সিংহাসন নয়, তাকে প্রাণ পর্যন্ত ত্যাগ করতে হয়েছিল। অনেক সময় দেখা গেছে অভিজাতরা বিদ্রোহ করে আগের সুলতানের বংশধরকে সরিয়ে দিয়ে নিজেই শাসক হয়ে বসেছে। 



(গ) ইকতা কী? কেন সুলতানরা ইকতা ব্যবস্থা চালু করেছিলেন?

উঃ। দিল্লির সুলতান সাম্রাজ্যের সীমানা ক্রমশ বৃদ্ধি করেছিলেন। নতুন অধিকার করা অঞ্চল থেকে রাজস্ব আদায় ও শান্তি বজায় রাখার দরকার ছিল। সুলতানরা যেসব রাজ্য জয় করলেন সেই রাজ্যগুলি এক একটা প্রদেশের মতো ধরে নেওয়া হল। এই প্রদেশগুলিকেই বলা হত ইকতা।

মধ্য এশিয়ার ইসলামীয় সাম্রাজ্যে সামরিক অভিজাতদের ইকতা দেওয়া হত। এই ইকতাগুলি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেওয়া হত । নবম শতকে এই ব্যবস্থার উৎপত্তি হয়। রাজকোশে তখন যথেষ্ট পরিমাণে রাজস্ব জমা পড়ছিল না। এদিকে

যুদ্ধ করেও তেমন ধনসম্পদ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই সামরিক নেতাদের বেতনের বদলে ইকতা দেওয়া হতে থাকে।





(ঘ) আলাউদ্দিন খলজির সময় দিল্লির বাজারদর নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে তোমার মতামত লেখো।

উঃ। রাজকোশের আয় বাড়াতে আলাউদ্দিন খলজি কতকগুলি অর্থনৈতিক সংস্কার করেন। আলাউদ্দিন বাজারের সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ঠিক করে দেন। আলাউদ্দিন খলজির আমলে দিল্লিতে চারটি বড়ো বাজার ছিল এইসব বাজারে খাদ্যদ্রব্য, ঘোড়া, কাপড় ইত্যাদি বিক্রি হতো। বাজারদর তদারকির জন্য ‘শাহানা-ই-মাণ্ডি’ ও ‘দেওয়ান-ই-রিয়াসৎ’

নামে রাজকর্মচারী নিয়োগ করেন। সুলতানের ঠিক করে দেওয়া দামের থেকে বেশি দাম নিলে বা ক্রেতাকে ওজনে ঠকালে কঠোর শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আলাউদ্দিন রেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। প্রয়োজনের সময়ে প্রজাদের সুলতানের

পক্ষ থেকে খাদ্যশস্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পরিমাণমতো জোগান দেওয়া হত।

 আলাউদ্দিনের ওই ব্যবস্থা একদমই সঠিক। 






● অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১। ‘সুলতান’ শব্দের অর্থ কী?

 উঃ। আরবি ভাষায় এর অর্থ কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা।



২। মহম্মদ ঘুরির মৃত্যুর পর লাহোর ও দিল্লি কার অধিকারে থাকে?

উঃ। কুতুবউদ্দিন আইবকের অধিকারে থাকে।



৩। দুরবাশ কী? 

উঃ। সুলতানি আমলে স্বাধীন শাসকের প্রতীক দণ্ড।



৪। সুলতান রাজিয়া কোন্ কর তুলে নেন?


 উঃ। সুলতান রাজিয়া জিজিয়া কর তুলে নেন।



৫। কত খ্রিস্টাব্দে গিয়াসউদ্দিন বলবন সুলতান হন? উঃ। ১২৬৬ খ্রিস্টাব্দে।




৬। আলাউদ্দিন খলজির দক্ষিণ ভারত অভিযানের নেতৃত্ব কে দেন? 

উঃ। তাঁর সেনাপতি মালিক কাফুর।



৭। কার শাসনকালে জৌনপুর রাজ্য দিল্লি সুলতানের অন্তর্ভুক্ত হয়? 


উঃ। সুলতান বহলোল লোদির শাসনকালে।

৮। সৈয়দ বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? 


উঃ। খিজির খান।



৯। কে, কবে বাংলায় ইলিয়াসশাহি শাসন শুরু করেন?

উঃ। ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাংলায় এই শাসন শুরু করেন।



১০। কার আক্রমণে বাংলায় স্বাধীন সুলতানি শাসন শেষ হয়? 

উঃ। আফগান নেতা শের খানের আক্রমণে।



১১। কত খ্রিস্টাব্দে কারা বিজয়নগর রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন?

উঃ। ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে হরিহর ও বুক্ক বিজয়নগর রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন।



১২। সঙ্গম রাজবংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন? উঃ। রাজা দ্বিতীয় দেবরায়।



১৩। তাকাভি কী?

উঃ। মহম্মদ বিন তুঘলক দোয়াব অঞ্চলের কৃষকদের সাহায্য করার জন্য তাকাভি নামে ঋণের ব্যবস্থা করেন।


১৪। কত খ্রিস্টাব্দে ও কাদের মধ্যে পানিপতের প্রথম যুদ্ধ হয়?

উঃ। ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে বাবর ও ইব্রাহিম লোদির মধ্যে।




১৫। বাংলার শাসক ইলিয়াস শাহের রাজধানী কোথায় ছিল?

 উঃ। পাণ্ডুয়া।




১৬। ইলিয়াস শাহের মৃত্যুর পর কে বাংলার শাসক হন?

 উঃ। সিকান্দর শাহ।






১৭। ইলিয়াস শাহি বংশের পতন ঘটাতে কে বাংলার শাসক হন? 

উঃ। রাজা গণেশ।



১৮। বাংলার কোন সুলতান্ জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলেন? উঃ। সুলতান জালালউদ্দিন মহম্মদ শাহ বা যদু।



১৯। আফ্রিকার আবিসিনিয়া বা ইথিওপিয়ার অধিবাসীদের বাংলার কী বলা হত?

 উঃ। হাবশি।



২০। মহম্মদ গাওয়ান কে ছিলেন?

 উঃ। বাহমনি শাসক তৃতীয় মহম্মদের মন্ত্রী।



২১। মালিক কাফুর কে ছিলেন? 


উঃ। আলাউদ্দিন খলজির সেনাপতি।



২২। বিজয়নগরে সালুভ বংশের প্রতিষ্ঠা কে করেন? উঃ। রাজা নরসিংহ।



২৩। বাহমন শাহের মৃত্যুর পর কে গুলবর্গার শাসক হন? 

উঃ। বাহমন শাহের পুত্র মহম্মদ শাহ।



২৪। আরাবিডু বংশের প্রথম ও শেষ উল্লেখযোগ্য শাসক কে ছিলেন?

উঃ। প্রথম শাসক ছিলেন তিরুমল ও শেষ উল্লেখযোগ্য রাজা ছিলেন দ্বিতীয় বেঙ্কট।




২৫। কার রাজত্বকালে গিয়াসউদ্দিন বলবন নামে একজন তুর্কি আমির ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেন?

উঃ। ইলতুৎমিশের পুত্র নাসিরউদ্দিন মাহমুদ শাহের রাজত্বকালে।



২৬। ইকতাদার কাকে বলা হতো?

উঃ। সুলতানরা রাজ্যগুলিকে প্রদেশে ভাগ করে তার নাম দেন ইকতা। এই ইকতার দায়িত্বে যে সামরিক নেতা থাকতেন তাকে ইকতাদার বলা হতো।