অষ্টম শ্রেণীর বাংলা "হরিচরণ বন্দোপাধ্যায়" হীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর হাতে-কলমে - Online story

Monday 7 August 2023

অষ্টম শ্রেণীর বাংলা "হরিচরণ বন্দোপাধ্যায়" হীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর হাতে-কলমে



অষ্টম শ্রেণীর বাংলা

 হরিচরণ বন্দোপাধ্যায়

হীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী


অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

হাতে-কলমে

১.১  হীরেন্দ্রনাথ দত্তের রচিত দুটি বই-এর নাম লেখো।

উঃ। হীরেন্দ্রনাথ দত্ত রচিত দুটি বই হলো অচেনা রবীন্দ্রনাথ’, ‘আপন মনের মাধুরী মিশায়ে'।



১.২ কোন্ নামে তিনি সমধিক পরিচিত? 

উঃ। ইন্দ্ৰজিৎ নামে তিনি সমধিক পরিচিত ছিলেন।



. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

২.১ শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ে প্রথম যুগে যাঁরা রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে বিদ্যালয়ের কাজে এসে যোগ দিয়েছিলেন, এমন কয়েকজনের কথা আলোচনা করো।


উঃ। বিধুশেখর শাস্ত্রী, ক্ষিতিমোহন সেন, হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ হলেন শান্তিনিকেতনের প্রথম যুগের মানুষ যাঁদের।রবীন্দ্রনাথ আশ্রম বিদ্যালয়ে আহ্বান করেছিলেন এবং তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সকলেই বিদ্যালয়ের কাজে যোগ দিয়েছিলেন।

বিধুশেখর শাস্ত্রী ঃ ইনি ইংরেজি ভাষায় অনভিজ্ঞ টোলের পণ্ডিত। খুব অল্প বয়সে তিনি কাব্যতীর্থ হয়েছিলেন। কাশীতে গিয়ে তিনি দর্শন, ন্যায়শাস্ত্র, বেদান্ত অধ্যয়ন করেন। ভারতীয় পণ্ডিত সমাজে সর্বাগ্রগণ্যদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।

ক্ষিতিমোহন সেন : সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত, তাঁরও জিজ্ঞাসা নতুন পথে প্রবাহিত হয়। মধ্যযুগীয় সাধুসন্তদের বাণী সংগ্রহ করে ভারতীয় জীবন সাধনার বিস্মৃত প্রায় এক অধ্যায়কে তিনি পুনঃরুজ্জীবিত করেন। এই সমস্ত সম্ভব হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতার ফলে। কর্মজীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি বিশ্বভারতী বিদ্যাভবনের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত ছিলেন।




২.২ ‘এর কৃতিত্ব অনেকাংশে শান্তিনিকেতনের প্রাপ্য............'—কোন্ কৃতিত্বের কথা বলা হয়েছে? তার বহুলাংশ।‘শান্তিনিকেতনের প্রাপ্য' বলে লেখক মনে করেছেন কেন?

উঃ। শান্তিনিকেতনের বিদ্যালয়ে যাঁরা প্রথম যুগে রবীন্দ্রনাথের ডাকে এসে কাজে যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা সকলেই  খুব অসাধারণ ব্যক্তি ছিলেন না। দু-একজন অবশ্যই আলাদা। অন্য সকলের পক্ষে এ-কথা খাটে না। কিন্তু তাঁরা স্বেচ্ছায় এমন সব কার্যভার গ্রহণ করেছিলেন এবং তা সম্পন্ন করেছিলেন যার তুলনা খুঁজে পাওয়া ভার। প্রবল মনোযোগ, বিদ্যাবুদ্ধি এবং একনিষ্ঠ সাধনার দ্বারা তাঁরা এই মহৎ কর্ম সম্পাদন করতে পেরেছিলেন। তাঁদের মতো সাধারণ মানুষজন যে বৃহৎ ও মহৎ কর্ম সফল করতে পেরেছিলেন বলে লেখক মনে করেছেন সেই কৃতিত্বের কথা এখানে বলা হয়েছে। এর কৃতিত্ব অনেকটাই শান্তিনিকেতনের প্রাপ্য কারণ এইরকম মানুষ শান্তিনিকেতন নিজ হাতে তৈরি করে নিয়েছে। স্থান মাহাত্ম্য বলে একটা কথা আছে যে; স্থান মানুষের কাছ থেকে বড়ো কিছু দাবি করতে পারে তবে সেই অধিকার অর্জন করতে হয়। বিদ্যালয়ের

কাজ বিদ্যাচর্চার পথ সুগম করে দেওয়া, আমাদের দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যা ভাবেনি

শান্তিনিকেতন বিদ্যালয় তার শৈশবেই তা ভেবেছে। শান্তিনিকেতনের জল হাওয়ায়, সেখানকার

অনুকূল পরিবেশে এইসব মহৎ মানুষেরা তাঁদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পেরেছেন।

শান্তিনিকেতন ছাড়া আর কোথাও তা সম্ভব হতো না বলে এই কৃতিত্ব শান্তিনিকেতনের প্রাপ্য বলেই লেখক মন্তব্য করেছেন।




২.৩, 'আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে শান্তিনিকেতনের দান অপরিসীম।'—লেখক এ প্রসঙ্গে শান্তিনিকেতনের কোন্ কোন্ গুরুত্বপূর্ণ অবদানের উল্লেখ করেছেন?



উঃ। ভারতবর্ষের শিক্ষাক্ষেত্রে শান্তিনিকেতনের অবদান অপরিসীম। রবীন্দ্রনাথ আদর্শ শিক্ষাকেন্দ্র তৈরির উদ্দেশ্যে শান্তিনিকেতন স্থাপন করেন। লেখক বলেছেন যে শান্তিনিকেতনই দেশকে প্রথম শিখিয়েছে যে বিদ্যালয় শুধুমাত্র বিদ্যাদানের।কেন্দ্র নয়, বিদ্যাচর্চার কেন্দ্র। সে স্থান বিদ্যাবিকিরণের স্থান। সূর্য যেভাবে তার আলোক দিকে দিকে ছড়িয়ে দেয়,

শান্তিনিকেতন সেভাবেই দেশে বিদ্যা বিকিরণ করেছে। বিদ্যা অর্জন করার পথ যাতে সুগম হয় সেদিকেও শান্তিনিকেতন দৃষ্টি দিয়েছে। যে সময় আমাদের দেশের বিদ্যালয়গুলি এসব ভাবেওনি শান্তিনিকেতন তার প্রতিষ্ঠার শুরুতেই সে সব ভেবেছে এবং সেজন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে। এছাড়া ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, তিনি নিজের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন এবং

তাঁর দ্বারা যাঁদের তিনি আহ্বান করেছিলেন তাঁদের কাছ থেকেও সবটুকু পেয়েছিলেন।





২.৪ 'আপাতদৃষ্টিতে যে মানুষ সাধারণ তাঁরও প্রচ্ছন্ন সম্ভাবনা রবীন্দ্রনাথের সর্বদর্শী দৃষ্টিতে এড়াতে পারেনি।'—লেখক এ প্রসঙ্গে কাদের কথা স্মরণ করেছেন? জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চায় তাঁদের অবদান সম্পর্কে আলোচনা করো।


উঃ। শান্তিনিকেতন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রথম যুগের শিক্ষক নির্বাচনে রবীন্দ্রনাথের সর্বদশী দৃষ্টি এক অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিল। লেখক এই প্রসঙ্গে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ক্ষিতিমোহন সেন, বিধুশেখর শাস্ত্রী প্রমুখের নাম স্মরণ করেছেন।

▾এদের মধ্যে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের সংস্কৃত পণ্ডিতের পদ অলংকৃত করেন। তিনি বাংলা ভাষার বৃহত্তম অভিধান বঙ্গীয় শব্দকোষ রচনা করেন। বিধুশেখর শাস্ত্রী ছিলেন বৌদ্ধশাস্ত্র ও পালি ভাষার পণ্ডিত। তিনি ইংরেজি না জেনেও

বহু ভাষাবিদ ছিলেন। ক্ষিতিমোহন সেন সংস্কৃত পণ্ডিত থেকে তাঁর নিজের জীবন জিজ্ঞাসাকে অন্যপথে প্রবাহিত করেন। মধ্যযুগীয় সাধুসন্তদের বাণী সংগ্রহ করে ভারতীয় জীবন সাধনার বিস্তৃত প্রায় এক অধ্যায়কে তিনি পুনরুজ্জীবিত করেন।




২.৫ ‘এঁরা প্রাণপণে সেই দাবি পূরণ করেছেন।'—কাদের কথা বলা হয়েছে? কীই বা সেই দাবি? সেই

দাবিপূরণে প্রাণপণে তাঁদের নিয়োজিত হওয়ারই বা কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?

উঃ। এঁরা হলেন হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধুশেখর শাস্ত্রী, ক্ষিতিমোহন সেন প্রমুখ।

শান্তিনিকেতন স্থাপনের পর রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন শিক্ষার মান উন্নয়ন করার জন্য নতুন গ্রন্থ রচনা করতে। তাই।বিদ্যাচর্চায় নতুন ধারার প্রবর্তনে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে আহ্বান জানিয়ে ছিলেন।

তাঁদের কাছে রবীন্দ্রনাথের দাবি ছিল তারা যেন এই জ্ঞানচর্চার মহৎকর্মে আত্মনিয়োগ করেন। সেই দাবিপূরণে এইসব মহৎ ব্যক্তিদের প্রাণপণে নিয়োজিত হবার অন্যতম কারণ রবীন্দ্রনাথের সর্বদর্শী দৃষ্টি। তিনি মানুষের মধ্যে প্রচ্ছন্ন সম্ভাবনা

দেখতে পেতেন। এছাড়া ছিল রবীন্দ্রনাথের প্রেরণা, উৎসাহ ও নির্দেশনা। যার ফলে এঁরা নিজেদের কাজ ছাড়াও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রকে পরিপুষ্ট করেছেন।




২.৬ শান্তিনিকেতনের সঙ্গে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক কীভাবে গড়ে উঠেছিল? প্রবন্ধ অনুসরণে তাঁর সারাজীবনব্যাপী সারস্বত-সাধনার পরিচয় দাও।

উঃ। রবীন্দ্রনাথের একাত্ত আহ্বানেই শান্তিনিকেতনের সঙ্গে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। জমিদারি মহল্লা পরিদর্শন করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ আমিনের সেরেস্তায় নিযুক্ত কর্মচারী হরিচরণকে দেখে প্রশ্ন করেন—দিনে সেরেস্তার কাজ সেরে রাত্রে কী করেন? উত্তর পান সংস্কৃত চর্চা করি। কবি তাঁর রচিত পাণ্ডুলিপি চেয়ে নেন ও কিছুদিন পরেই সংস্কৃতজ্ঞ কর্মচারীটিকে তিনি নিজের কাছে অর্থাৎ

শান্তিনিকেতনে ডেকে নেন। তাঁর হাতে ‘সংস্কৃত প্রবেশ’—নামে পুস্তক রচনার ভার দেন ‌ ১৩০৯ লে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একবছরের মধ্যেই হরিচরণবাণু |

শান্তিনিকেতনে যোগ দেন। তারপর কাজে যোগ দেবার পর রীনাথ তাঁকে ১৬১২ তিনি অভিuার কাজ শুরু করেন।  ১৩৫২ বঙ্গাব্দে তা সমাপ্ত হয়। জীবনের চল্লিশ বছর ধরে এক যান, এক জ্ঞান, এক কাজ নিয়ে হরিচরণাটিয়েছেন। তাঁর এই কাজ মহাযোগীর জীবন। তিনি বাঙালি জাতির সম্মুখে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে।গিয়েছিলেন। তাঁর নিষ্ঠার যথার্থ পুরস্কার ছিল তার কাজের সফল সমাপ্তি।




২. হরিচরণ বন্দোপারষ্ঠ সান্নিধ্যের পরিচয় প্রবন্ধটিতে কীভাবে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে আলোচনা করো।

উঃ। শান্তিনিকেতনে আশ্রম বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালঙ্গে রবীন্দ্রনাথ যে সকল কর্মী মানুষকে পেয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে।হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন অন্যতম। তার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের আন্তরিক সম্পর্ক ছিল গভীর। জমিদারি মহল্লার কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ খুঁজে এনেছিলেন এই এক গুণীজনকে যিনি হয়তো সারাজীবন সেরেস্তার হিসাব করতে

করতে জীবন কাটিয়ে দিতেন। সামানা বাক্যালাপে তিনি হরিচরণের মধ্যে সম্ভাবনার স্ফুলিঙ্গ দেখতে পেয়েছিলেন। তাই তাকে নিয়ে আসেন শান্তিনিকেতনে। হরিচরণের রচিত পান্ডুলিপিটি ভালোভাবে পড়ে কবি বুঝতে পারেন তাঁর মধ্যে উদ্বৃত্ত

কিছু রয়েছে, যার দ্বারা তিনি বাড়তি কিছু দেওয়ার ক্ষমতা করেন।  আর্থিক দুরবস্থার জন্য রবীন্দ্রনাথ মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর কাছে বৃত্তির জন্য নিজে আবেদন করেন। কবির আবেদন শিরোধার্য করে মহারাজ হরিচরণের তেরো বছর ব্যাপী মাসিক পঞ্চাশ টাকা বৃত্তির ব্যবস্থা করে দেন। কবি হরিচরণ

বাবু সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করেন—"মহারাজের বৃত্তিলাভ ঈশ্বরের অভিপ্রেত, অভিযানের সমাপ্তির পূর্বে তোমার জীবননাশের।শঙ্কা নাই।" কবিবাকা মিথ্যা হয় না, এক্ষেত্রেও হয়নি। তাঁদের মধ্যে প্রভু কর্মচারীর যে সম্পর্ক তার বাইরে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ

অনন্য প্রতিভাধর হরিচরণকে দিয়ে যোগা কাজ করিয়ে নিয়েছিলেন। এভাবেই কবি রবীন্দ্রনাথ ও হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যের নানা চিত্র প্রবন্ধটিতে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে।



২.৮ 'একক প্রচেষ্টায় এরূপ বিরাট কাজের দৃষ্টান্ত বিরল।'—কোন্ কাজের কথা বলা হয়েছে। একে 'বিরাট কাজ' বলার কারণ কী?

উঃ। হীরেন্দ্রনাথ দত্ত বিরচিত 'হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়' রচনায় লেখক গুরুদেবের নির্দেশে যে বঙ্গীয় শব্দকোষ রচিত হয়েছিল এখানে সেই কাজের কথা বলা হয়েছে। ১০৫ খণ্ডের বঙ্গীয় শব্দকোষ রচনা সহজ কাজ ছিল না। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের একক চেষ্টায় চল্লিশ বছরের সাধনায় তা সম্ভব করে দেখিয়েছিলেন। অন্যদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো বিষৎ পরিষদ অর্থাৎ পণ্ডিত গোষ্ঠীর দ্বারা

সম্পন্ন হয়েছে যে কাজ—সেই কাজ একক প্রচেষ্টায় সম্পন্ন করেছেন হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অভিযানের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল বাংলা এবং সংস্কৃত সাহিত্য থেকে প্রত্যেক শব্দের বহুবিধ প্রয়োগের দৃষ্টান্ত এই কাজে যে পরিশ্রম এবং জ্ঞানের প্রয়োজন হয় তা ভাবলে বিস্ময় জাগে। আহরণ করা তাই এই কাজকে বিরাট কাজ বলা হয়েছে।.




২.৯ ‘হরিচরণবাবুকে দেখে তাঁর সম্পর্কিত শ্লোকটি আমার মনে পড়ে যেত—শ্লোকটি কার লেখা? শ্লোকটি উদ্ধৃত করো।

উঃ। শ্লোকটি প্রথম যুগের কর্মীদের মধ্যে হরিচরণ সম্পর্কে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়-এর লেখা।

-কোথা গো ডুব মেরে রয়েছ তলে

হরিচরণ! কোন গরতে?

বুঝেছি। শব্দ অবধি-জলে

মুঠাচ্ছে খুব অরখে।



২.১০ হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় সংকলিত অভিধানটির নাম কী? গ্রন্থটির রচনা মুদ্রণ ও প্রকাশনার

ক্ষেত্রে নানাবিধ ঘটনার প্রসঙ্গ প্রাবন্ধিক কীভাবে স্মরণ করেছেন?


.

উঃ। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত অভিধানটির নাম হলো 'বঙ্গীয় শব্দ-কোষ'।

লেখক হীরেন্দ্রনাথ দত্ত অত্যন্ত সুকৌশলে ও সুনিপুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়ে এই রচনাটি লিপিবন্ধ করেছেন। এর সাথে দেখিয়েছেন কবিগুরু কেমনভাবে একটি প্রতিভাকে চয়ন করে এনেছেন তাঁর শান্তিনিকেতনের জন্য। হরিচরণের

কর্মনিষ্ঠা লক্ষ করে রবীন্দ্রনাথ তাঁকে অভিধান রচনায় নিয়োজিত করেন। কবির আদেশকে আশীর্বাদ বলে ধরে নিয়ে ১৩১২ বঙ্গাব্দে হরিচরণ অভিধান রচনা শুরু করেন। আর্থিক অনটনে কাজ বন্ধ হবার উপক্রম হলে গুরুদেব নিজে উপযাচক হয়ে আর এক গুণীর পৃষ্ঠপোষক মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্রের কাছে হরিচরণের বৃত্তির জন্য অনুরোধ জানান। কবির আবেদন ব্যর্থ হয়নি। মহারাজা হরিচরণের মাসিক ৫০ টাকা বৃত্তির ব্যবস্থা করে দেন। অভিধান রচনা শেষ হবার পর মুদ্রিত করার সামান্য সামর্থ্য নিয়ে হরিচরণ দুদ্র ক্ষুদ্র খণ্ডে তা প্রকাশের আয়োজন করেন। কারণ এই বিরাট গ্রন্থ প্রকাশের সামর্থ্য বিশ্বভারতীর ছিল না। প্রাচ্য বিদ্যামহার্ণর নগেন্দ্রনাথ বসু মুদ্রণের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন। শান্তিনিকেতনের প্রাক্তন ছাত্ররা এবং কিছু অনুরাগী শিক্ষিত ব্যক্তি নিয়মিত গ্রাহক হয়ে এই ব্যাপারে আনুকুল্য করেন। পরে সাহিত্য অকাদেমির উদ্যোগে বঙ্গীয়

শব্দকোষ প্রকাশিত হয়।




২.১১ প্রাবন্ধিকের সঙ্গে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত স্মৃতির প্রসঙ্গ প্রবন্ধে কীরূপ অনন্যতার স্বাদ এনে দিয়েছে তা আলোচনা করো।

উঃ। প্রাবন্ধিক হীরেন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতির প্রসঙ্গ রচনাটিতে এক অনন্যতার স্বাদ এনে দিয়েছে, কারণ যখন প্রাবন্ধিক শান্তিনিকেতনের কাজে যোগ দেন তখনো তাঁর অভিধানের মুদ্রণকার্য শেষ হয়নি। লেখক

লাইব্রেরি গৃহের একটি অনতিপ্রশস্ত প্রকোষ্ঠে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিবিষ্ট মনে কাজ করতে দেখেছেন। কর্মে নিবিষ্ট।হরিচরণ বাবুকে দেখে লেখকের দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি শ্লোকের কথা মনে পড়ে যেত। কোথায় কোন গর্ভে বসে হরিচরণ শব্দের সমুদ্র থেকে মুঠো মুঠো অর্থ, কুড়িয়ে চলেছেন। লেখক শান্তিনিকেতনে যখন তাঁকে দেখেন তখন তিনি পঁচাত্তর বছর বয়সী এবং বিশ্বভারতীর কাজ থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। মুদ্রণ শেষ হবার পরও লেখক তাঁকে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় ভ্রমণ করতে দেখেছেন। ক্ষীণদৃষ্টির জন্য সব সময় সবাইকে চিনতে পারতেন না, চিনতে পারলে সপ্নেহে কুশলবার্তা জিজ্ঞাসা করতেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর মস্তিষ্কের শক্তি অটুট ছিল। গ্রন্থ শেষ হবার পরেও চোদ্দো বছর

তিনি জীবিত ছিলেন। লেখক দেখেছেন যে তিনি সবসময় প্রসন্নচিত্তে থাকতেন। লেখকের মনে হয়েছে হরিচরণবাবু সাধক মানুষ, তাই সুখে দুঃখে তিনি কখনো বিচলিত হন না। ১৯৫৯ সালে ৯২ বছর বয়সে তাঁর জীবনাবসান হয়। তাঁর সঙ্গে লেখকের ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণা প্রবন্ধটিতে এক অনান্য স্বাদ এনে দিয়েছে।



২.১২ 'তিনি অভিধান ছাড়াও কয়েকখানা গ্রন্থ রচনা করে গিয়েছেন।'—হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত অন্যান্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম ও বিষয়বস্তুর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উঃ। লেখক হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে সংস্কৃত প্রবেশ গ্রন্থটি রচনা করেন তিনখণ্ডে। এটি ছিল একটি বহুমুখী রচনা, সংস্কৃত শিক্ষার সহস্র প্রণালী উদ্ভাবনই ওই পুস্তকের উদ্দেশ্য ছিল। এছাড়াও তিনি লিখেছেন '‘কবির কথা’, ‘রবীন্দ্রনাথের কথা’, ‘ব্যাকরণ কৌমুদী'। লেখক এখানে তাঁর ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ রচনাটিকে বিশেষভাবে তুলে ধরেছেন। ১০৫ খণ্ডে এটি মুদ্রিত হয়েছিল। এর বিষয় ছিল বাংলা ও সংস্কৃত বিষয়ক অভিধান। এই অভিধানের বৈশিষ্ট্য ছিল—বাংলা এবং সংস্কৃত সাহিত্যে থেকে প্রত্যেক শব্দের বহুবিধ প্রয়োগের দৃষ্টান্ত। এই অভিধান সাহিত্যরূপে মহামূল্যবান।

অন্য গুলি দেখুন

বোঝাপড়া

অদ্ভুত আতিথেয়তা

চন্দ্রগুপ্ত

বনভোজনের ব‍্যাপার

সবুজ জামা

চিঠি

আলাপ

পরবাসী

পথচলতি

একটি চড়ুই পাখি

দাঁড়াও

অন্য টা দেখুন দাঁড়াও

পল্লীসমাজ

ছন্নছাড়া

গাছের কথা

হাওয়ায় গান

কি করে বুঝবো

পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি

নাটোরের কথা

অন‍্যটা দেখুন নাটোরের কথা

গড়াই নদীর তীরে

জেলখানায় চিঠি

স্বাধীনতা

আদাব

অন্যটা দেখুন আদাব

শিকল পরার গান

হরিচরণ বন্দোপাধ্যায়

ঘুরে দাঁড়াও

সুভা

পরাজয়

মাসিপিসি

টিকিটের অ্যালবাম

লোকটা জানলই না



পথের পাঁচালী (১)

পথের পাঁচালী(২)

পথের পাঁচালী(৩)

পথের পাঁচালী বইয়ের অনুশীলন প্রশ্ন উত্তর

ভাষাচর্চা (১)

ভাষা চর্চা (২)