অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস আট অধ‍্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর সাম্প্রদায়িকতা থেকে দেশ ভাগ। - Online story

Thursday 3 August 2023

অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস আট অধ‍্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর সাম্প্রদায়িকতা থেকে দেশ ভাগ।



অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস

ইতিহাস

 আট অধ‍্যায় 

অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর

সাম্প্রদায়িকতা থেকে দেশ ভাগ

ভেবে দেখো 

নয় অধ‍্যায় প্রশ্নের উত্তর দেখুন

সাত অধ‍্যায় প্রশ্নের উত্তর দেখুন

১. ঠিক শব্দ বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো

(ক) ঔপনিবেশিক ভারতে সরকারি ভাষা হিসাবে ফারসির বদলে ইংরেজিতে স্বীকৃতি দেওয়া (Qds)

১৮৩৭/ ১৮৫০) খ্রিস্টাব্দে।

উঃ। ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে।



(খ) ভারতের মুসলিম সমাজের আধুনিকীকরণের অভিমান প্রথম শুরু করেছিলেন—(মহম্মদ আলি জিয়াহ / মৌলম আবুল কালাম আজাদ স্যার সৈয়দ আহমদ খান)।

উঃ। স্যার সৈয়দ আহমদ খান।



(গ) কৃষক প্রজা পার্টির নেতা ছিলেন—(এ. কে. ফজলুল হক/মহম্মদ আলি জিন্নাহ/জওহরলাল নেহরু)।

উঃ। এ. কে. ফজলুল হক।



(ঘ) স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল—(১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট/১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ আগস্ট/১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি)।

উঃ। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ আগস্ট।


২.নীচের বিবৃতিগুলির মধ্যে কোনটি ঠিক কোনটি ভুল বেছে নাও !


(ক) উনিশ শতকে হিন্দুদের তুলনায় মুসলমানেরা শিক্ষা, চাকরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। 

উঃ।ঠিক।



(খ) হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলন ভারতে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ককে প্রভাবিত করেছিল।

 উঃ। ঠিক।



(গ) মহাত্মা গান্ধি খিলাফৎ আন্দোলনকে সমর্থন করেনি।

 উঃ। ভুল।



(ঘ) পাকিস্তান প্রস্তাব তোলা হয়েছিল ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের লাহোর অধিবেশনে। 

উঃ। ঠিক।




৩.অতি সংক্ষেপে উত্তর দাও (৩০-৪০টি শব্দে) ঃ

(ক) আলিগড় আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?


উঃ। আলিগড় আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্যার সৈয়দ আহমদ মুসলমান সমাজের আধুনিকীকরণের সূচনা করেন। ইসলামীয় ধর্মতত্ত্বের সঙ্গে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের সম্মিলন ঘটিয়ে মুসলমান সমাজে আধুনিক উদার মনোভাব-এর বিকাশ ঘটাতে চেয়েছিলেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান। সেই সঙ্গে মুসলমান অভিজাত ও শিক্ষিত শ্রেণিকে তিনি স্বনির্ভর করে তুলতে চেয়েছিলেন। তিনি বৃহত্তর মুসলমান সমাজের তরফে ব্রিটিশ শাসনের সুযোগ সুবিধাগুলিকে সদৃব্যবহারের উৎসাহ তৈরির চেষ্টা করেন। তাই আলিগড় মহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজের পাঠক্রম ইউরোপীয় দর্শনের সঙ্গে ইসলামীয় ধর্মতত্ত্বের সহাবস্থান ছিল।



(খ) স্বদেশি আন্দোলন বাংলায় হিন্দু-মুসলমানদের উপর কীরকম প্রভাব ফেলেছিল?


উঃ। স্বদেশি নেতৃত্ব ও তাঁদের হিন্দু ধর্মীয় প্রতীক কেন্দ্রিক রাজনীতির মাধ্যমে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সামাজিক বিভাজন প্রকট হয়ে ওঠে। স্বদেশি আন্দোলনকে ঘিরে বাংলায় হিন্দু-মুসলমান সমস্যা ঘোরতর হয়। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী নেতারা বলেন হিন্দুদের তুলনায় মুসলমানদের বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এর উপর বাংলায়, গরিব কৃষকদের বিদেশি কাপড় বয়কট করার জন্য জোর করা হয়। কাজেই বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশি আন্দোলন এক সময় হিন্দু মুসলমান বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়।




(গ) ভারতীয় মুসলমানরা খিলাফৎ আন্দোলন শুরু করেছিল কেন?


উঃ। তুরস্কের সুলতানকে খলিফা বা মুসলিম জগতের ধর্মগুরু বলে মনে করা হতো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে তুরস্কের পরাজয়ের ফলে সুলতানের ক্ষমতা কমে যায়। তুর্কি অটোম্যান সাম্রাজ্যের অনেকটাই ব্রিটিশ দখল করে। এই ঘটনায় ভারতীয় মুসলিমরা ব্রিটিশদের এই নীতির তীব্র বিরোধিতা করে এবং খিলাফৎ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। মুসলমানদের পবিত্র স্থানগুলি খলিফাকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো হয়।



(ঘ) ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ ভারতে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ। ১৯৩০ এর দশক দ্বি-জাতি তত্ত্বভিত্তিক সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নতার গুরুত্বপূর্ণ সময়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লিগের সভাপতি মহম্মদ ইকবাল এবং পরে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চৌধুরি রহমৎ আলি পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত

প্রদেশ, বালুচিস্তান ও কাশ্মীর নিয়ে মুসলমানদের জন্য আলাদা ভূ-খণ্ড গঠন করার প্রস্তাব দেন। রহমৎ আলি অস্পষ্টভাবে “পাকিস্তান” এর কথা উল্লেখ করেছিলেন।



৪. নিজের ভাষায় লেখো : (১২০-১৬০টি শব্দ) ঃ

(ক) স্যার সৈয়দ আহমদ খান কীভাবে মুসলমান সমাজকে আধুনিকীকরণের পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তা বিশ্লেষণ করো।


উঃ। মুসলিম সমাজের আধুনিকীকরণের অভিযান শুরু হয় স্যার সৈয়দ আহমদ খান-এর আলিগড় আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। ইসলামীয় ধর্মতত্ত্বের সঙ্গে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের সন্মিলন ঘটিয়ে তিনি মুসলমান সমাজে আধুনিক উদার মনোভাবের বিকাশ ঘটাতে চেয়েছিলেন। স্যার সৈয়দ দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিরোধ তৈরি করতে চাননি। তিনি   জাতীয়তা বিরোধী না হলেও জাতি বিষয়ে কংগ্রেসের ভাবনার সঙ্গে তাঁর মিল ছিল না। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের বিরোধী ছিলেন। তিনি মনে করতেন কংগ্রেস হিন্দুদের প্রতিনিধি সভা। তাই তিনি মুসলিমদের কংগ্রেসে যোগ দিতে নিষেধ করেন। তিনি ব্রিটিশ শাসনে হিন্দু আধিপত্যের বদলে মুসলমান অভিজাত ও শিক্ষিত শ্রেণিকে স্বনির্ভর করে তুলতে চেয়েছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল বৃহত্তর মুসলমান সমাজের তরফে ব্রিটিশ শাসনের সুযোগ-সুবিধাগুলির সদব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া। তাই আলিগড়ে মহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজের পাঠক্রমে ইউরোপীয় দর্শনের সঙ্গে ইসলামীয় ধর্মতত্বের সহাবস্থান ছিল।




(খ) কীভাবে উনিশ শতকে হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলনের জন্ম হয়েছিল? সাম্প্রদায়িক মনোভাব তৈরিতে ঐসব আন্দোলনগুলির ভূমিকা কী ছিল?


উঃ। হিন্দু পুনরুজ্জীবনমুখী সংস্কারক আন্দোলন রাজনৈতিক চরমপন্থার জন্ম দেয়। এই উদ্যোগে হিন্দুধর্মের কল্পকাহিনি এবং প্রতীক চিহ্নের মাধ্যমে ভারতীয় জাতিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর হিন্দু সমাজের সংস্কারমুখী ধারা থেকেই জন্ম নিয়েছিল ওই পুনর্জাগরণের আন্দোলন।

হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদীরা ভারত ও হিন্দুকে সমার্থক বলে প্রচার করতে থাকেন। বলা হতে থাকে যে মুসলিম শাসনের কারণে সেই সভ্যতায় অধঃপতন ঘটেছে। হিন্দু জাতীয়তাবাদ প্রধানত উঁচু জাতির সংস্কারকদের ব্রাহ্মণ্য মতানুসারী ছিল। অধিকাংশ বিপ্লবী জাতীয়তাবাদীরা ভারতীয় সংস্কৃতি ও ভারতীয় জাতিকে হিন্দুধর্ম এবং হিন্দুদের বলে চিহ্নিত করতে

থাকেন। এই প্রসঙ্গে বলা যায় তিলকের শিবাজি উৎসব ও গণপতি উৎসব, অরবিন্দের দেশকে মাতৃবন্দনা ও জাতীয়তাবাদকে ধর্ম হিসাবে দেখা, গীতায় হাত রেখে বিপ্লবীদের শপথ নেওয়া প্রভৃতি। এর ফলে সাম্প্রদায়িকতা নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ে।





(গ) অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের পরে কীভাবে মুসলমান নেতাদের অনেকের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল?


উঃ ১৯২২ সালে অসহযোগ আন্দোলন তুলে নেওয়ার পর হিন্দু মুসলমান সম্পর্কের অবনতি হয়। খিলাফৎ নেতারা গান্ধির সর্বজনগ্রাহ্যতাকে ব্যবহার করে জনগণের কাছে পৌঁছতে চেষ্টা করেন। অসহযোগ তুলে নেওয়ায় খিলাফৎ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে। ১৯২২-২৩ খ্রিস্টাব্দে কয়েক স্থানে দাঙ্গা ঘটে যায়, যা হিন্দু-মুসলমানের ঐক্যের মধ্যে ভাঙন ঘটায়৷ পাশাপাশি বাড়তে থাকে উগ্র হিন্দু পুনরজ্জীবনবাদী আন্দোলন। হিন্দু মহাসভার মতো উগ্র হিন্দু সংগঠনগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। মদনমোহন মালব্য প্রমুখ নেতাদের গোঁড়া কার্যকলাপ কংগ্রেসে প্রাধান্য পেতে থাকে। ফলে মুসলমান সম্প্রদায় ক্রমশ কংগ্রেসের থেকে আরও দূরে সরতে থাকে।



(ঘ) ১৯৪০-১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কীভাবে ভারত-ভাগ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল? তোমার কী মনে হয় ভারত-ভাগ সত্যিই অপরিহার্য ছিল? তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও।

উঃ। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে ভারত বিভাজনের প্রক্রিয়া সকলের অন্তরালে একটু একটু করে রূপ নিতে শুরু করে।লর্ড লিনলিথগো প্রথম মুসলমানদের প্রতিশ্রুতি দেন ব্রিটেন ও ভারতের মধ্যে কোনো সমঝোতা হলে মুসলমানদের পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। লাহোর অধিবেশনে পাকিস্তান প্রস্তাব উত্থান করা হয়। যদিও অনেক কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে সিমলা সমঝোতা ব্যর্থ হয়। জিন্না পাকিস্তান প্রস্তাবে অনড় থাকেন। ১৯৪৬ এর ১৬ আগস্ট জিন্নাহ প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাক দেন। এর মূলে ছিল গভীর হতাশা। কেননা সাধারণ নির্বাচনে সিন্ধু ও পঞ্জাব প্রদেশ ছাড়া লিগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাকে দাঙ্গা শুরু হয়। দেশ জুড়ে এই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ল, লিগ অন্তবর্তী সরকারে যোগ দিল না। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত এই দুঃসময় থেকে বের হবার জন্য কংগ্রেস ও লিগ নেতৃত্ব দেশভাগকে কার্যত মেনে নেন। ভারত বিভাগ অনিবার্য ছিল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক থাকবেই। বর্তমানে বসে অতীতের পরিস্থিতি বোঝা গেলেও অনুভব করা সম্ভব নয়। ধৈর্য ধরলে কি ফল হতো তা বলা যায় না। কিন্তু নেতারা ভবিষ্যতের কথা না ভেবেই বর্তমানের উপর দৃষ্টি দিয়ে ভারত বিভাজন মেনে নিয়েছিলেন। সেই সময়কার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। জনগণের উপর নেতাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এই অবস্থায় বিভাজন মেনে নেওয়া ছাড়া হয়ত আর কোনো উপায় ছিল না। তবে একথাও ঠিক যে কংগ্রেস, জিন্নাহ্ ও ব্রিটিশ সরকার কিছুটা হলেও ভারত বিভাজনের জন্য দায়ী তা অস্বীকার করার উপায় নেই।


● অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :


প্রশ্ন:- মুসলিম লিগের লাহোর প্রস্তাবের খসড়া কে রচনা করেন ? 

উঃ। সিকান্দর হায়াৎ খান।




প্রশ্ন:-  মুসলমানদের স্বার্থ বলে যা প্রচার করা হতো তা আসলে কী ছিল?

উঃ। তা আসলে ছিল শিক্ষিত মুসলমানদের স্বার্থ।



প্রশ্ন:- কোন্ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মুসলিম সমাজের আধুনিকীকরণের অভিযান শুরু হয়?

উঃ। স্যার সৈয়দ আহমদ-এর আলিগড় আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।



প্রশ্ন:-  স্যার সৈয়দ আহমদ খান কী চেয়েছিলেন?

উঃ। ইসলামীয় ধর্মতত্ত্বের সঙ্গে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের সন্মিলন ঘটিয়ে মুসলমান সমাজে আধুনিক উদার মনোভাবের প্রকাশ তিনি ঘটাতে চেয়েছিলেন।



প্রশ্ন:- স্যার সৈয়দ আহমদ খানের উদ্দেশ্য কী ছিল?

উঃ স্যার সৈয়দ আহমদ খানের উদ্দেশ্য ছিল মুসলমান ছাত্রদের মধ্যে একটি গোষ্ঠী ও মানসিকতা গড়ে তোলা।


প্রশ্ন:- কত খ্রিস্টাব্দের কোন তারিখে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুই স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়?

উঃ। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান ও ১৫ আগস্ট ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।






.প্রশ্ন:-  ব্রিটিশ প্রশাসনের তরফে কোন্ ধারণা চালু করার চেষ্টা করা হয়?

উঃ। ধারণাটি ছিল মুসলমানরা সবাই একই রকম এবং একটি ধর্মীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায়।



 প্রশ্ন:- কত খ্রিস্টাব্দে সরকারি ভাষা হিসাবে ফারসির বদলে ইংরেজিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়?

উঃ। ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে সরকারি ভাষা হিসেবে ফারসির বদলে ইংরেজিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।



প্রশ্ন:- কাদের মধ্যে কোন্ শিক্ষার হার কম ছিল? 

উঃ। মুসলমানদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার হার কম ছিল।



প্রশ্ন:- সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কারা এগিয়ে যায়? 

উঃ। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে হিন্দুরা এগিয়ে যায়।



 প্রশ্ন:- বাংলা ও পাঞ্জাবের জনসংখ্যায় কতজন মুসলমান ছিলেন?

উঃ। বাংলা ও পাঞ্জাবের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই ছিলেন মুসলমান।



প্রশ্ন:-  কোন্ সময় থেকে জাতীয় আন্দোলনকে দূর্বল করবার তাগিদে ব্রিটিশ নীতির পরিবর্তন ঘটল?

উঃ। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে ব্রিটিশনীতির পরিবর্তন ঘটল।



প্রশ্ন:-  উনিশ শতকের শেষ দিক থেকে মুসলমানদের মধ্যে কী ধারণা তৈরি হয়?

উঃ। উনিশ শতকের শেষ দিক থেকেই মুসলমানদের মধ্যে ধারণা তৈরি হয় যে হিন্দুদের তুলনায় তারা বঞ্চিত।




প্রশ্ন:-  দ্বি-জাতি তত্ত্বের জনক কে? 

উঃ। স্যার সৈয়দ আহমেদ খান।



প্রশ্ন:-  ভারতে প্রথম আদমসুমারি কবে হয়?

 উঃ। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে।



প্রশ্ন:- কংগ্রেসে যোগদানকারী একজন মুসিলম নেতার নাম লেখো।

 উঃ। বদরুদ্দিন তৈয়াবজি।



প্রশ্ন:- উলেমারা সৈয়দ আহমদের কোন নীতিকে পছন্দ করেননি?

উঃ। সৈয়দ আহমদের পাশ্চাত্যকরণের নীতিটিকে উলেমারা কখনো পছন্দ করেননি।



প্রশ্ন:- কত খ্রিস্টাব্দে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের মৃত্যু হয়।


প্রশ্ন:- বিংশ শতকের শুরুতে কারা উলেমাদের দ্বারা গভীর ভাবে প্রভাবিত হন?

উঃ। মহম্মদ আলি ও সৌকত আলি উলেমাদের দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হন।



প্রশ্ন:- মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার রচয়িতা কে? 

উঃ। ভি.পি মেনন।



.প্রশ্ন:-  কত খ্রিস্টাব্দে কোথায় মহামেডান এডুকেশন্ কনফারেন্স-এর অধিবেশন হয়?

উঃ। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় মহামেডান এডুকেশন কনফারেন্স-এর অধিবেশন হয়।


প্রশ্ন:- কত খ্রিস্টাব্দে ভারত বিভাগের পরিকল্পনা কংগ্রেস ও লিগ মেনে নেয়?

উঃ। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে লর্ড মাউন্টব্যাটেন-এর ভারত বিভাগের পরিকল্পনা কংগ্রেস ও লিগ মেনে নেয়।


. প্রশ্ন:- কত খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশন বসে?

 উঃ। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশন বসে।




প্রশ্ন:- ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে কোন কংগ্রেসি নেতা কার কাছে একটি সমঝোতা প্রস্তাব পেশ করেন?

উঃ। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসি নেতা সি রাজাগোপালচারী জিন্নাহর কাছে একটি সমঝোতা প্রস্তাব পেশ করেন।



প্রশ্ন:- . কত খ্রিস্টাব্দে সিমলা অধিবেশন বসে?

 উঃ। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে সিমলা অধিবেশন বসে।






 প্রশ্ন:- কাকে 'খলিফা বা মুসলিম জগতের ধর্মগুরু' মনে করা হয়? কবে এই পদের অবসান ঘটে?

উঃ। তুরস্কের সুলতানকে। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তুরস্কের খলিফা পদের অবসান ঘটে।



প্রশ্ন:- কত খ্রিস্টাব্দ থেকে গান্ধিজি কোন্ আন্দোলনের সমর্থনে সোচ্চার হয়ে ওঠেন?

উঃ। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে গান্ধিজি খিলাফৎ আন্দোলনের সমর্থনে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।



প্রশ্ন:- কত খ্রিস্টাব্দে অসহযোগ আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়? 

উঃ। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে অসহযোগ আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়।





প্রশ্ন:- সাম্প্রদায়িকতা' কী? 

উঃ। জাতীয় আন্দোলনের থেকে মুসলমানদের সরে থাকার প্রবণতাকেই ‘সাম্প্রদায়িকতা’ বলে।



 প্রশ্ন:-১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কার ঘোষণায় সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার কথা বলা হয়?

উঃ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রামেস ম্যাকডোনাল্ড-এর ঘোষণায়।





 সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :



.

প্রশ্ন:-লাহোর অধিবেশনের গুরুত্ব কী ছিল?

উঃ। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশনে দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশগুলিকে নিয়ে মুসলমানদের জন্যে একটি পৃথক সার্বভৌম মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের দাবি উত্থাপিত হয়। এটি যায় প্রস্তাব নামে পরিচিত। তবে এই প্রস্তাবে ‘পাকিস্তান' কথাটির উল্লেখ না থাকলেও এটি পরবর্তীকালে ‘পাকিস্তান  নামে পরিচিত হয়।



প্রশ্ন:-সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা কী?


উঃ। ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে সুদৃঢ় করতে এবং প্রদেশের ধর্ম ও বর্ণগত বিভেদকে প্ররোচনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ।প্রধানমন্ত্রী র‍্যামসে ম্যাকডোনাল্ড ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট আইনসভার নির্বাচনে সম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ভারতের

বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য বিধানমণ্ডলীতে কিছু আসন বরাদ্দ করেন। যা সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নামে পরিচিত। এই নীতি অনুসারে ভারতীয় মুসলিম শিখ, ভারতীয় খ্রিস্টান, অ্যাংলো ইন্ডিয়ান প্রভৃতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আইনসভায় পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়, ব্রিটিশ সরকারের এই নীতির ফলে তৎকালীন ভারতে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বৃদ্ধি পায়।


প্রশ্ন:- কার উদ্যোগে এবং কেন সিমলা বৈঠক আহুত হয়?

উঃ। মুসলিম লিগ ভারত বিভাজনের দাবিতে অনড় থাকায় তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেল ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ওয়াভেল প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্থাপনের জন্য সিমলা বৈঠক আহ্বান করেন। কিন্তু জিন্নাহর অনড় মনোভাবের জন্য এই বৈঠক ব্যর্থ হয়।



  প্রশ্ন-সংগ্রাম বলতে কী বোঝায়?

উঃ। লর্ড ওয়াভেল সাংবিধানিক বিধি মেনে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসকে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনে আহ্বান জানান। ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী কংগ্রেস সরকারে যোগ দিলেও মুসলিম লিগ তাতে অসম্মত হয়। কংগ্রেসের নির্বাচনে চমকপ্রদ সাফল্য ও লিগের ভরাডুবিতে হতাশাগ্রস্ত জিন্নাহ্ নিজের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের আহ্বান জানান। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট দিনটি থেকে পাকিস্তানের জন্য গণ আন্দোলন শুরু হয়। ওই দিনে কলকাতায় ভয়াবহ দাঙ্গা শুরু হয় কিছুদিনের মধ্যেও পূর্ববঙ্গ, বিহার, যুক্তপ্রদেশ, পাঞ্জাব প্রকৃতি জায়গায় মারাত্মক সংঘর্ষ শুরু হয়। যা জিন্নাহ্র রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করেছিল।




প্রশ্ন:-দি ইন্ডিয়ান ইনডিপেন্ডেন্ট অ্যাক্ট কবে পাশ হয়?

উঃ। ১৯৪৭ সালের ৪ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দি ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্টস অ্যাক্ট পাস হয় এবং ১৮ জুলাই সম্মতি লাভ করে আইনে পরিণত হয়। এই আইনে বলা হয় যে, ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হবে এবং দেশীয় রাজ্যগুলি তাদের ইচ্ছামতো যে কোনো ডোমিনিয়নে যোগ দিতে পারবে।



প্রশ্ন:-মুসলমানদের একটা অংশ কীভাবে হিন্দুদের থেকে আলাদা একটি সংগঠিত সম্প্রদায় হিসেবে ভাবতে শুরু করে?

উঃ। উনিশ শতকের শেষ দিকেও ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমান সম্প্রদায় বলে নির্দিষ্ট কোনো বিষয় বোঝাত না।।অঞ্চলভেদে মুসলমানদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও জীবনযাপনের তারতম্য ছিল এবং বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলমানদের মধ্যে জনসংখ্যার হারও সমান ছিল না। বাংলা ও পাঞ্জাবে যেমন মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই ছিল মুসলমান। কিন্তু ঔপনিবেশিক সরকার মুসলমানদের মধ্যে যাবতীয় বৈচিত্র্য ও তারতম্যকে মুছে দিয়ে ভারতের সমস্ত মুসলমানকে একটি ধর্মসম্প্রদায় বলেচ চিহ্নিত করতে থাকে। এর ফলে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সংস্কৃতিক পরিচয়ের বদলে ধর্মীয় পরিচয়ই মুসলমানদের ক্ষেত্রে প্রধান পরিচয় হয়ে ওঠে। তার ফলে মুসলমানদের একটা অংশ ব্রিটিশ শাসকের মতো করেই নিজেদের হিন্দুদের থেকে আলাদা একটা সংগঠিত সম্প্রদায় হিসেবে ভাবতে শুরু করে।




 প্রশ্ন:-গান্ধিজি কীভাবে খিলাফৎ আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে আসেন?

উঃ। গান্ধিজি হিন্দু মুসলিম ঐক্যে বিশ্বাসী ছিলেন, তাই তিনি মুসলিম নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে গান্ধি খিলাফৎ আন্দোলনের সমর্থনে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ওই বছরেই মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার বিধিতে

হিন্দু-মুসলমান সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি অগ্রাহ্য করা হলে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন সাংবিধানিক রাজনীতিতে বিশ্বাস হারান। এর ফলে মুসলিম লিগের নেতৃত্বেও পরিবর্তন ঘটে। এই অবস্থায় গান্ধিজি মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে কংগ্রেসের ভিত্তি প্রসারিত করতে খিলাফত সমস্যাকে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের অন্যতম দাবিরূপে অন্তর্ভুক্ত করছে।