শহীদ যতীন্দ্রনাথ দাস হাতেকলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
শহীদ যতীন্দ্রনাথ দাস
আশিসকুমার মুখোপাধ্যায়
হাতেকলমে
অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
১) আশিসকুমার মুখোপাধ্যায় কোন খেলার ধারাভাষ্যকার ছিলেন?
উত্তর। আশিজকুমার মুখোপাধ্যায় ফুটবল খেলার ইংরাজি ধারাভাষ্যকার ছিলেন।
১.২ তার লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর। তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম হল 'স্বাধীনতার রূপকার নেতাজি সুভাষ।'
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.১ যতীন্দ্রনাথ দাস কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর। ১৯০৪ সালের ২৭ অক্টোবর উত্তর কলকাতার শিকদার বাগান অঞ্চলে মামার বাড়িতে যতীন দাশ জন্মগ্রহণ
২.২যতীন দাশের পিতার নাম কী ছিল?
উত্তর। যতীন দাশের পিতার নাম ছিল বঙ্কিমবিহারী দাশ।
২.৩ যতীন দাশের পিতা কোথায় চাকরি করতেন?
উত্তর। যতীন দাশের পিতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে চাকরি করতেন।
২.৪ যতীন দাশের ছদ্মনাম কী ছিল?
উত্তর। যতীন দাশের ছদ্মনাম ছিল ‘রবীন’ ও ‘কালীবাবু'।
২.৫ হিন্দ নওজোয়ান সভা কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর। বিপ্লবী ভগৎ সিংহ হিন্দ নওজোয়ান সভা প্রতিষ্ঠা করেন।
২.৬ মি. প্যাট্রি কে ছিলেন?
উত্তর। মি. প্যাট্রি তৎকালীন ইংরেজ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন।
২.৭ লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের কোন্ জেলে বদলি করা হয়?
উত্তর। লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের লাহোর সেন্ট্রাল জেলে বদলি করা হয়।
২.৮ কারা যতীনের জামিনের প্রস্তাব ঘৃণাভরে অগ্রাহ্য করেন?
উত্তর। যতীনের পিতা বঙ্কিমবিহারী দাশ ও তাঁর ছোটোভাই কিরণচন্দ্র দাশ জামিনের প্রস্তাব ঘৃণাভরে অগ্রাহ্য করেন।
১০. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও :
১০. যতীন দাশের পিতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের স্থায়ী চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিলেন কেন? এর কী হয়েছিল?
উত্তর। ১৯০১ সালের দশহারার দিনে যতীন দাশের বাবা বঙ্কিমবাবু সপরিবারে গঙ্গাস্নান করে একটা ফিটন গাড়ি চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে রেড রোডে কয়েকটি ব্রিটিশ টমি তাঁদের জোর করে ওই গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে নিজে গাড়িটি চেপে চলে যায়। বঙ্কিমবাবুকে ছেলেমেয়ে নিয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়। ওই কারণে তিনি মিউনিসিপ্যালিটি
কর্পোরেশনের স্থায়ী চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিলেন। হয়েছিল। এর ফলে তিনি একটা স্টেশনারি দোকান খুলে সংসার চালাতেন। সেজন্য তাঁকে দুঃখ দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা বলেছিলেন?
১০.২ – তোমার মতো মহান বিপ্লবীর জন্যও একটা কাজ আমায় অবশ্যই করতে হবে'—কে, কাকে একথা বলেছিলেন?
উত্তর। অগ্নিযুগের একজন বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাশ একথা বলেছিলেন। তিনি বিপ্লবী বীর ভগৎ সিংকে একথা বলেছিলেন।
১০.৩ কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনে কী ঘটেছিল?
উত্তর। ১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল নিমিতে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশন চলছিল। সেই অধিবেশন যখন চলছিল তখন সভ্যদের আসনের পাশে বিপ্লবী বীর ভগৎ সিং ও বাটকেশ্বর দত্ত একটি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। তাদেরকে ওখানে গ্রেফতার করা হয়।
১০.৪ ১৫জুন ১৯২৯ যতীন দাশকে কেন গ্রেফতার করা হয়?
উত্তর। তদানীন্তন ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান নি. প্যাটি (Mr. Party) নিজে তদন্ত করে ত্রিশটি নামের একটি তালিকা বার করেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন যতীন দাশ। কালবিলম্ব না করে
অন্যতম অভিযুক্ত আসামি হিসেবে কলকাতার প্রকাশ্য রাজপথ থেকে যতীন দাশকে গ্রেফতার করা।
১০.৫ ১৯২৯ সালের ১৩ জুলাই অনশন শুরু হয় কেন?
উত্তর। ২ জুলাই, ১৯২৯ যতীন দাশ গোপনে বটুকেশ্বর দত্ত সিং এর সঙ্গে দেখা করে বলেন যে, সেই
জেলে তাঁদের ওপর যে অমানুষিক পুলিশি নির্যাতন চলছে, তার প্রতিবাদে তাঁরা ১৬ জন সমবেতভাবে অনশন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই ১৯২৯, ১৩ জুলাই থেকে অনশন শুরু হয়।
১০.৬ অনশন করার আগে যতীন তাঁর সহযোদ্ধাদের কী অলীকার করাল। তিনি অনশন ভঙ্গ করাখেন না কেন?
উত্তর। অনশন আরম্ভ করার ঠিক দু-এক দিন আগে যতীন তাঁর সহযোবাদের অঙ্গীকার করিয়ে নেন যে, তাদের দাবিগুলোর যথাযথ মীমাংসা হয়ে গেলে তাঁরা অবশ্যই অনশন ভঙ্গ করবেন। যতীন দাশ মনে করতেন তাঁর পক্ষে এই অনশনই হবে মাতৃভূমির শৃঙ্খলামোচনের এক অভাবনীয় সুযোগ। একই তাঁর ছেলেবেলার স্বপ্ন এবং এ বিষয়ে তাঁর পিতা বঙ্কিমবিহারী দাশের অনুমতি আগেই তিনি পেয়ে গেছেন। তাই তিনি অনশন ভঙ্গ করবেন না।
১০.৭ জেলে অনশনের সময় যতীন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন কেন?
উত্তর। আট দিনের পর যতীনের অনশন ভালোর জন্য (২০ জুলাই তারিখে) ভোরবেলা জেল সুপার, জেল-ডাক্তারও আটজন বেশ হৃষ্টপুট পাঠানকে সঙ্গে নিয়ে যতীনের সেলে প্রবেশ করেন। তার একটি তীরে মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দুধ ঢালতে শুরু করে দেন। আর কোনো উপায় না দেখে যতীন ইচ্ছাকৃতভাবে জোরে জোরে কাশতে থাকেন। ফলে ওই নলটির মুখ খাদ্যনালি থেকে সরে গিয়ে শ্বাসনালির মধ্যে ঢুকে যায় এবং কিছুটা ঢুকে যাওয়ায় যতীন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
১০.৮ জেলে ফীন দাশের পাশে প্লেট পেনসিল রাখা হয়েছিল কেন?
উত্তর। জ্ঞান ফিরে পাবার পর যতীন দাশের গলার আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। সে জীবনে কথা বলতে পারবেন না। তাই তাঁকে এই মেট পেনসিলের ব্যবহার করে পেনসিল লিখে জানতে হবে।তাই যতীন দাশের পাশে প্লেট পেনসিল রাখা হয়েছিল ।
১০.৯ কিরণ দাশকে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে আনা হয়েছিল কেন?
উত্তর। জেলে যতীন দাশের শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। গলা দিয়ে তাঁর কোনো
বেরুচ্ছে না। যতীনের এই শোচনীয় অবস্থা উপলব্ধি করে বড়োলটি লর্ড আরউইন দেখাশোনা করার জন্যই যতীনের ভাই কিরণ দাশকে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে আনিয়ে নিয়েছিলেন।
১০.১০ যতীন দাশের সহযোহারা পথ অবরোধ করে শুয়েছিলেন কেন?
উত্তর। এক সর্বজন নিন্দিত গুপ্তচরের জামিনে যতীনাকে মুক্ত করা হয় পস্তাই দিনের দিন (২১ ১৯২১)। পরের দিন একেবারে কাকভোরে ডাক্তার ও জেল সুপার অ্যাস্কুলেজ ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী নিয়ে জেলে আসেন। তাঁরা যাতে যতীনের কাছে গিয়ে অসুস্থ অবস্থায় যতীনকে তুলে নিয়ে না যেতে পারে, তাই তার চারপাশে ব্যারিকেড রচনা করে পথ অবরোধ করে শুয়েছিলেন।