Jal dushan-mati sushanta rachana /জলদূষণ, মাটি দূষণ রচনা
রচনা
মাটিদূষণ
ভূমিকা : পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মাটি। সেই মাটি আজ নানাভাবে দূষিত হচ্ছে। অথচ মাটি ছাড়া প্রাণী বা উদ্ভিদ জগতের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। মাটির উর্বরতা কমে যাওয়া এবং মাটিতে ক্ষতিকারক জৈব ও অজৈব পদার্থের মিশ্রণকে মাটিদূষণ বলে।
মাটিদূষণের কারণ : মাটি নানা কারণে দূষিত হয়। বিভিন্ন শিল্পের বর্জ্যপদার্থের মাধ্যমে পারদ, নিকেল, সিসা প্রভৃতি ধাতু মাটিতে মেশে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, তেল শোধনাগার ধাতু নিষ্কাশন প্রভৃতি শিল্প থেকে ফ্লাই অ্যাশ মাটিতে মেশে। ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায়। কৃষিজমিতে ব্যাপক হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধ ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায় এবং মাটিতে বাস করে এমন উপকারী কীটপতঙ্গ মারা যায়। গৃহস্থালির আবর্জনাতে কাচ ও প্লাস্টিকের টুকরো, পলিথিনের ব্যাগ, টিনের কৌটো, ধাতুর টুকরো প্রভৃতি থাকে। এসব মাটিকে দূষিত করে। কাচ, প্লাস্টিক, পলিথিন প্রভৃতি কোনো দিনই মাটির সঙ্গে মেশে না। পারমাণবিক চুল্লি এবং পারমাণবিক বিস্ফোরণের ফলে মাটিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ মেশে। এছাড়া কঠিন জৈব পদার্থ, জীব-জন্তুর মল ইত্যাদি থেকে মাটিতে ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক প্রভৃতি সৃষ্টি হয়।
মাটিদূষণের ফল : মাটিদূষণের ফলে মাটির উর্বরতা কমে। ফলে ফসল উৎপাদন কমে যায়। মাটিদূষণের ফলে মাটিতে যেসব উপকারী কীটপতঙ্গ বাস, করে সেগুলিও মারা যায়। ফলে কৃষি ও পরিবেশের ক্ষতি হয়। আবার মাটিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ মিশলে তা ফসলের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে নানা রোগের সৃষ্টি করে।
উপসংহার : মানুষের নিজের প্রয়োজনে মাটিদূষণ রোধ করতে মাটি যাতে দূষিত না হয়, তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিতে হবে।
রচনা
বায়ুদূষণ
ভূমিকা : বায়ু পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। জীবজগতের বেঁচে থাকার জন্য বায়ুর প্রয়োজন। সেই বায়ু আজ যথেষ্ট দূষিত। বায়ুতে জীবজন্তু এবং পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক পদার্থের পরিমাণ বাড়লে তাকে বায়ুদূণ বলে।
বায়ুদূষণের কারণ : বায়ু নানা কারণে দূষিত হয়। বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ও কলকারখানা থেকে, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, রান্নার কাজে জ্বালানী পোড়ানো জঞ্ঝাল পোড়ানো থেকে ধোঁয়া, বিষাক্ত গ্যাস এবং সূক্ষ্ম ধাতুকণা বায়ুতে মেশে এর ফলে বায়ু দূষিত হয়। এছাড়া প্রাকৃতিক কারণেও বায়ু দূষিত হয়। যেমন— আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, দাবানল, ধূলিঝড় প্রভৃতির ফলে ধুলো, ছাই, ধোঁয়
বিভিন্ন গ্যাস বায়ুতে মিশে বায়ুমণ্ডলকে দূষিত করে।
বায়ুদূষণের ফল : দূষিত বায়ুর বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস এবং ক্ষতিকার বস্তুকণা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে নানা রকম রোগের সৃষ্টি করে। যেমন— শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, চোখ-মুখ জ্বালা, রক্তাল্পতা, অ্যালার্জি, ফুসফুসের ক্যানসার স্নায়ুর রোগ প্রভৃতি দেখা দেয়। বায়ুদূষণের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। গাছের নানারকম অসুখ দেখা দিচ্ছে এবং গাছের পাতায় খাদ্য তৈরি বাধা পাচ্ছে। বৃষ্টির ফোঁটা বায়ুমণ্ডল ভেদ করে আসার সময় তাতে অ্যাসিড যুক্ত হচ্ছে। এর ফলে জলাশয়ে মাছের ক্ষতি হচ্ছে। চুনাপাথর মার্বেল পাথরের দেওয়াল ক্ষয়ে যাচ্ছে, ফসল ও বনভূমির ক্ষতি হচ্ছে।
উপসংহার ঃ যেসব কারণে বায়ু দূষিত হয়, সেইসব কারণ দূর করতে হবে। না হলে মানুষ ও পরিবেশের যথেষ্ট ক্ষতি হতে থাকবে। কলকারখানা এবং
যানবাহনের ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ করে বায়ুদূষণ অনেকখানি কমানো সম্ভব। বায়ুদূষণ রোধ করার জন্য প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে।