একটি বন্দি পাখির আত্মকথা রচনা / Akti bandi pakhir anatakatha
একটি সেতুর আত্মকথা দেখুন
একটি বন্দি পাখির আত্মকথা
ভূমিকা : আমি খাঁচায় বন্দি এক পাখি। আমার জন্মের কয়েক মাস পর থেকে আমাকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমার আত্মকথা মানেই তো দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণাভরা বন্দিজীবনের ইতিহাস।
জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঃ জন্মের কয়েকদিন পরে আমি প্রথম পৃথিবীর আলো দেখেছিলাম। মায়ের আদর ও যত্নে আমি একটু একটু করে বাড়তে থাকি। ধীরে
ধীরে উড়তেও শিখি। প্রথমে এ-ডাল থেকে সে-ডাল, তারপর মাটি থেকে আকাশে। নিজের ইচ্ছেমতো এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াই, পোকামাকড় ধরে খাই। রাত্রে বাবা-মায়ের সঙ্গে কোটরে রাত কাটাই। এভাবেই চলছিল।
বন্দিজীবন ঃ তারপর হঠাৎ একদিন এক শিকারীর হাতে ধরা পড়ি। আমাকে খাঁচায় বন্দী করে বিক্রি করার জন্য মেলায় আনা হল। সেখানে এক বাবু খাঁচাসুদ্ধ আমায় কিনে নিলেন। প্রথম প্রথম আমি খুব আদর যত্ন পেলাম। কিন্তু যত দিন যায়, আমার প্রতি অবহেলা বাড়তে থাকে। বাবু মারা যাওয়ার পর ছেলেরা সব আলাদা হয়ে যায়। ভাগাভাগির সময় কেউ আমাকে নিতে না চাইলে বড়ো ছেলে দয়া করে আমাকে রাখতে রাজি হয়। এরপর আমার দুঃখ-
কষ্ট আরও বাড়তে থাকে। খাওয়ার, জল কোনোটাই সময়মতো পাই না। অন্য পাখিরা যখন আকাশে ওড়ে আমি তখন ডানা ঝাপটে ওড়ার বৃথাই চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে মনে পড়ে ছোটোবেলার কথা, মা-বাবার কথা। তখন আমার চোখেজল এসে যায়। কিন্তু মানুষের কাছে আমার চোখের জলের কোনো দাম
নেই।
উপসংহার : ভাবি মানুষ কত নিষ্ঠুর। আমাকে খাঁচায় আটকে রেখে তারা যে কি আনন্দ পায় কে জানে! আমাকে এভাবে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য মানুষের কি কোনো শাস্তি হবে না?