একটি কলমের আত্মকথা রচনা/Akti islamer anatakatha
রচনা
একটি কলমের আত্মকথা
ভূমিকা : আমি একটি কলম। আমি যখন যার কাছে থাকি সে-ই আমাকে লেখার কাজে লাগায়। আমার সাহায্যে শুধু সত্য কথাই নয়, কত মিথ্যা কথা লেখা হয়।
জন্ম : প্লাস্টিকের কারখানায় ছাঁচে ঢেলে আমার বিভিন্ন অংশগুলো তৈরি করা হয়। তারপর সেগুলিকে জোড়া হয়। তারপর রিফিল ভরা হয়। তখন আমি সম্পূর্ণ রূপ পাই। অনেক দোকান ঘুরে শেষে মালিকের কাছে যাই।
গুরুত্ব : আমাকে ছাড়া আজকের সভ্যতা একেবারেই অচল। ছোটো-বড়ো, নারী-পুরুষ, পণ্ডিত-মূর্খ সবাই আমাকে সম্মান দেয়। কখনও আমি বুক পকেটে স্থান পাই, কখনও আবার ব্যাগ বা বাক্সের মধ্যে স্থান পাই। কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষক, উকিল সবার কাছে আমি প্রিয়। ছাত্ররা লেখাপড়ার কাজে আমাকে ব্যবহার করে ডিগ্রী লাভ করে। বিচারক আমার সাহায্যে যেমন কাউকে মুক্তির আদেশ দেন, তেমনি কারুর মৃত্যুদণ্ড দেন। আবার অতি সাধারণ কৃষক ও শ্রমিক তাদের দৈনিন্দিন আয়-ব্যায়ের হিসেব রাখার জন্য আমাকে ব্যবহার করে। কত মানুষ তাদের মনের কথা ভাষায় রূপ দেয় আমার সাহায্যে।
রূপান্তর : মানুষ তার জ্ঞানবুদ্ধি কাজে লাগিয়ে এখনকার এই রূপ দিয়েছে। কিন্তু আমার পূর্বপুরুষরা ছিল অতি সাধারণ। একসময় লেখার জন্য বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করা হত। তারপর আসে পাখির পালকের কলম। তারপর আসে ঝরনা কলম। এখন বল পেনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। এইসব কলমের আকার ও গঠন কত বিচিত্র। এছাড়া আছে জেল পেন। আরও কত কী!
উপসংহার ঃ আমি মানুষের বহু উত্থান-পতনের সুখ-দুঃখের সাক্ষী। কত অখ্যাত লেখক বিশ্ববিখ্যাত হয়ে ওঠেন আমার সাহায্যে। কত প্রিয় বন্ধুর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে আমার সামান্য আঁচড়ে। কত অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারি আমি। তাইতো কেউ কেউ আমাকে সোনা ও রুপার মতো মূল্যবান ধাতু দিয়ে তৈরি করে। কত যত্ন নেয় আমার।