একটি নদীর আত্মকথা রচনা /Akti nadir antakatha rachana
আত্মকথা বিষয়ক
রচনা
একটি নদীর আত্মকথা
ভূমিকা : আমি একটি নদী। আপন খেয়ালে কুলু কুলু শব্দে বয়ে চলি। তোমরা মানুষ আমার তীরে গড়ে তুলেছো গ্রাম, শহর, শস্যক্ষেত্র।
জন্ম ও প্রবাহ : হিমালয়ের এক পার্বত্য অঞ্চলে আমার জন্ম। সেখান।থেকে পর্বতের ঢাল বেয়ে প্রবল বেগে বয়ে চলি। আমার স্রোতের সঙ্গে নুড়ি পাথর বয়ে নিয়ে পর্বত ক্ষয় করতে করতে এগিয়ে চলি। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে শেষে সমতল ভূমিতে এসে পড়ি। তখন আমার গতি কিছুটা কমে যায়। আমার দানে আশপাশের কৃষিজমি শস্যশ্যামল হয়ে ওঠে। মানুষ আমাকে তাদের নানা কাজে লাগায়। আমার বুকে জাহাজ স্টীমার নৌকা চলে, মালপত্র আমদানি রপ্তানি করে, মাছ ধরে, স্নান করে। জলের গতিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। একসময় সমভূমি ছাড়িয়ে সাগরের দিকে এগিয়ে চলি। আমার গতি শ্লথ হয়ে আসে। এঁকে বেঁকে চলি। পলি সঞ্চয়ের ফলে আমার বুকে চড়াভূমি জেগে ওঠে। একসময় আমি আমার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাই অর্থাৎ সাগরের সঙ্গে মিলিত হই।
ভাঙ্গা-গড়া : মানুষের জীবনে যেমন উত্থান-পতন, ভাঙ্গা-গড়া আছে, তেমনি ভাঙ্গা-গড়াই আমার খেলা। আমি একদিকে যেমন সমৃদ্ধ গ্রাম-শহর ও কৃষিক্ষেত্র গড়ে তুলি তেমনি সমৃদ্ধ গ্রাম নগর আমার স্রোতের আঘাত সহ্য করতে না পেরে আমার বুকে তলিয়ে যায়। বন্যায় যেমন আমার দু পাড়ের সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাই, তেমনি দু পাড়ের জমিতে পলি সঞ্জয়ের ফলে উর্বর হয়ে ওঠে।
উপসংহার : মানুষ কত স্বার্থপর! আমার বুকে বাঁধ দিয়ে আমার গতি কমিয়ে দিচ্ছে। কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ এবং শহরের নর্দমার নোংরা জল আমার বুকে ফেলে আমাকে ক্রমশ দূষিত করে তুলছে। কিন্তু এর ফল মানুষকেই ভোগ করতে হবে।