রচনা একটি দেওয়াল ঘড়ির আত্মকথা - Online story

Monday 27 November 2023

রচনা একটি দেওয়াল ঘড়ির আত্মকথা




 রচনা

একটি দেওয়াল ঘড়ির আত্মকথা

ভূমিকা : আমি একটি দেওয়াল ঘড়ি৷ টিক টিক করে দিন-রাত আমার কাজ করে চলেছি। আমার কোনো বিশ্রাম নেই, ছুটি নেই। বছরের পর বছর একইভাবে কাজ করে চলেছি। কাজটা খুবই একঘেঁয়ে। কিন্তু এটাই আমার একমাত্র কাজ।


জন্ম : একটি নামী কোম্পানির কারখানায় আমার জন্ম। নানা ধরনের সুক্ষ অংশ জুড়ে আমাকে তৈরি করা হয়েছে। একটি সুন্দর কাঠামোর আমাকে রাখা হয়েছে। তারপর আমি ঠিকমতো কাজ করছি কিনা পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এরপর প্যাকিং করে দোকানে পাঠানো হয়েছে। কোনো এক দোকান থেকে বর্তমান মালিক আমাকে কিনে এনে তাঁর শোয়ার ঘরে আমাকে স্থান দিয়েছেন। প্রথম দিনের মতো আমি নির্ভুলভাবে সময় জানিয়ে আসছি প্রতি ঘন্টায় ঢং ঢং শব্দ করে।

বর্তমান অবস্থা : আমার বয়স পনেরো বছরেরও বেশি। সেই একইভাবে ঢং শব্দ করে সময় জানিয়ে দিই। কর্তামশাই রাতে শুতে যাবার সময় এবং সকালে উঠেই আগে আমার দিকে তাকান। আমাকে দেখে জানতে পারেন তিনি। ঠিক সময়ে উঠেছেন কিংবা দেরি হয়েছে। আমার ঘন্টার শব্দে গিন্নিমার বিকেলের ঘুম ভাঙে। দিদিমণি পড়তে বসে ঘন ঘন আমার দিকে তাকান। পড়া শেষ করে টিভি দেখার জন্য ছটফট করেন। আমাকে ছাড়া তাঁদের দিন চলে না—এটা ভাবলে আমার গর্ব হয়। একবার আমার একটি অংশ খারাপ হয়ে যায়। কর্তামশাই আমাকে বিদেয় করে আধুনিক মডেলের একটি দেওয়াল ঘড়ি

আনতে চেয়েছিলেন। গিন্নিমা কিছুতেই মত দেন নি। মিস্ত্রি ডেকে আমাকে সারানো হয়। আমার প্রতি গিন্নিমার কেমন একটা মায়া পড়ে গেছে। আমার ঢং ঢং শব্দটা উনার খুব পছন্দ। তিনি সপ্তাহে একদিন আমার গায়ে জমা ধুলো পরিষ্কার করে দেন। তাই উনার ঘুম ভাঙতে দেরি হলে আমি ছটফট করি।

গুরুত্ব : সময় অতি মূল্যবান। যে সময় চলে যায় তা আর ফিরে আসে না। যে সময়ের কাজ সেই সময়ে যারা করে তারাই সফল হয়। সময়কে অবহেলায় নষ্ট করলে জীবনে সফল হওয়া যায় না। সময়ের এই মূল্য সম্পর্কে আমি মানুষকে সচেতন করি।


উপসংহার : বর্তমানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। তাতে সময় জানার ব্যবস্থা আছে। অনেকে শোবার সময় মোবাইল ফোন বালিশের কাছে রেখে শোয়। যখন প্রয়োজন, সময় দেখে নেয়। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম ভাঙার প্রয়োজন হলে অ্যালার্ম দিয়ে রাখে। এভাবে আমাদের গুরুত্ব কিছুটা হলেও।কমেছে। তবে কর্তামশাইরা সেকেলে মানুষ। তাঁদের কাছে আমার গুরুত্ব একটুও কমেনি। বরং আমি নির্ভুল সময় দিই বলে তিনি সবার কাছে আমার।প্রশংসা করেন। তবে আমারও আয়ু ক্রমশ কমে আসছে।





রচনা লিষ্ট নীচে রচনা গুলি দেখুন





পত্ররচনা বাবা কে