রচনা উত্তরকাশী ট‍্যানেল বিপর্যয়/ উত্তরকাশীর সুরঙ্গ বিপর্যয় - Online story

Tuesday, 28 November 2023

রচনা উত্তরকাশী ট‍্যানেল বিপর্যয়/ উত্তরকাশীর সুরঙ্গ বিপর্যয়




রচনা
উত্তরকাশী ট‍্যানেল বিপর্যয়/ উত্তরকাশীর সুরঙ্গ বিপর্যয়


ভূমিকা:- শ্রমিকদের কাজ করতে হয় কখনো গহন অরণ্যে। কখনো বা পাহাড়ে ।কখনো বাস সমুদ্রের গর্ভে ।আবার কখনো বা মাটির নিচে কখনো বা সুরঙ্গে ভিতর । তাদের কাজের মধ্যে অনেক ঝুঁকি থাকে। জীবন সংশয়  থাকে। তবুও তারা সেই কাজ থেকে পিছিয়ে আসে না। দুর্ঘটনা তাদের নিত্য সঙ্গী হলেও সে কাজটিকে তারা ভয় পায় না। তেমনি এক ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকলো উত্তর কাশি ট‍্যানেল বিপর্যয়। যেখানে ১৭ দিন অন্ধকার অন্ধকূপে আটকে থেকেও প্রাণ নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিল।

ঘটনার বিবরণ:; উত্তরাখণ্ডে উত্তরকাশীতে  সিল্কিয়ারা সুরঙ্গে  গত ১২ নভেম্বর ২০২৩ উত্তরকাশী টানেলে ধস নামে ।এরফলে  ৪১ শ্রমিক আটকে যায় সুরঙ্গে।তার পর থেকে টানা উদ্ধারের কাজ চলে। প্রথমে মেশিনের মাধ্যমে উদ্ধারের পরিকল্পনা হয়। অগার মেশিন দিয়ে উদ্ধার কাজ চালানো হয়। কিন্তু সেই অগার মেশিন ভেঙে সুরঙ্গে পাথরের মধ্যে আটকে যায়। তার পর ম্যানুয়াল দিয়ে উদ্ধারের পরিকল্পনা করা হয়। সেই মতো দক্ষ কাটার শ্রমিকদের উদ্ধারের কাজে নিয়ে আসা হয় হায়দরাবাদ থেকে। তার পর সেই শ্রমিকদের প্রচেষ্টায় সেই উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্রমশই প্রবল হল। বাড়ির ছেলেদের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় পরিবার পরিজনেরা।

সুরঙ্গের ভিতর খাবার পৌঁছানো:-
প্রথমে  সুড়ঙ্গে ধ্বংসস্তূপ খোঁড়া হয়েছিল:- ‘ইঁদুরের গর্ত’ মতো।খোড়ার প্রথম সংবাদ সংস্থা পিটিআই সেই ভিডিয়ো পোস্ট করে। তাতে দেখা গিয়েছে, চার জন শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন একটি পাইপের ভিতর থেকে বেরিয়ে থাকা দড়ি টানছেন। সর্বশক্তি দিয়ে দড়িটি টানতে দেখা গিয়েছে শ্রমিকদের। আর চতুর্থ জনকে দেখা গিয়েছে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে।শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। পাইপের মাধ্যমে তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাবার, জল ঔষধ এবং অন্যান্য দরকারি জিনিসপত্র।
ঘরে ফেরার আশা :- ঘরে ফেরার আশায় দিন গুনতে শুরু করেন আটকে পড়া শ্রমিকেরা। যখন সামনের দিক থেকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে মাত্র ১০-১২ মিটার বাকি ছিল। সেই অবস্থায় গত শুক্রবার থমকে যায় উদ্ধারকাজ। খননযন্ত্রটি ধ্বংসস্তূপের ভিতরে লোহার কাঠামোয় ধাক্কা খেয়ে ভেঙে যায়। তার টুকরোগুলি সব বার করার পর  আবার সেখানে খননকাজ শুরু হয়েছে। তবে এ বার আর যন্ত্র নয়, হাত দিয়ে খোঁড়া হচ্ছে। প্রয়োগ করা হচ্ছে ‘ইঁদুর গর্ত কৌশল’। এই পদ্ধতি কয়লা খনি থেকে কয়লা তোলার সময় কাজে লাগানো হয়।শেষের শ্রমিকদের উদ্ধার করতে ট‍্যানেলের ওপর র‍্যাট-হোল খনন এবং উলম্ব ড্রিলিং খনন করা হয়। এই কাজে হাত লাগায় ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং এন ডি আর এফ  টিম। সবশেষে  ৫৭ মিটার টানেল  খননের কাজ সম্পন্ন হয়।


উদ্ধারের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্ত:-
২৮ শে নভেম্বর দুপুর আড়াইটা উদ্ধার কার্যের শুরুতে ৪১ জন শ্রমিকের জন্য ৪১ টি অ্যাম্বুলেন্স আনা হয় । সেখানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভিকে সিং এবং উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী । পুলিশ গ্রিন করিডোর করে করে রেখেছিল ঋষিকেশ হাসপাতাল পর্যন্ত। বৈকাল চারটে পনের সময় এক এক করে সুরঙ্গের বাইরে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। আত্মীয় পরিজনকে সুরঙ্গের সামনে হাজির করানো হয় । বায়ুসেনার হেলিকপ্টার নামানো হয় । যদি কোন শ্রমিকের খুব অবস্থা খারাপ থাকে তাকে অন্যত্র ভালো চিকিৎসা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথম শ্রমিককে উদ্ধার করা হয় রাত্রি ৮টা ৫৮ মিনিটে । তারপর থেকে প্রতি মিনিটে একজন করে শ্রমিকে পাইপের মধ্যে দিয়ে বার করা হচ্ছিল ।  সর্বশেষ একচল্লিশ জন শ্রমিক যখন বের হয় তখন সময় ৯টা ৩৫ মিনিট । আগেই তৈরি থাকা গ্রীন করিডোরের মাধ্যমে সমস্ত শ্রমিককে নিয়ে যাওয়া হয় ঋষিকেশ হাসপাতালে।

ভারতবাসীর আবেগ:- ওই মহেন্দ্রক্ষন টি জন্য
ভারতবর্ষের প্রতিটি মানুষ অপেক্ষায় ছিল।যখন এক এক করে শ্রমিক বেরিয়ে আসছে। যখন শ্রমিকরা ভালো আছে খবর পায়। তখন থেকে শুরু হয়ে যায় মিষ্টি বিতরণ । নতুন করেই উত্তর কাশি সেজে উঠে দীপাবলি উৎসবে ।

উপসংহার :-দুর্ঘটনায় আটকে পড়া মানুষকে কিভাবে উদ্ধার করতে হয় সেটা ভারত সরকার দেখিয়ে দিয়েছিল ওই অন্ধ কূপ থেকে ১৭ দিন আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক কে উদ্ধার করে।  আমেরিকা যে যন্ত্র উদ্ধার করতে পারল না ,সেটা ভারতীয় সেনাবাহিনী নিজের হাতে তা করলেন। এটা ভারতবাসী হিসাবে গর্ব আমরা গর্বিত বোধ করি।








রচনা লিষ্ট নীচে রচনা গুলি দেখুন





পত্ররচনা বাবা কে