রচনা:- একটি ভাঙা গাড়ির আত্মকথা /Rachana akti bhanga garir anatskatha - Online story

Thursday 23 November 2023

রচনা:- একটি ভাঙা গাড়ির আত্মকথা /Rachana akti bhanga garir anatskatha




 রচনা:-

একটি ভাঙা গাড়ির আত্মকথা


ভূমিকা :আমি একটি ট্যাক্সি। আমি একটি ভাঙা গাড়িতে পরিণত হয়েছি । আমার আর রাস্তায় ছুটে চলার ক্ষমতা নেই। আমার কলকব্জা সব দূর্বল হয়ে গেছে ।তাই দীর্ঘদিন রাস্তার ধারে অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছি। আমার সারা গায়ে ধুলো জমে আছে। শেষ পরিণতির আশায় দিন গুনছি।



জন্ম : আমার জন্ম পশ্চিমবঙ্গের এক বড়ো  কারখানায়। বিভিন্ন ছোটো ছোটো অংশ জুড়ে আমাকে তৈরি করা হয়েছিল। সুন্দর নাম দেওয়া হয়েছিল আমাকে। তৈরির পর আমাকে শোরুমে পাঠানো হয়েছিল। শোরুমে সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছিল আমাকে।শোরুমে অনেক লোক এসে আমার খুব সুনাম করতো।


অতীত স্মৃতি ঃ যেদিন আমার প্রথম মালিক আমাকে কিনে তাঁর পাকা বাড়ির সামনে এক চাতালে  নিয়ে এলেন সেদিন তাঁর কি আনন্দ! তাঁর আনন্দ দেখে আমারও আনন্দের সীমা রইল না। আশপাশের লোকজন এসে ভীড় করল আমাকে দেখতে।সবাই আমার খুব সুনাম করল। আমার গর্ব হলো।আমাকে অনেকে আমার পূর্বপুরুষের সঙ্গে তুলনা আমাকে ভালো বলল। মালিক নিজেই গাড়ি নিয়ে বের হলেন। রাস্তার মোড়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এক ভদ্রলোক তাঁর মা-কে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন বলে গাড়িতে উঠলেন। রাতে বাড়ি ফিরে মালিক হিসেব করে দেখলেন, সারা দিনে তাঁর লাভ হয়েছে আড়াইশো টাকা। এইভাবে বছর তিনেক চলল। আমার

তখন কত যত্ন! দুবেলা ধোয়া-মোছা চলল। মালিকের একতলা বাড়ি দোতলা হল। ব্যাঙ্কে কিছু টাকা জমল। কিন্তু হঠাৎ কি একটা অসুখে গাড়ি চালানো ছেড়ে দিলেন। ভাড়া খাটিয়ে বছর খানেক চলল। তাতে মালিকের কোনো লাভ হল না। আমিও ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকলাম। শেষে আমাকে বিক্রি করে দেওয়া হল।



বর্তমান অবস্থা : দ্বিতীয় মালিকের কাছে আসার পর আমার প্রতি অবহেলা বাড়তে থাকল। ভিতর-বাইর সব দিক দিয়ে আমার অবস্থা খারাপ হতে থাকল। জোড়া-তাপ্পি দিয়ে চলতে থাকল। এইভাবে বছর দুয়েক চলল। তারপর আমার নানা রোগ দেখা দিল। শেষে এক দুর্ঘটনার পর আমার সামনের বেশ কিছুটা অংশ ভেঙে গেল। ওই অবস্থায় মালিক আমাকে রাস্তার ধারে রেখে দিয়ে বাড়ি ফিরলেন। ভাবলেন টাকা জোগাড় করে আমাকে গ্যারাজে করে দেবেন। কিন্তু টাকা জেগাড় হল না, আমার ভাগ্যে গ্যারাজের মুখ দেখা হল না।


উপসংহার : এখন আমার প্রতি মালিকের কোনো আগ্রহ নেই। মালিক আমাকে পুরোনো লোহার দরে বিক্রি করতে চান। অনেক খদ্দেরও আসে। কিন্তু দরে-দামে পোষায় না। এভাবেই চলছে। কিন্তু আমার এই জীবন আর ভালো লাগছে না। আমি আমার বিনাশ চাই, মুক্তি চাই। জানি না সেদিন কবে আসবে।




রচনা লিষ্ট নীচে রচনা গুলি দেখুন





পত্ররচনা বাবা কে