রচনা একটি পোস্টকার্ডের আত্মকথা/ Rachana akti post karder anatakatha
একটি পোস্টকার্ডের
আত্মকথা
ভূমিকা : আমাকে সবাই চেনে। আমি একটি পোস্টকার্ড। আমার দাম খুব কম। চেহারাও অতি সাধারণ। কিন্তু আমার গুরুত্ব কম নয়। আমি মানুষের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলি।
আমার জন্ম ঃ কাগজের মিলে হালকা রঙের বড়ো বড়ো কাগজের বোর্ড তৈরি হয়। সেখান থেকে সরকারি ছাপাখানায় পাঠানো হয়। সেখানে সরকারি দাম ছাপা হয়। নাম ও ঠিকানা লেখার জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়। অনেক সময় নীতিকথা বা কোনো রোগ সম্পর্কে সতর্কবার্তা ছাপা হয়। তারপর নির্দিষ্ট আকারে কাটা হয়। এরপর ডাকবিভাগ বিভিন্ন ডাকঘরে আমাদের পাঠায়।
দায়িত্ব : ডাকঘর থেকে কিনে কেউ কেউ অতি যত্নের সঙ্গে সুন্দর হস্তাক্ষরে, আবার কেউ কেউ অতি দ্রুত কালির আঁচড়ে আমার সারা শরীর ভরিয়ে তোলে। তবে কেউ কোনো গোপন কথা পোস্টকার্ডে লেখে না। কারণ পোস্ট কার্ডের লেখা সবার নজরে পড়ে। বক্তব্যবিবর এবং প্রাপকের নাম
ঠিকানা লেখা হলে আমার স্থান হয় ডাক বাক্সে। সেখান থেকে ডাকবিভাগের কর্মীরা আমাদের ডাকঘরে নিয়ে গিয়ে ছাপ মারে। তারপর নেল ব্যাগে ভরে ডাকবিভাগের গাড়ি, রেলগাড়ি কিংবা উড়োজাহাজের মাধ্যমে নির্দিষ্ট করে উদ্দেশ্যে আমাদের পাঠানো হয়। সেখানে ডাকবিভাগের কর্মীরা আমার বুকে ছাপ মারে। তারপর নির্দিষ্ট ব্যক্তির হাতে বা বাড়ির চিঠির বাক্সে পৌঁছে দেন। কত হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ, উত্থান-পতনের সংবাদ আমি একজনের কাছ থেকে আর একজনের কাছে পৌঁছে দিই। সেটাই আমার দায়িত্ব। আমি সে দায়িত্ব পালন করে আসছি।
উপসংহার : বহু ক্ষেত্রেই যথাস্থানে যথাসময়ে ডাকবিভাগের কর্মীরা আমাদের পৌঁছে দেয় না। তাই আমাদের ওপর মানুষের আস্থা অনেক কমে গেছে। তাছাড়া একালে টেলিফোনের ব্যাপক ব্যবহার আমাদের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে।