স্বর্ণপর্ণী আবিষ্কারের কাহিনী /sarnaprni abiskarer kahani নবম শ্রেণী
প্রশ্ন;- স্বর্ণপর্ণী আবিষ্কারের যে কাহিনী গল্পে রয়েছে তার সংক্ষেপে নিজের ভাষা আলোচনা করো।
উত্তর-প্রফেসর শঙ্কুর অত্যাশ্চর্য স্বর্ণপর্ণী আবিষ্কারের পিছনে যে দুজনে হাত ছিল তাদের মধ্যে একজন পিতা প্রখ্যাত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ত্রিপুরেশ্বর শঙ্কু এবং আর-একজন হলেন। তাঁর কাছে হাঁপানির চিকিৎসার উদ্দেশ্যে আসা জনৈক সাধক টিকটীবাবা। ডা. শঙ্কু টিক্ড়ীবাবার চিকিৎসা করলেও নিজে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। ত্রিপুরেশ্বরের এই
শারীরিক সমস্যার কথা আশ্চর্যভাবে বুঝে ফেলে টিকড়ীবাবা বলেছিলেন, কালকা থেকে ছেচল্লিশ কিমি দূরে সাড়ে ছ-হাজার ফুট উঁচুতে কসৌলি শহর থেকে কিছুটা দূরে জঙ্গলের মধ্যে এক ভগ্ন চামুণ্ডা মন্দিরের পিছনে ঝরনার ধারে স্বর্ণপণী নামে এক গাছ জন্মায়, যা সব অসুখ সারায়। টিকুড়ীবাবার মুখ থেকে ওই গাছের কথা জানা সত্ত্বেও ত্রিপুরেশ্বরবাবুর উপর ওই ওষুধ প্রয়োগ করা যায়নি, কারণ শঙ্কুকে এই ওষুধের ব্যাপারটি বলার কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি মারা যান। বাবার অসুস্থতায় স্বর্ণপর্ণী ব্যবহার করতে না পারলেও শঙ্কু কসৌলির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কালকা থেকে ট্যাক্সি করে কসৌলি যেতে শঙ্কুর আড়াই দিন লাগে। সেখানে গিয়ে একটি সম্ভার হোটেলে ওঠেন। ম্যানেজার নন্দকিশোরের সাহায্যে একটা ঘোড়ার ব্যবস্থা হয়। এরপর ঘোড়ার মালিক ছোটেলালকে নিয়ে চামুণ্ডা।মন্দিরের পাশ দিয়ে শঙ্কু গভীর জঙ্গলে ঢোকেন। এর মিনিট পনেরোর মধ্যে তারা ঝরনার শব্দ শুনতে পান। এই ঝরনার পাশেই তারা দেখতে পান হলদে পাতায় ভরা একটা গাছড়া সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে। এই গাছটাই যে ‘স্বর্ণপণী’ তা বুঝে নিতে শঙ্কুর অসুবিধা হয়নি।
প্রশ্ন-প্রোফেসর শঙ্কুর তৈরি করা মিরাকিউরলের বড়ি কীভাবে জেরেমি সন্ডার্সকে নতুন জীবনদান করেছিল লেখো।
ঊঃ:-কলকাতায় থাকাকালীন বিজ্ঞান-বিষয়ক সর্বশ্রেষ্ঠ পত্রিকা 'নেচার'-এর লেখক জেরেমি সন্ডার্সের সঙ্গে প্রোফেসর শঙ্কুর চিঠি বিনিময়ের মাধ্যমে আলাপ হয়। ক্রমে সেই আলাপ নিয়মিত পত্রবিনিময়ের ফলে গভীর বন্ধুত্বে পরিণত হয়। জেরেমি সন্ডার্সের জন্ম ভারতবর্ষের পুনা শহরে। তাঁর ঠাকুরদা বত্রিশ বছর ইন্ডিয়ান আর্মিতে ছিলেন।
সন্ডার্সের যখন সাত বছর বয়স তখন তিনি
বাবা-মার সঙ্গে ইংল্যান্ডে চলে যান। কিন্তু
ভারতবর্ষ বা ভারতবাসীর প্রতি তাঁর অন্তরের স্বাভাবিক টান থেকেই যায়। প্রায় আট মাস নিয়মিত পত্রবিনিময়ের পরে হঠাৎ শঙ্কুর চিঠির প্রত্যুত্তর আসা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও চিঠি আসছে না-দেখে শঙ্কু যখন টেলিগ্রাম করবার কথা ভাবছেন ঠিক সেই মুহূর্তে সভার্সের স্ত্রী ডরোথির ঠিঠি এসে পৌঁছোয় শত্রুর হাতে। চিঠিতে শঙ্কু জেরেমির যকৃতে ক্যানসার ধরা পড়ার
কথা জানতে পারেন। চিঠিটি পড়বার সঙ্গে সঙ্গেই
মিরাকিউরলের বড়ি শকু এয়ারমেলে পাঠিয়ে দেন ডরোথির নামে। দেড় মাস কেটে যাওয়ার পরও কোনো টেলিগ্রাম না আসায়, শঙ্কর বিশ্বাসের পারদ তলানিতে এসে ঠেকে। সবে যখন তিনি মিরাকিউরলের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ করতে শুরু করেছেন, ঠিক তখন তাঁর বাড়িতে এসে হাজির হন স্বয়ং জেরেমি সন্ডার্স। এভাবেই
মিরাকিউরলের বড়ি জেরেমি সভার্সকে একেবারে নতুন জীবনদান করেছিলেন।