একটি পর্বতের আত্মকথা রচনা
রচনা
একটি পর্বতের আত্মকথা
ভূমিকা : আমি একটি পর্বত। দীর্ঘকাল ধরে একই জায়গায় একইভাবে দাঁড়িয়ে আছি। অসংখ্য গাছপালার মাঝে আমি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছি। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির সাহায্যে ধীরে ধীরে আমার উচ্চতা হ্রাস পাচ্ছে।
জন্ম ও বৈশিষ্ট্য : আমি এক সময় ছিলাম ভঙ্গিল পর্বত৷ পৃথিবীর ভিতরে প্রচণ্ড উত্তাপ ও আলোড়নের ফলে চাপের সৃষ্টি হয়। সেই চাপের ফলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে আমার উৎপত্তি হয়েছে। আমার বয়স যে কত তা আমার জানা নেই। আমি এখন রোদ-জল-বায়ুতে ক্ষয়ে , ভঙ্গিল পর্বত থেকে ক্ষয়জাত পর্বতে পরিণত হয়েছি। আমি পাললিক ও রূপান্তরিত শিলা দ্বারা গঠিত।
আমার সংসার : শুধু আশপাশে নয়, আমার বুকেও ছোটো-বড়ো অসংখ্য গাছপালা আছে। বড়ো বড়ো গাছের শিকড়ে আমার বুকে ফাটল ধরে। ফলে ছোটো ছোটো পাথরের টুকরো খসে পড়ে। আমার যত কষ্টই হোক আমি মুখ বুজে সব সহ্য করি। এরা এখন আমার সঙ্গী। বর্ষাকালে আমার বুকের উপর দিয়ে জলের ধারা নীচে গড়িয়ে চলে। আবার এক সময় বেশিরভাগ গাছের পাতা ঝরে যায়। তখন আমার আর এক রূপ।
গুরুত্ব : আমি আমার বুকে নানা গাছকে বেড়ে উঠতে দিয়েছি। আমার বুকে নানা বন্যজন্তু বাস করে। আমার পাদদেশে যে আদিবাসীরা বাস করে তারা আমার বুকে পশু শিকার করে, ফলমূল সংগ্রহ করে, জ্বালানি সংগ্রহ করে। কিছু ওষধি গাছও আমার বুকে জন্মায়। সাপ, শিয়াল, হায়না, শূকর, বানর, বিভিন্ন পাখি—এদের আমি আশ্রয় দিয়েছি। এরা আমার সন্তানের মতো। এদের আমি ভালোবাসি। এদের যখন কেউ হত্যা করে আমার খুব কষ্ট হয়।
উপসংহার : যখন রাত্রি নামে গাছপালায় জোনাকির আলো জ্বলে উঠে। আকাশে অসংখ্য নক্ষত্র মিট মিট করে। চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে আসে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন জন্তুর ডাকে আমার তন্দ্রাভাব কেটে যায়।