নোঙর কবিতায়'নোঙর' শব্দটি কীসের প্রতীক। এই প্রসঙ্গে মধ‍্যবিত্ত জীবনের চাওয়া পাওয়া বিষয়টি পাঠ্য কবিতায় কীভাবে ফুটে উঠেছে আলোচনা করো। - Online story

Friday 26 April 2024

নোঙর কবিতায়'নোঙর' শব্দটি কীসের প্রতীক। এই প্রসঙ্গে মধ‍্যবিত্ত জীবনের চাওয়া পাওয়া বিষয়টি পাঠ্য কবিতায় কীভাবে ফুটে উঠেছে আলোচনা করো।

 


নোঙর কবিতায়'নোঙর' শব্দটি কীসের প্রতীক। এই প্রসঙ্গে মধ‍্যবিত্ত জীবনের চাওয়া পাওয়া বিষয়টি পাঠ্য কবিতায় কীভাবে ফুটে উঠেছে আলোচনা করো।


উত্তর আক্ষরিক অর্থে 'নোঙর' শব্দ দ্বারা বড়শি আকৃতির লোহার যন্ত্রকে বোঝায়, যার সাহায্যে নৌকা বা জাহাজকে তটের সঙ্গে বেঁধে বা আটকে রাখা হয়। এখানে কবি অজিত দত্ত 'নোঙর' কবিতায় 'নোঙর' শব্দটিকে বাধা বা প্রতিবন্ধকতার প্রতীকরূপে দেখিয়েছেন।

[] নানা চাওয়াপাওয়া, আশানিরাশার দ্বন্দ্বে সর্বদা দোলায়িত মহাবিত্ত মানুষের জীবন। সাধ, স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা যেমন সেই জীবনে আলোড়ন সৃষ্টি করে; তেমনই স্বপ্নভঙ্গের বেদনাও তাদের জীবনকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে। আর্থিক, সামাজিক ও মানবিক— নানাপ্রকার বাধাবিঘ্ন মধ্যবিত্ত

তথা সাধারণ মানুষের জীবনপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। গতানুগতিক জীবনপ্রবাহ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলেও সেখান থেকে মুক্তির পথ যেন বন্ধ মোহমায়ার বন্ধনের কারণে। পিছুটান আর কর্তব্যের বাঁধন স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

তাই আক্ষেপের সুরে কবি অজিত দত্ত বলেছেন—

'পাড়ি দিতে দুর সিন্ধুপারে

নোঙর গিয়েছে পড়ে তটের কিনারে।'

অর্থাৎ, মনের চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রচিত হয় মধ্যবিত্তের জীবনে। এতে ক্ষতবিক্ষত হয় তারা। তবুও এগিয়ে যাওয়ার বা আকাঙ্ক্ষা নিবৃত্তির চেষ্টার ত্রুটি রাখে না মানুষ। বারবার ব্যর্থতার গ্লানি সহ্য করেও মিছে দাঁড় টানে। কিন্তু জীবনের নোঙর যে তটের কিনারেই পড়ে গেছে; তাই জাগতিক বন্ধন থেকে মানুষের দৃষ্টি নেই। অর্থাৎ পাওয়ার ভাঙটা অপূর্ণই থেকে যায়।

এভাবেই 'নোঙর' কবিতায় মধ্যবিত্ত জীবনের চাওয়া ও না-পাওয়ার দিকটি শিল্পরূপ লাভ করেছে আলোচ্য কবিতায়।