আবহমান' কবিতার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ প্রকৃতির যে প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে তার পরিচয় দাও।
আবহমান' কবিতার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ প্রকৃতির যে প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে তার পরিচয় দাও।
অথবা, 'আবহমান' কথাটির অর্থ লেখো। 'আবহমান' কবিতায় গ্রামীণ প্রকৃতির কোন্ প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে আলোচনা করো।
উত্তর :-আবহমান'-এর অর্থ -বহুকাল ধরে যা চলে আসছে, অর্থাৎ যা চিরপ্রচলিত 'অথবা যা ক্রমাগত একইরকমভাবে হয়ে চলেছে, তাকেই বলা হয় 'আবহমান'।
গ্রামীণ প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি :- পল্লিগ্রামের চিরকালীন, বহু পরিচিত ছবি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান' কবিতায় তুলে ধরেছেন। আলোচ্য কবিতায় নেই কল্পনার বিস্তার, আছে অল্প কিছু শব্দের মাধ্যমে গ্রামীণ প্রকৃতির বাস্তব প্রতিচ্ছবির প্রকাশ।
‘লাউ গাছ’ পল্লিবাংলার অতিপরিচিত একটি উদ্ভিদ যা পল্লির প্রায় প্রতি গৃহেই দেখা যায়। আলোচ্য কবিতায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিয়েছে লাউ গাছ। কবি তাই প্রবাসী বাঙালিদের আহ্বানের সুরে বলেছেন
'যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া,
লাউমাচাটার পাশে।'
এরপর তিনি যখন বলেন—
“ ছোট্ট একটা ফুল দুলছে, ফুল দুলছে, ফুল সন্ধ্যার বাতাসে। '
তখন গ্রামীণ প্রকৃতির এক স্নিগ্ধ-সুন্দর পরিবেশের পরিচয় পাওয়া যায়। পল্লির এক বাস্তব চিত্র এটি।
বাংলার আপামর জনগণ, বিশেষ করে যারা জন্মভূমিকে মায়ের মতো ভালোবাসে, তারা বাংলার প্রকৃতিকে নিবিড়ভাবে চেনে।
প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষের একত্মতা :-এখানে নানা ধরনের ফুল যেমন দেখা যায়, তেমনই সন্ধ্যা হলেই ছুটে আসে নদীর শান্ত-শীতল বাতাস। দিনান্তে এই হাওয়ার স্পর্শে আমরা স্নিগ্ধ হই।
প্রকৃতির সঙ্গে একান্ত হয়ে পড়ি আমরা তথা বঙ্গবাসীরা। বঙ্গবাসীর এমন অনুভবের কথা কবির লেখায় প্রকাশ পেয়েছে—
' সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে । জন্মভূমি বাংলার মাটিতে বঙ্গসন্তানদের বারবার ফিরে আসার প্রসঙ্গটিকে সূর্যের আলো-ছায়ার মাধ্যমে প্রতীকময় করে তুলেছেন কবি। এই বাংলার নদী-মাঠ, জল-বাতাসকে ভালোবেসে সন্তানদের
ফিরে আসার কাহিনি তথা সন্তানের প্রতি মাতার গভীর আত্মিকতার কথা যেন ফুরোয় না।
এভাবেই গ্রামীণ প্রকৃতির প্রতিচ্ছবির প্রকাশ ঘটেছেআ লোচ্য কবিতায়।