কোনি' উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহের যে-জীবনদর্শন ব্যক্ত হয়েছে, তা আলোচনা করো।
কোনি' উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহের যে-জীবনদর্শন ব্যক্ত হয়েছে, তা আলোচনা করো।
উত্তর/ 'কোনি' উপন্যাসে কোনির ‘ক্ষিদ্দা’অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ আগাগোড়া এক ব্যতিক্রমী মানুষ।
ইচ্ছাশক্তির ওপর গুরুত্ব:- উপন্যাসের শুরুতে বিষ্টুচরণের সঙ্গে কথোপকথনে ক্ষিতীশ নিজের শরীরকে চাকর বানানোর পরামর্শ দেন এবং পরক্ষণেই তার প্রমাণও দেন। তখনই পঞ্চাশোর্ধ্ব ক্ষিতীশের ভিতরকার এক সুস্থসবল যুবক যেন আমাদের চোখে পড়ে। তিনি বিষ্টুকে জানান যে, শুধু গায়ের জোর নয়, বরং মানসিক জোর বা ইচ্ছাশক্তিও জরুরি।
চ্যাম্পিয়ন তৈরি > চ্যাম্পিয়ন তৈরি সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, প্রশিক্ষককে মনস্তাত্ত্বিক হতে হয়। গুরুকে শিষ্যের কাছে শ্রদ্ধেয় হতে হয়। কথা, কাজ ও
উদাহরণ দিয়ে তার মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলতে হয়। তাঁর ঘরে পাখা ছিল না, বিছানাও ছিল না। কারণ তিনি মনে করতেন যে, চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে শুধু শিষ্যকেই নয়, গুরুকেও কঠোর জীবনযাপন করতে হয়।
সময় ও শক্তির অপচয়বোধ>
ক্ষিতীশের মতে, ব্যক্তিগত রেকর্ড গড়ার জন্য সময় ও শক্তির অপচয় করা ছেড়ে দেশের জন্য গৌরব আনতে হবে। চ্যাম্পিয়ন তৈরি করা যায় না। তাদের চিনে নিতে হয়।
কোনিকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শিক্ষা দিতে গিয়ে ক্ষিদ্দা তাকে চরম যন্ত্রণার মধ্যেই থাকে খাটিয়েছেন। তাকে পরামর্শ দিয়েছেন যন্ত্রণা আর সময়কে হারানোর; নিজেকে যন্ত্রণার সঙ্গে একাত্ম করেছেন।
আর এইজন্যই ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর
কোনিকে যন্ত্রণার কথা বলতে শুনে তার ক্ষিদ্দা তাকে বলেছিলেন, 'ওইটেই তো আমি রে, যন্ত্রণাটাই তো আমি।