রাধারাণী গন্ধানুসারে রাধারাণী চরিত্রের পরিচয় দাও।
রাধারাণী গন্ধানুসারে রাধারাণী চরিত্রের পরিচয় দাও।
উত্তর:; কর্তব্যপরায়ণ:;বহিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত 'রাধারাণী' গল্পে মূল বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হল রাহারাণী। আলোচা গাছের হয় পরিসরে এই চরিত্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা যায়।
রাধারাণীর আপন বলতে তার মা কিন্তু তিনি অত্যন্ত পীড়িত। পীড়িত মায়ের পথ্যের প্রয়োজনে বনফুলের
মালা গেঁথে রথের মেলায় তা বিক্রির উদ্দেশে নিয়েছিল রাধারানী। এ থেকে মায়ের প্রতি তার কর্তব্যপরায়ণতার পরিচয় পাই।
মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা:-মায়ের পথ্যের জন্য অর্থ প্রয়োজন কিন্তু বৃষ্টির জন্য মেলা ভেঙে যাওয়াতে রাধারাণীর মালাও বিক্রিয় হয়নি। এই অবস্থায়
কীভাবে মায়ের পথ্যসংগ্রহ করবে, সেইচ চিন্তায় ব্যাকুল রাধারাণী কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতে থাকে। এ থেকে বোঝা যায় মায়ের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা বর্তমান ছিল।
বিচক্ষণতা:;অন্ধকারময় পিচ্ছিল পথে অপরিচিত এক পুরুষ তার ঘাড়ে এসে পড়লে প্রথমে ভয়ে উচ্চৈঃস্বরে কেঁদে উঠলেও উক্ত ব্যক্তির কণ্ঠস্বর শুনে রাধারাণী বুঝতে পারে যে ব্যক্তিটি বড়ো দয়ালু। তার এই আচরণে বোঝা যায় সে বেশ বিচক্ষণ বালিকা।
সরল ও অকপট:-অপরিচিত মানুষটি দয়ালু বুঝতে পেরে রাধারাণী অকপটে তার মেলায় যাওয়ার উদ্দেশ্য ব্যক্ত করেছে। এতে তার সরলতা ও অকপটতার প্রকাশ ঘটেছে।
সততা:-রাধারাণী অনুমান করেছিল আগন্তুক ব্যক্তি মালার মূল্যেরতুলনায় তাকে বেশি মূল্য দিয়েছিল। তাই সে বলেছে ঘরে গিয়ে যদি দেখা যায় অধিক দাম তাকে দেওয়া হেয়েছে, তবে সে তা ফিরিয়ে দেবে। তার এমন উক্তিতে সততা ও তার নির্লোভী বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়েছে।
→ এভাবে আলোচ্য কাহিনির প্রেক্ষাপটে আমরা রাধারাণীর কর্তব্যপরায়ণতা, মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা, বিচক্ষণা, সরলতা, সততা ও নির্লোভী বৈশিষ্ট্য লক্ষ করি।
রুক্মিণীকুমার রায়ের দ্বারা রাধারাণীরা কীভাবে
উপকৃত হয়েছিল, তা 'রাধারাণী' গল্পানুসারে লেখো।
অথবা, 'তাহার নাম রুক্মিণীকুমার রায়। - রুক্মিণীকুমার রায়ের যে পরিচয় পাওয়া যায়, তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘রাধারাণী' গল্পের স্বল্প পরিসরে রুক্মিণীকুমার রায় সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে পারি না।
তবু রাধারাণীর সঙ্গে তাঁর বাক্যালাপ ও তাঁর আচরণ থেকে উক্ত চরিত্র সম্পর্কে কিছু তথ্য আমরা পেয়ে থাকি। যেমন—
বন্ধুপরায়ণ:-প্রবল বৃষ্টির কারণে রথের মেলা ভেঙে যাওয়ার ফলে রাধারাণীর কোনো মালা বিক্রি হয় না। রাধারাণী মায়ের পথ্যের কথা ভেবে ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। তখন পরম বন্ধুর মতো রাধারাণীকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রুক্মিণীকুমার। তিনি রাধারাণীর সকল মালাই কিনে নেন, যাতে রাধারাণী মায়ের পথ্য কিনতে পারে।
পরোপকারী:;অন্ধকার পিচ্ছিল পথে বালিকা রাধারাণী কোনোপ্রকার অসুবিধায় না পড়ে, সেই চিন্তা করে রাধারাণীকে হাত ধরে তাদের কুটিরে পৌঁছে দেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাধারাণীর সঙ্গে কথোপকথনে তিনি রাধারাণীদের দুরবস্থার কথা জেনেছিলেন, তাই একটি কাপড়ও দোকান থেকে কিনে রাধারাণীদের কুটিরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা
করেন।
প্রচারবিমুখ:-রুক্মিণীকুমার মালার মূল্যরূপে অধিক মূল্য দিয়েছেন, আড়ালে থেকে কাপড় পাঠিয়েছেন। রাধারাণীদের কুটিরে একটি ‘নোট’ রেখে এসেছেন—এসবই তিনি নীরবে করেছেন। নিজেকে অপ্রকাশ্য রেখেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন—এতে তাঁর প্রচারবিমুখতার পরিচয় ব্যক্ত হয়েছে।
রুক্মিণীকুমার তাঁর নাম লিখে দিয়েছেন নোটে, যাতে কেউ রাধারাণীদের ‘চোর’ অপবাদ দিতে না-পারে বিচক্ষণ এতে তাঁর বিচক্ষণতার পরিচয় ফুটে উঠেছে।