চন্দ্রনাথ ও হীরুর মধ্যে প্রকৃতগত পার্থক্য আলোচনা কর। - Online story

Wednesday 5 June 2024

চন্দ্রনাথ ও হীরুর মধ্যে প্রকৃতগত পার্থক্য আলোচনা কর।

 


চন্দ্রনাথ গল্পে

চন্দ্রনাথ ও হীরুর মধ্যে প্রকৃতিগত পার্থক্য আলোচনা করো।

অথবা, ‘চন্দ্রনাথ’গল্প অবলম্বনে চন্দ্রনাথ ও হীরু চরিত্রের তুলনামূলক আলোচনা করো।

উত্তর/ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পের দুই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল চন্দ্রনাথ ও হীরু। দুজনের

চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। চন্দ্রনাথের আছে একক উগ্র ঔজ্জ্বল্য আর

হীরুর কোমল-স্নিগ্ধ দীপ্তি। তাই গল্পকথক নরেশ চন্দ্রনাথকে তুলনা করেছে ভীমকায় কালপুরুষের সঙ্গে আর হীরুকে তুলনা করেছে স্নিগ্ধ শুকতারার সঙ্গে।

স্বভাবগত ভাবে চন্দ্রনাথ ও হীরু দুজনেই মেধাবী কিন্তু স্বভাবগুণে দুই বিপরীত মেরুতে দুজনের অবস্থান। চন্দ্রনাথ চূড়ান্ত আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন এবং অনেকক্ষেত্রেই অহংকারী। হীরুর প্রথম হওয়াকে কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। শুধু তাই নয়, হীরুর অযোগ্যতা প্রমাণেও সে সচেষ্ট হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তথা কতিপয় মাস্টারমশাই সম্পর্কে অছাত্রচিত কটূক্তি করেছে সে। অন্যদিকে হীরু শান্ত-স্নিগ্ধ, নিরহংকারী কিশোর।

চন্দ্রনাথ তাকে বিদ্রুপ করলেও চন্দ্রনাথকে নিজের আনন্দ- অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, তাকে উদ্দেশ্য করে বিদ্রুপপূর্ণ চন্দ্রনাথের চিঠিটিকে সে বন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেখে দিয়েছে।

চন্দ্রনাথ এতটাই গর্বোদ্ধত ছিল যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহাশয় বা দাদা নিশানাথবাবুর অনুরোধ বা নির্দেশকেও অমান্য করতে দ্বিধা করেনি সে। অন্যদিকে হীরু এতটাই বিনয়ী যে সকলের সঙ্গেই সমাদরপূর্ণ আচরণ করেছে।

→ এভাবেই ‘চন্দ্ৰনাথ' গল্পের গল্পকথক নরেশের বর্ণনার মধ্যে থেকে চন্দ্রনাথ ও হীরু দুই ভিন্নধর্মী চরিত্রের বৈচিত্র্যের পরিচয় পাই আমরা।





এইটেই আমার কাছে তার স্মৃতিচিহ্ন।বক্তা কে?কোন স্মৃতিচিহ্নের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন? উক্তিটির তাৎপর্য লেখো।

উত্তর প্রশ্নের এই উক্তিটির বক্তা হল ‘চন্দ্রনাথ' গল্পের উল্লেখযোগ্য চরিত্র হীরু।

 হীরু স্কলারশিপ পাওয়ার আনন্দে উৎসবের আয়োজন করেছিল, তাতে যোগদানের জন্য সহপাঠী চন্দ্রনাথকেও সে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। চন্দ্রনাথ হীরুকে পত্রের মাধ্যমে জানায় যে সে উক্ত অনুষ্ঠানে থাকতে পারবে না। এরপর চন্দ্রনাথ যে কোথায় চলে গেছে তা হীরু বা গল্পকথক নরেশের জানা নেই। হীরুকে লেখা চন্দ্রনাথের চিঠি প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই হীরু নরেশকে জানায় যে—চন্দ্রনাথের স্মৃতিচিহ্নরূপেই সে চন্দ্রনাথের চিঠিটি সযত্নে রেখে দেবে।

 হীরুর স্কলারশিপ পাওয়ার আনন্দোৎসবে যোগ দিতে না-পারার জন্য চন্দ্রনাথ পত্রের মাধ্যমে হীরুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে এবং হীরুর সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করেছে। তবে সে এটাও বলেছে যে-

উৎসবটা না-করলেই হত। চন্দ্রনাথের অবজ্ঞা সত্ত্বেও হীরু চন্দ্রনাথের প্রতি কোনো বিরূপ কথা বলেনি, বরং সহপাঠীর প্রতি তার কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার প্রমাণরূপে তাকে দেওয়া চন্দ্রনাথের চিঠিটি যত্নে রেখে

দিয়েছে। অন্যের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রকাশ হীরুর অন্যতম গুণ বা এই আচরণে প্রকাশিত হয়েছে। সহপাঠী চন্দ্রনাথের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল বলেই হীরু চন্দ্রনাথের আগামীর কার্যকলাপ

সম্পর্কে নরেশের কাছে জানতে চেয়েছে বারবার।

→ এভাবেই চন্দ্রনাথের প্রতি হীরুর হৃদয়ের দুর্বলতার প্রকাশ ঘটেছে উক্ত উদ্ধৃত উক্তিটিতে।