অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস আট অধ্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর - Online story

Friday, 30 August 2024

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস আট অধ্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর

 

          
অষ্টম শ্রেণির
     ইতিহাস  

আট  অধ্যায়
   অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
 সাম্প্রদায়িকতা থেকে দেশভাগ
ভেবে দেখো - খুঁজে দেখো


১. ঠিক শব্দ বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :

(ক) ঔপনিবেশিক ভারতে সরকারি ভাষা হিসাবে ফারসির বদলে ইংরেজিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় – (১৮৪৭/১৮৩৭/১৮৫০) খ্রিস্টাব্দে।
উঃ। ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে।


(খ) ভারতের মুসলিম সমাজের আধুনিকীকরণের অভিযান প্রথম শুরু করেছিলেন –(মহম্মদ আলি জিন্নাহ/মৌলানা আবুল কালাম আজাদ/স্যার সৈয়দ আহমদ খান)।
উঃ। স্যার সৈয়দ আহমদ খান।

(গ) কৃষক প্রজা পার্টির নেতা ছিলেন–
(এ. কে. ফজলুল হক/মহম্মদ আলি জিন্নাহ / জওহরলাল নেহরু)।
উঃ এ. কে. ফজলুল হক।


(ঘ) স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল – (১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট/১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ আগস্ট/১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি)।
উঃ। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ আগস্ট।


২. নীচের বিবৃতিগুলির মধ্যে কোনটি ঠিক কোনটি ভুল বেছে নাও ঃ
(ক) উনিশ শতকে হিন্দুদের তুলনায় মুসলমানেরা শিক্ষা, চাকরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল।
উঃ।ঠিক
(খ) হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলন ভারতে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ককে প্রভাবিত করেছিল।  

উঃ। ঠিক।
(গ) মহাত্মা গান্ধি খিলাফৎ আন্দোলনকে সমর্থন করেনি।
উঃ। ভুল
(ঘ) পাকিস্তান প্রস্তাব তোলা হয়েছিল ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের লাহোর অধিবেশনে।
উঃ। ঠিক
৩. অতি সংক্ষেপে উত্তর দাও (৩০-৪০টি শব্দে) :
(ক) আলিগড় আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?

উঃ। আলিগড় আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্যার সৈয়দ আহমদ মুসলমান সমাজের আধুনিকীকরণের সূচনা করেন। ইসলামীয় ধর্মতত্ত্বের সঙ্গে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের সম্মিলন ঘটিয়ে মুসলমান সমাজে আধুনিক উদার মনোভাব-এর বিকাশ ঘটাতে চেয়েছিলেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান। সেই সঙ্গে মুসলমান অভিজাত ও শিক্ষিত শ্রেণিকে তিনি স্বনির্ভর করে তুলতে চেয়েছিলেন। তিনি বৃহত্তর মুসলমান সমাজের তরফে ব্রিটিশ শাসনের সুযোগ সুবিধাগুলিকে সদ্বব্যবহারের উৎসাহ তৈরির চেষ্টা করেন। তাই আলিগড় মহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজের পাঠক্রম ইউরোপীয় দর্শনের সঙ্গে ইসলামীয় ধর্মতত্ত্বের সহাবস্থান ছিল।


(খ) স্বদেশি আন্দোলন বাংলায় হিন্দু-মুসলমানদের উপর কীরকম প্রভাব ফেলেছিল?

উঃ। স্বদেশি নেতৃত্ব ও তাদের হিন্দু ধর্মীয় প্রতীক কেন্দ্রিক রাজনীতির মাধ্যমে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সামাজিক বিভাজন প্রকট হয়ে ওঠে। স্বদেশি আন্দোলনকে ঘিরে বাংলায় হিন্দু-মুসলমান সমস্যা ঘোরতর হয়। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী নেতারা বলেন হিন্দুদের তুলনায় মুসলমানদের বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এর উপর বাংলায়, গরিব কৃষকদের বিদেশি
কাপড় বয়কট করার জন্য জোর করা হয়। কাজেই বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশি আন্দোলন এক সময় হিন্দু মুসলমান বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়।


(গ) ভারতীয় মুসলমানরা খিলাফৎ আন্দোলন শুরু করেছিল কেন?
উঃ। তুরস্কের সুলতানকে খলিফা বা মুসলিম জগতের ধর্মগুরু বলে মনে করা হতো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে তুরস্কের পরাজয়ের ফলে সুলতানের ক্ষমতা কমে যায়। তুর্কি অটোম্যান সাম্রাজ্যের অনেকটাই ব্রিটিশ দখল করে। এই ঘটনায় ভারতীয় মুসলিমরা ব্রিটিশদের এই নীতির তীব্র বিরোধিতা করে এবং খিলাফৎ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। মুসলমানদের পবিত্র স্থানগুলি খলিফাকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো হয়।


(ঘ) ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ ভারতে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উঃ। ১৯৩০ এর দশক দ্বি-জাতি তত্ত্বভিত্তিক সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নতার গুরুত্বপূর্ণ সময়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লিগের সভাপতি মহম্মদ ইকবাল এবং পরে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চৌধুরি রহমত আলি পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত
প্রদেশ, বালুচিস্তান ও কাশ্মীর নিয়ে মুসলমানদের জন্য আলাদা ভূ-খণ্ড গঠন করার প্রস্তাব দেন। রহমত আলি অস্পষ্টভাবে "পাকিস্তান” এর কথা উল্লেখ করেছিলেন।


৪. নিজের ভাষায় লেখো : (১২০-১৬০টি শব্দ)
(ক) স্যার সৈয়দ আহমদ খান কীভাবে মুসলমান সমাজকে আধুনিকীকরণের পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তা বিশ্লেষণ করো।
উঃ। মুসলিম সমাজের আধুনিকীকরণের অভিযান শুরু হয় স্যার সৈয়দ আহমদ খান-এর আলিগড় আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। ইসলামীয় ধর্মতত্ত্বের সঙ্গে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের সম্মিলন ঘটিয়ে তিনি মুসলমান সমাজে আধুনিক উদার মনোভাবের বিকাশ ঘটাতে চেয়েছিলেন। স্যার সৈয়দ দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিরোধ তৈরি করতে চাননি। তিনি জাতীয়তা বিরোধী না হলেও জাতি বিষয়ে কংগ্রেসের ভাবনার সঙ্গে তাঁর মিল ছিল না। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের বিরোধী ছিলেন। তিনি মনে করতেন কংগ্রেস হিন্দুদের প্রতিনিধি সভা। তাই তিনি মুসলিমদের কংগ্রেসে যোগ দিতে নিষেধ করেন।
তিনি ব্রিটিশ শাসনে হিন্দু আধিপত্যের বদলে মুসলমান অভিজাত ও শিক্ষিত শ্রেণিকে স্বনির্ভর করে তুলতে চেয়েছিলেন।
তাঁর উদ্দেশ্য ছিল বৃহত্তর মুসলমান সমাজের তরফে ব্রিটিশ শাসনের সুযোগ-সুবিধাগুলির সদব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া। তাই আলিগড়ে মহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজের পাঠক্রমে ইউরোপীয় দর্শনের সঙ্গে ইসলামীয় ধর্মতত্বের সহাবস্থান ছিল।


(খ) কীভাবে উনিশ শতকে হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলনের জন্ম হয়েছিল ? সাম্প্রদায়িক মনোভাব তৈরিতে ঐসব আন্দোলনগুলির ভূমিকা কী ছিল?
উঃ। হিন্দু পুনরুজ্জীবনমুখী সংস্কারক আন্দোলন রাজনৈতিক চরমপন্থার জন্ম দেয়। এই উদ্যোগে হিন্দুধর্মের কল্পকাহিনি এবং প্রতীক চিহ্নের মাধ্যমে ভারতীয় জাতিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর হিন্দু সমাজের সংস্কারমুখী ধারা থেকেই জন্ম নিয়েছিল ওই পুনর্জাগরণের আন্দোলন। হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদীরা ভারত ও হিন্দুকে সমার্থক বলে প্রচার করতে থাকেন। বলা হতে থাকে যে মুসলিম শাসনের কারণে সেই সভ্যতায় অধঃপতন ঘটেছে। হিন্দু জাতীয়তাবাদ প্রধানত উঁচু জাতির সংস্কারকদের ব্রাহ্মণ্য মতানুসারী ছিল।
অধিকাংশ বিপ্লবী জাতীয়তাবাদীরা ভারতীয় সংস্কৃতি ও ভারতীয় জাতিকে হিন্দুধর্ম এবং হিন্দুদের বলে চিহ্নিত করতে।থাকেন। এই প্রসঙ্গে বলা যায় তিলকের শিবাজি উৎসব ও গণপতি উৎসব, অরবিন্দের দেশকে মাতৃবন্দনা ও জাতীয়তাবাদকে
ধর্ম হিসাবে দেখা, গীতায় হাত রেখে বিপ্লবীদের শপথ নেওয়া প্রভৃতি। এর ফলে সাম্প্রদায়িকতা নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ে।



(গ) অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের পরে কীভাবে মুসলমান নেতাদের অনেকের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল ?
উঃ ১৯২২ সালে অসহযোগ আন্দোলন তুলে নেওয়ার পর হিন্দু মুসলমান সম্পর্কের অবনতি হয়। খিলাফৎ নেতারা গান্ধির সর্বজনগ্রাহ্যতাকে ব্যবহার করে জনগণের কাছে পৌঁছতে চেষ্টা করেন। অসহযোগ তুলে নেওয়ায় খিলাফত আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে। ১৯২২-২৩ খ্রিস্টাব্দে কয়েক স্থানে দাঙ্গা ঘটে যায়, যা হিন্দু-মুসলমানের ঐক্যের মধ্যে
ভাঙন ঘটায়। পাশাপাশি বাড়তে থাকে উগ্র হিন্দু পুনরজ্জীবনবাদী আন্দোলন। হিন্দু মহাসভার মতো উগ্র হিন্দু সংগঠনগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। মদনমোহন মালব্য প্রমুখ নেতাদের গোঁড়া কার্যকলাপ কংগ্রেসে প্রাধান্য পেতে থাকে। ফলে মুসলমান সম্প্রদায় ক্রমশ কংগ্রেসের থেকে আরও দূরে সরতে থাকে।



(ঘ) ১৯৪০-১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কীভাবে ভারত-ভাগ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল? তোমার কী মনে হয় ভারত-ভাগ সত্যিই অপরিহার্য ছিল? তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও।
উঃ। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে ভারত বিভাজনের প্রক্রিয়া সকলের অন্তরালে একটু একটু করে রূপ নিতে শুরু করে। লর্ড লিনলিথগো প্রথম মুসলমানদের প্রতিশ্রুতি দেন ব্রিটেন ও ভারতের মধ্যে কোনো সমঝোতা হলে মুসলমানদের পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। লাহোর অধিবেশনে পাকিস্তান প্রস্তাব উত্থান করা হয়। যদিও অনেক কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে সিমলা সমঝোতা ব্যর্থ হয়। জিন্না পাকিস্তান প্রস্তাবে অনড় থাকেন। ১৯৪৬ এর ১৬ আগস্ট জিন্নাহ প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাক দেন। এর মূলে ছিল গভীর হতাশা। কেননা সাধারণ নির্বাচনে সিন্ধু ও পঞ্জাব প্রদেশ ছাড়া লিগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাকে দাঙ্গা শুরু হয়। দেশ জুড়ে এই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ল, লিগ অন্তবর্তী সরকারে যোগ দিল না। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত এই দুঃসময় থেকে বের হবার
জন্য কংগ্রেস ও লিগ নেতৃত্ব দেশভাগকে কার্যত মেনে নেন। ভারত বিভাগ অনিবার্য ছিল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক থাকবেই। বর্তমানে বসে অতীতের পরিস্থিতি বোঝা গেলেও অনুভব করা সম্ভব নয়। ধৈর্য ধরলে কি ফল হতো তা বলা যায় না। কিন্তু নেতারা ভবিষ্যতের কথা না ভেবেই বর্তমানের উপর দৃষ্টি দিয়ে ভারত বিভাজন মেনে নিয়েছিলেন। সেই সময়কার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। জনগণের উপর নেতাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এই অবস্থায় বিভাজন মেনে নেওয়া ছাড়া হয়ত আর কোনো উপায় ছিল না। তবে একথাও ঠিক যে কংগ্রেস, জিন্নাহ ও ব্রিটিশ সরকার কিছুটা হলেও ভারত বিভাজনের জন্য দায়ী তা অস্বীকার করার উপায় নেই।








আরো কিছু প্রশ্ন উত্তর সহ
• মহম্মদ ইকবাল কে ছিলেন?
উঃ। আধুনিক ভারতের এক বিখ্যাত কবি হলেন মহম্মদ ইকবাল। তরুণ প্রজন্মের মুসলিম ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ধর্মীয় ও দার্শনিক দিকগুলি ফুটিয়ে তোলার জন্য তিনি বহু কবিতা লেখেন।
তিনি মনে করতেন ভালো কাজ মানুষের মনে শাস্তি ও অমরত্ব প্রদান করে। আচার অনুষ্ঠানের
আধিক্য ও অন্যায়কে মেনে নেওয়া তিনি পাপ কাজের সমতুল্য বলে মনে করতেন। 'সারে জাঁহাসে
আচ্ছা, হিন্দুস্তাঁ হামারা' ইত্যাদি বিভিন্ন দেশাত্মবোধক কবিতা তিনি রচনা করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি
মুসলিম লিগের সভাপতি রূপে পৃথক মুসলমান রাষ্ট্রের পক্ষে সওয়াল করেন।
• পাকিস্তান প্রস্তাব সম্বন্ধে যা জানো লেখো।
মহম্মদ ইকবাল
উঃ। মহম্মদ আলি জিন্নাহের সভাপতিত্বে ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে লাহোরে মুসলিম লিগের অধিবেশন বসে। এই অধিবেশনের দাবি ছিল পৃথক জাতি হিসেবে আলাদা একটি স্বশাসিত মুসলিম রাষ্ট্রের। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চৌধুরি রহমত আলি ১৯৩৩-৩৪ খ্রিস্টাব্দে ‘পাকিস্তান' নামে একটি রাষ্ট্রের উল্লেখ করেন। তবে এই অধিবেশনে পৃথক রাষ্ট্রের কথা বলা হলেও ‘পাকিস্তান' নামের উল্লেখ ছিল না। এই প্রস্তাবটির খসড়া তৈরি করেছিলেন সিকন্দার হায়াৎ খান। ফজলুল হক সেই প্রস্তাব
উত্থাপন করেন। লাহোর অধিবেশনে মুসলিম লিগ কর্তৃক গৃহীত মুসলমানদের জন্য পৃথক স্বশাসিত রাষ্ট্রের প্রস্তাবই 'পাকিস্তান প্রস্তাব' নামে পরিচিত।
• র‍্যাডক্লিফ লাইন কী ছিল?
উঃ। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে মাউন্টব্যাটেনের ভারত বিভাগের পরিকল্পনা কংগ্রেস ও লিগ মেনে নেয়। এই পরিকল্পনা অনুসারে বাংলা ও পাঞ্জাবকে ভাগ করার জন্য দুটি আলাদা সীমান্ত কমিশন গঠন করা হয়। দুই কমিশনের সভাপতি ছিলেন ব্রিটিশ আইনজীবী স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে র‍্যাডক্লিফ ভারত-বিভাজনের মানচিত্র
বা র‍্যাডক্লিফ লাইন তৈরি করেন। র‍্যাডক্লিফ লাইন অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে তৈরি করা হয়। ভারতবর্ষ সম্পর্কে কোনো প্রত্যক্ষ জ্ঞান র‍্যাডক্লিফের ছিলনা। যার ফলে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বাংলা, পাঞ্জাব তথা অন্যান্য জায়গা পরিদর্শন না করেই এই মানচিত্র তিনি তৈরি করেছিলেন। আদৌ সাধারণ মানুষ এই দেশভাগ চেয়েছিল কিনা সেই মতামতের কোনো মূল্য কারোর কাছে ছিল না। ব্রিটিশ সরকারের কাছে জরুরি ছিল কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ দেশভাগে সম্মত হয়েছে। যার
ফলশ্রুতি হয়েছিল দেশব্যাপী দাঙ্গা ও উদ্বাস্তু জীবন যা স্বাধীনতাকে কালিমালিপ্ত করেছিল।