অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস নয় অধ্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর ভেবে দেখো খুঁজে দেখো - Online story

Monday 2 September 2024

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস নয় অধ্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর ভেবে দেখো খুঁজে দেখো

 অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস
 নয় অধ্যায়
 অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর

ভারতীয় সংবিধান :-গণতন্ত্রে কাঠামো ও জনগণের অধিকার
ভেবে দেখো  খুঁজে দেখো



১. বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো ।
(ক) ধর্মনিরপেক্ষ, সার্বভৌম, ধনতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক।
উঃ । ধনতান্ত্রিক।

(খ) রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজাপান। 

উঃ রাজাপাল
(খ) পৌরসভা, লোকসভা, রাজ্যসভা, বিধানসভা। উঃ। পৌরসভা।

(খ) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ, ড. সর্বপল্লী রাধাকৃয়াণ, জহরলাল নেহরু, বি. আর. আগেদকর।
উঃ। বি. আর. আম্বেদকর

(ড) ১৫ আগস্ট, ২৬ জানুয়ারি, ২০ মার্চ (স্বাধীন ভারতের নিরিখে)
উঃ। ২০ মার্চ


২. নীচের বিবৃতিগুলির কোনটি ঠিক কোনটি ভুল বেছে নাও !
(ক) সংবিধান হলো বিচার বিভাগের আইন সংকলন ।  

উ। ঠিক।
(খ) ভারতীয় সংবিধানের প্রধান রূপকার বি. আর. আম্বেদকর।
উঃ। ঠিক ।

(গ) ভারতে রাষ্ট্রপতিই প্রকৃত শাসক।
 উঃ । ভুল।

(ঘ) রাজ্যসভায় সভাপতিত্ব করেন মুখ্যমন্ত্রী।
উঃ। ভুল


(ঙ) পশ্চিমবঙ্গে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা আছে।
উঃ। ঠিক।

৩. অতি সংক্ষেপে উত্তর দাও (৩০-৪০টি শব্দ ) :
(ক) স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময় ভারতের সংবিধান রচনার তাগিদ দেখা দিয়েছিল কেন?

উঃ। সংবিধানের অর্থ কতকগুলি আইনের সমষ্টি। আইন দ্বারাই কোনো রাষ্ট্র বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। তাই ভারতের স্বাধীনতাকালে রাষ্ট্র পরিচালনার তাগিদেই ভারতের সংবিধান রচনার তাগিদ দেখা দেয়। সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক।


(খ) ভারতের সংবিধানে গণতান্ত্রিক শব্দটির তাৎপর্য কী ?
উঃ। গণতন্ত্র বলতে বোঝায় সামাজিক, আর্থিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠার কথা বোঝায়। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানে 'গণতান্ত্রিক' শব্দটিতে সার্বিক প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের কথা বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ভোটদান মারফত কেন্দ্র ও প্রাদেশিক আইনসভায় এবং বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।


(গ) ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলা হয়েছে কেন ?
উঃ। 'ধর্মনিরপেক্ষ' বলতে বোঝায় ভারত রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনো ধর্ম নেই। বিশেষ কোনো ধর্মের পক্ষে বা বিপক্ষে কথা বলা বা বিরোধিতা করা কোনোটিই ভারত রাষ্ট্র করবে না। ভারত রাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিটি নাগরিক অন্যের ধর্মবিশ্বাসকে আঘাত না করে তাঁর নিজের বিশ্বাসমতো ধর্মাচরণ করতে পারবেন।


(ঘ) মহাত্মা গান্ধি দলিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কী কী উদ্যোগ নিয়েছিলেন?
উঃ। মহাত্মা গান্ধি ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে অসহযোগ প্রস্তাবে অস্পৃশ্যতা দূরীকরণকে স্বরাজ অর্জনের জরুরি শর্ত বলে মনে করেন। অসহযোগ আন্দোলন বন্ধ হবার পর গান্ধিজির এই আন্দোলনের প্রতি কারোরই বিশেষ আগ্রহ ছিল না। গান্ধিজি
প্রধানত হিন্দু মন্দিরে হরিজনদের প্রবেশ করতে পারার অধিকার নিয়ে আন্দোলন করেন। ফলে ধর্মীয় অধিকার পেলেও আর্থিক, রাজনৈতিক অধিকার থেকে হরিজনরা বঞ্চিত ছিলেন।


(ঙ) ভারতের সংবিধানে নাগরিকদের কী কী মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে?
উঃ। ভারতের সংবিধানে নাগরিকদের ছয়টি মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এইসব অধিকারগুলি হলো : সাম্যের অধিকার, স্বাধীনতার অধিকার, শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার, শিক্ষা ও সংস্কৃতির অধিকার, সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কোনো আইন ভারতের নাগরিকদের মৌলিক
অধিকারগুলি ক্ষুণ্ণ করতে পারে না।


৪. নিজের ভাষায় লেখো (১২০-১৬০টি শব্দ) :
(ক) ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাটি ব্যাখ্যা করো। প্রস্তাবনায় বর্ণিত সাধারণতন্ত্র শব্দটি কীভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে বলে তোমার মনে হয় ?

উঃ। ভারতীয় সংবিধানের একটি প্রস্তাবনা আছে। এই প্রস্তাবনায় সংবিধানের আদর্শ ও উদ্দেশ্য-ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তাবনাকে 'সংবিধানের বিবেক' বা সংবিধানের আত্মা বলা হয়। সংবিধানের মূল প্রস্তাবনায় ভারতকে একটি সার্বভৌম,
গণতান্ত্রিক, প্রজাতন্ত্র' বলা হয়েছে। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে সংবিধানের ৪২তম সংশোধনী অনুযায়ী 'সমাজতান্ত্রিক' ও 'ধর্মনিরপেক্ষ' শব্দ দুটি যোগ করে ভারতকে সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র' বলে উল্লেখ হয়েছে। এই শব্দগুলির প্রত্যেকটির গভীর তাৎপর্য আছে।
সার্বভৌম' বলতে বোঝায় ভারতবর্ষ অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে চরম ও চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী। সমাজতন্ত্র' বলতে উৎপাদনের উপকরণগুলির ওপর রাষ্ট্র তথা সমাজের মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং উৎপাদিত সম্পদের সমান ভাগ বোঝায়। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানে 'সমাজতান্ত্রিক' শব্দটিতে মিশ্র অর্থনীতি অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ব্যক্তি মালিকানা নির্ভর অর্থনীতির মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক ধাঁচের সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।
'ধর্মনিরপেক্ষ' বলতে রাষ্ট্র কোনো বিশেষ ধর্মের পক্ষে বা কি বলবে না। প্রতিটি নাগরিক তার বিশ্বাস
অনুসারে মা করতে পারবে।
ব্যাপক অর্থে 'গণতন্ত্র' বলতে সামাজিক-অর্থনৈতিক রাজনৈতিক প্রভৃতি ক্ষেত্রের সমতা প্রতিষ্ঠা বোঝায়। কিন্তু ভারত সংবিধানে গণতন্ত্র বলতে মূলত প্রাপ্তনাঙ্গের ভোটাধিকার বোঝানো হয়েছে। যেখানে ভোটের দ্বারা কেন্দ্র ও প্রদেশগুলির আইন সভায় প্রতিনিধি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।
'সাধারণতন্ত্র' বলতে বোঝার বংশানুক্রমিকভাবে কোনো রাজা বা রানি। শীর্ষস্থানে থাকা রাষ্ট্রপতি জনগণের দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। ভারতীয় শাসনতন্ত্রের উৎস ও রক্ষক হলেন স্যাং ভারতীয় জনগণ। তাই ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে 'সাধারণতন্ত্র' শব্দটি উপযুক্তভাবে এবং সর্বরভাবে ব্যবহার হয়েছে।


(গ) ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাজকর্ম বিষয়ে আলোচনা করো। যথাক্রমে রাষ্ট্র ও রাজ্যের পরিচালনায় এঁদের ভূমিকা কি?

প্রধানমন্ত্রী কাজ। ভারতীয় সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী হলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনিই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান ব্যক্তি। রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক প্রगानঠ। কন্তু প্রধানমন্ত্রীই প্রকৃত পরিচালক। লোকসভায় নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রী প্রধানমন্ত্রীরূপে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্বাচিত হন। কোনো দল কিংবা জোট নিরঙ্কুশ
সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে রাষ্ট্রপতি বিবেচনার দ্বারা লোকসভার সদস্যদের মধ্যে কাউকে প্রধানমন্ত্রীরূপে নিয়োগ করতে।পারেন। তবে কিছুদিনের মধ্যেই তাকে লোকসভার অধিকাংশ সদস্যের সমর্থন অর্জন করতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর হাতে একাধিক দপ্তর থাকতে পারে। রাষ্ট্রপতি তাঁর পরামর্শের অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করেন। প্রধানমন্ত্রী হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম।

মুখ্যমন্ত্রীর কাজ। ভারতে কেন্দ্রের ন্যায় রাজ্যেও সংসদীয় শাসনব্যবস্থা চালু আছে। সেই সরকারের প্রধান হলেনমুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালকে সাহায্য ও পরামর্শ দেবার জন্য রাজ্যে একটি মন্ত্রীসভা থাকবে। মন্ত্রীসভার প্রধান হলেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনের পর সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতা বা নেত্রীকে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী রূপে নিযুক্ত করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শমতো রাজপাল অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীসভা তাদের কাজের জন্য বিধানসভার নিকট দায়বর থাকেন।


(গ) পশ্চিমবঙ্গে আগালিক স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে কীভাবে গণতন্ত্রের ধারণা বিস্তৃত হয় ? তোমার স্থানীয় অভিজ্ঞতার নিরিখে আলোচনা করো।
উঃ । আমি হুগলি জেলার বাসিন্দা। আমার জেলায় স্বায়তশাসন বন্দোবস্ত খুব চমৎকারভাবে কার্যকর হয়েছে। একে আঞ্চলিক স্বায়তশাসন ব্যবস্থা বলে। এই স্বায়ত্তশাসব্যবস্থার তিনটি স্তর আছে। সবচেয়ে নীচে গ্রাম পণ্যায়েত, তার ওপর পঞ্চায়েত সমিতি এবং এর ওপর জেলা পরিষদ।
গ্রাম পঞ্চায়েত। এটি প্যায়েত ব্যবস্থার সর্বনিম্ন স্তর। এই স্তরে পণ্যায়েত আইন অনুযায়ী কতকগুলি গ্রাম বা গ্রামের সমষ্টি নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকা গঠিত হয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীকে নিজ পঞ্চায়েত অধীনস্থ ভোটার হতে হবে।
কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারী কর্মী হওয়া ব্যক্তি প্রার্থী হবার যোগ্য নন। গ্রাম পণায়েতের সদস্যরা ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে থেকে একজনকে প্রধান অন্যজনকে উপপ্রধান নির্বাচিত করেন। বর্তমানে পদটির ১/৩ মহিলা সদস্য ও জনসংখ্যার অনুপাতে তফশিলি জাতি ও উপজাতির জন্য সংরক্ষিত। পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েত ব্যবস্থার দ্বিতীয় স্তর 
পঞ্চায়েত সমিতি। কয়েকটি গ্রাম নিয়ে একটি ব্লক তৈরি হয়।
রকের নাম অনুযায়ী পঞ্চায়েত সমিতির নামকরণ হয়। ব্লক উন্নয়নের দায়িত্ব পঞ্চায়েত সমিতির হাতে থাকে। ব্লক উন্নয়নের দায়িত্ব পঞ্চায়েতের মতোই প্রার্থীর যোগ্যতা হবে। এর কার্যকাল ৫ বছর। এই সমিতির সদস্যগণ নিজেদের মধ্যে থেকে
সভাপতি ও একজন সহসভাপতি নির্বাচিত করেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের মতোই ১/৩ মহিলা ও জনসংখ্যার অনুপাতে তফশিলি জাতি ও উপজাতির জন্য সংরক্ষিত।