অষ্টম শ্রেণি শারীর শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর - Online story

Saturday 14 September 2024

অষ্টম শ্রেণি শারীর শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর

 




                
অষ্টম শ্রেণীর
                 
স্বাস্থ্যশিক্ষা
                
দ্বিতীয় অধ্যায়

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
Section - 2 : Group Work
১. শূন্যস্থান পূরণ করো :
(a) Who -এর পুরো নাম World .....Organization.
উত্তর- Health
  (b) দুটি জলবাহিত সংক্রামক ব্যাধি হল........ এবং ..........।
উত্তর- ডায়ারিয়া, কলেরা।

(c) নির্মল গ্রাম পুরস্কার চালু হয়.- সালে।

উত্তর- ২০০৫।

(d) জড়বুদ্ধি..........খনিজের অভাবে দেখা দিতে পারে।
উত্তর- আয়োডিন
(e) অপরিচ্ছন্নতার মিলিত ফল অস্বাস্থ্য ও ...........।
উত্তর- রোগপ্রবণতা

(f) প্রতিটি শৌচাগারে. ..........পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও স্বাভাবিক।
উত্তর- আলো, বাতাসের



২. দু-এক কথায় উত্তর দাও :

(a) স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা দাও।
উঃ। দেহকে নীরোগ ও সুস্থ রাখা এবং শরীরের দৈহিক বিকাশ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের যত্ন নেওয়াকে
স্বাস্থ্য বলে।

(b) স্বাস্থ্যশিক্ষা কাকে বলে?
উঃ। এটি একটি বিজ্ঞানসম্মত বিষয় যার দ্বারা শরীরকে সুস্থ, সুন্দর ও নীরোগ রাখা যায়।

(c) Who -এর পুরো নাম কী?
 উঃ । World Health Organization.

(d) স্বাস্থ্যবিধান বলতে কী বোঝো? সংক্রামক ব্যাধি বলতে কী বোঝো?
উঃ স্বাস্থ্যরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধের জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাকেই এককথায় স্বাস্থ্যবিধান বলা হয়। দেশের আপামর জনসাধারণ তথা সমগ্র সমাজকে সুস্থ সবল করে গড়ে তুলতে সঠিক উন্নতির প্রথম ও প্রধান পদক্ষেপ রূপে স্বাস্থ্যবিধানের
গুরুত্ব অপরিসীম।
যে সকল ব্যাধি জীবাণুর মাধ্যমে এক রোগীর থেকে অন্য দেহে অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তাকে সংক্রামক ব্যাধি বলে।


(e) স্বাস্থ্যবিধান না মানলে কোন্ কোন্ রোগ দেখা যায় ?
উঃ। স্বাস্থ্যবিধান না মানলে চর্মরোগ, ডায়রিয়া, আমাশা, কলেরা, হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, কুনি, আলসার, টিটেনাস প্রভৃতি রোগ দেখা যায়।
"
(f) আয়োডিনের অভাবে কী কী রোগ হয়?
উঃ। জড়বুদ্ধি, বামনত্ব, কানে শোনার দোষ, চোখে ট্যারাভাব, গলগন্ড, মস্তিষ্কের বিকাশ না হওয়া প্রভৃতি রোগ হতে পারে।

(g) কোনো দেশের মানব উন্নয়ন সূচক কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?
উঃ। (i) শিশুমৃত্যুর হার, (ii) সাক্ষরতার হার, (iii) কতজন শিশু স্কুলে যায়, (iv) জনসাধারণের গড় আয়ু, (v) মোট ডেভেলপমেন্ট প্রোডাক্ট ইত্যাদির উপর দেশের মানব উন্নয়ন সূচক নির্ভর করে।।

(J)  নির্মল গ্রাম অভিযানের গুরুত্ব লেখো। স্বাস্থ্যবিধানের উদ্দেশ্যগুলি বর্ণনা করো।
উঃ নির্মল গ্রাম অভিযানের মাধ্যমে নির্মল বাংলা গড়ে তোলাই প্রধান লক্ষ্য।
উঃ। নির্মল গ্রাম গঠনের প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হলো-
(i) স্বাস্থ্যবিধান অভিযানকে গ্রামীণ ভারতের সামাজিক উন্নয়নের
আলোচনার প্রথম সারিতে নিয়ে আসা।
(ii) গ্রামে খোলা মাঠে মলত্যাগ বন্ধ করে সুস্থ নির্মল পরিবেশ
গড়ে তোলা, যাতে এই গ্রামগুলোকে আদর্শ করে অন্যান্য গ্রামগুলোকে এই অভিযানে শামিল করানো যায়।
(iii) প্রকাশ্যে মলত্যাগের অভ্যাস দূর করে ও নির্মল পরিবেশ গড়ে তোলবার জন্য পঞ্চায়েতকে উৎসাহ দেওয়া।
(iv) সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান অভিযানের রূপায়ণের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দেওয়া ও তাতে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে সামাজিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা।
স্বাস্থ্যবিধানের উদ্দেশ্যগুলি হল – স্বাস্থ্যবিধান অভিযানকে গ্রামীণ ভারতের সামাজিক উন্নয়নের আলোচনার প্রথম সারিতে আনা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য 'WHO'-এর মতে স্বাস্থ্যবিধান হলো প্রাকৃতিক পরিবেশের যেসব কারণগুলি স্বাস্থ্য তথা দৈহিক বিকাশ ও জীবনধারণের পক্ষে ক্ষতিকর, সেই কারণগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা। এটি একটি জীবনচর্যা। সার্বিক স্বাস্থ্যবিধানের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতিটি পরিবারকে নির্মল, দূষণহীন, রোগমুক্ত, জীবাণুমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত সবুজ সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলা।
যাতে মানুষ রোগ জীবাণুর হাত থেকে মুক্ত হাতে পারে এবং আপামর জনসাধারণের জীবনযাত্রার মনোন্নয়ন ঘটাতে পারে।

৩. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো ও
(a) সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে (স্বাস্থ্য, জীব, পদার্থ, উদ্ভিদ) বিজ্ঞান।
 উঃ স্বাস্থ্যবিজ্ঞান।

(b) প্রথমবার নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার দেওয়া হয় – (২০০৩ /২০০৪/২০০৫ / ২০০৬) সালে।
উঃ ২০০৫ সালে।

(c) আয়োডিনের অভাবে আমাদের (গলগণ্ড/বামনত্ব / দীর্ঘকার/ স্থূলাকার) রোগ হয়।
 উঃ। গলগণ্ড।

(d) তামাকে উপস্থিত সবচেয়ে ক্ষতিকারক উপক্ষার (আয়োডিন/নিকোটিন/ট্যানিন/ইথাইল)।
উঃ। নিকোটিন।


৪. রচনাভিত্তিক প্রশ্ন :
(a) নির্মল গ্রামের বর্ণনা দাও।
উঃ। (i) গ্রামের সন্নিকটে জন্মাল, বাঁশঝাড়, নদীর ধার, পুকুরপাড়ে অথবা গ্রামের খোলা জায়গায় মলত্যাগের কোনো চিহ্ন থাকবে না।
(ii) গ্রামের সমস্ত জলের উৎসে যথার্থ সিমেন্টের চাতাল ও জল নিকাশের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
(iii) গ্রাম পঞ্চায়েত সভায় খোলা জায়গায় মলত্যাগ নিষিদ্ধ বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ঘোষণা করতে হবে এবং নিয়নভঙ্গাকারীদের শাস্তির প্রতিবিধানও করতে হবে।
(iv) গ্রামের সংগৃহীত কঠিন বর্জ্য পদার্থের স্বাস্থ্যসম্মত নিষ্কাশনের জন্য প্যায়েতকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পঞ্চায়েত এলাকায় কঠিন বা তরল বর্জ্য জমা করা যাবে না।
(v) পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি বাড়ি, বিদ্যালয় ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রী-শিক্ষক-শিক্ষিকারা শৌচাগার যথাযথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন যেমন রাখবেন, তেমনি ১০০ শতাংশ সুনিশ্চিত করবেন শৌচাগারের যথাযথ ব্যবহার।
(vi) প্রতিটি শৌচাগারে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাভাবিক আলো-বাতাসের সংস্থান রাখতে হবে।
(vii) সমস্ত খাটাল ও গোয়াল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
(viii) খাটাল, শুকরের খামার, মুরগির পোলট্রি, প্রভৃতি অতিঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে রাখতে হবে।
(ix) ভাগাড় থাকতে হবে জনবসতি থেকে বিচ্ছিন্ন জায়গায়। সেখানে নিয়মিত নজরদারী দরকার যাতে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে যেতে না পারে।
(x) গ্রামের ৩০-৪০ শতাংশ পরিবারের মানুষকে শৌচাগার অভিমুখী করবার জন্য চেতনা কর্মসূচি নিতে হবে।
(xi) গ্রামের নলকূপ ও নদীর জল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
(xii) ব্যবহৃত জলের পুনর্ব্যবহার ও সবজি বাগানে ওই জলের ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে।
(xiii) গ্রামের পরিবেশ নির্মল করে গড়ে তুলবার জন্য বৃক্ষরোপণ ও সবুজায়নের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। জনস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান অভিযানকে একটি সামাজিক আন্দোলনের রূপ দিতে হবে। এই সমস্ত পরিবেশ বজায় থাকলে একটি গ্রাম নির্মল গ্রাম হয়ে উঠবে।
(b) সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণের উপায় বর্ণনা করো।
উঃ। পরিবেশের যেখানে সেখানে আবর্জনা, বিভিন্ন প্রাণীর মলমূত্র ইত্যাদি জমা থাকলে মাছির বংশবৃদ্ধি ঘটে। মাছি প্রায় সবরকম সংক্রামক রোগ ছড়ায়। পরিবেশের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে থাকলে ওই জলে নানা জাতের মশা জন্মায় এবং ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া ইত্যাদি রোগের বিস্তার ঘটে। দূষিত পানীয় জলই হলো পেটের অসুখের প্রধান কারণ।
একইভাবে খাদ্যবস্তু আঢাকা থাকলে তা থেকে মাছি বসে রোগ জীবাণু ছড়ায়। এছাড়া পরিবেশে মরা জীবজন্তুর মৃতদেহ এবং জীবজন্তুর মল থেকে অ্যানথ্রাক্স, টিটেনাস ইত্যাদি রোগ ছড়ায়। রোগজীবাণুর পরিবেশে প্রবেশ ও দেহের ওপর আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সংক্রামক রোগ বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এর জন্য চাই (i) নিরাপদ পানীয় জলের ব্যবস্থা। (ii) মানুষের মলমূত্রের সঠিক নিষ্কাশণ, (iii) রোগবাহক পতঙ্গ যেমন মশা, মাছি ইত্যাদির নিয়ন্ত্রণ, (iv) আবর্জনা ও বর্জ্য জলের স্বাস্থ্যসম্মত সদ্‌গতি, (v) খাদ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা, (vi) স্বাস্থ্যকর গৃহপরিবেশ, (vii) গ্রাম পরিবেশের স্বাস্থ্যবিধান, (viii) ব্যাক্তিগত পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা।


(c) স্বাস্থ্যশিক্ষার সুফলগুলি আলোচনা করো।
উঃ। নিরাপদ পানীয় জল, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধানের সুবিধা, নির্মল পরিবেশ ও উপযুক্ত স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিটি শিশুর এক মৌলিক অধিকার। এর সুফল হিসেবে শিক্ষার্থীরা সুস্থ ও নীরোগে থাকে, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি কমে এবং
লেখাপড়ার দক্ষতা বাড়ে। এই ব্যবস্থার সুফলগুলি
হল :-
(i) উন্নত শিক্ষার পরিবেশ গড়ে ওঠে।
(ii) শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের উপস্থিতির হার বাড়ে,
(iii) বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের অধিক নামাঙ্কন,
(iv) পড়ুয়াদের অধিক দক্ষতা ও সুস্থতা,
(v) বিদ্যালয়ে নির্মল পরিবেশ গড়ে ওঠে,
 (vi) শিশুদের অধিকার রক্ষা পায়।


(৫) মিড ডে মিল ও পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে তুমি একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।
(b) বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক একটি প্রকল্প তৈরি করে তা কার্যকরী করো।
(c) হাতধোয়া বিষয়ে ছবির মাধ্যমে একটি সচেতনতা পোস্টার তৈরি করো।
(d) বর্জ্য পৃথকীকরণ ব্যবস্থাবিষয়ক একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।



সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর ঃ
১. স্বাস্থ্যবিধানের ধারণাটি কী ?
উঃ। স্বাস্থ্যবিজ্ঞান হলো এমন একটি বিজ্ঞানসম্মত বিষয় যা জানলে শরীরকে সুস্থ, সুন্দর ও নীরোগ রাখা যায়। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধান পালনের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলির সঠিক যত্ন নেওয়া সম্ভব।


২. স্বাস্থ্যবিধান কাকে বলে?
উঃ। স্বাস্থ্যরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধের জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাকেই এককথায় স্বাস্থ্যবিধান
বলা হয়। দেশের আপামর জনসাধারণ তথা সমগ্র সমাজকে সুস্থ ও সবল করে গড়ে তুলতে
সার্বিক উন্নতির প্রথম ও প্রধান পদক্ষেপ রূপে স্বাস্থ্যবিধানের গুরুত্ব অপরিসীম।


৩. মানব উন্নয়ন সূচক (Human Development Index) কাকে বলা হয় ?
উঃ। কোনো দেশের উন্নয়নের হার নির্ভর করে সেই দেশের জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান কত উন্নত তার ওপরে। একেই এককথায় মানব উন্নয়ন সূচক বলা হয়।


৪. স্বাস্থ্যবিধানের অভাবজনিত রোগগুলি কী কী ?
উঃ। স্বাস্থ্যবিধানের অভাবজনিত রোগগুলি হলো – চর্মরোগ, ডায়ারিয়া, কলেরা, রক্ত আমাশয়, হেপাটাইটিস, পোলিও, টাইফয়েড, কৃমি, আলসার, টিটেনাস, ম্যালরিয়া, ফাইলেরিয়া, এনকেফেলাইটিস, ডেঙ্গু, কালাজ্বর, চিকুনগুনিয়া, বার্ড ফু, করোনা ভাইরাস – কোভিড-১৯ প্রভৃতি।


৫. নির্মল গ্রাম পুরস্কার কবে দেওয়া শুরু হয় ?
উঃ। সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান অভিযানের লক্ষ্যে পৌঁছোতে উৎসাহ দিতে ভারত সরকার ২০০৩ সালে নির্মল গ্রাম পুরস্কার চালু করেন। এটি প্রথম দেওয়া হয় ২০০৫ সালে।


৬. নির্মল গ্রাম পুরস্কার কেন দেওয়া হয়?
উঃ। সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান অভিযানে যে সব পশ্চায়েত ও অন্যান্য সংস্থা গ্রামীণ এলাকায় উল্লেখযোগ্য কাজ করছে তাদের প্রচেষ্টা ও অবদানকে স্বীকৃতি দিতে নির্মল গ্রাম পুরস্কার দেওয়া হয়।


৭. আয়োডিন কী ?
উঃ। আয়োডিন হলো একটি প্রাকৃতিক অত্যাবশ্যকীয় মৌলিক উপাদান যা মানুষের পুষ্টির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া আয়োডিনের জোগানের উপর নির্ভর করে।


৮. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে দৈনিক আয়োডিনের চাহিদা কীরূপ?
উঃ । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে আমাদের দৈনিক আয়োডিনের চাহিদা হলো ০ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত ১০ মাইক্রো গ্রাম, ৭ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ১১০ মাইক্রো গ্রাম, ১২ বছর থেকে প্রাপ্ত বয়স্কদের ১২০ মাইক্রোগ্রাম এবং গর্ভবতী ও স্তন্যদায়িনী মহিলাদের জন্য ২০০ মাইক্রো গ্রাম।

৯. আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ কীভাবে দূর করা যায়?
উঃ। আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় হলো প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ আয়োডিন গ্রহণ। মনে রাখতে হবে যে মানবশরীর সমস্ত আয়োডিন সংগ্রহ করে রাখতে পারে না। তাই প্রতিদিন আরোডাইজড লবণের ব্যবহার সহ আয়োডিনের অভাবজনিত ক্ষতি দূর করতে হবে।


১০. আয়োডিন লবন কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়?,
উঃ। আয়োডিন লবণ শুকনো ঢাকা দেওয়া পাত্রে সর্বদা রাখতে হবে যাতে জল হাওয়া না ঢোকে। ভিজে হাতে লবণ তোলা যাবে না। আয়োডিন লবণকে সবসময় আগুনের তাপ থেকে দূরে রাখতে হবে কারণ গরমে আয়োডিন উড়ে যায়।


১১. নির্মল বিদ্যালয়ে হাতধোয়ার ব্যবস্থা কীরূপ থাকা উচিত।
উঃ। নির্মল বিদ্যালয়ে খাওয়ার আগে ও পরে এবং শৌচাগার ব্যবহারে হাত ধোয়ার জন্য।
মাধানের ব্যবস্থা সহ জলের সংস্থান বেসিনের ব্যবস্থা করতে হাতে গ্লাভস ও মুখে সর্বদা মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

১৩. জামাক কী? এতে কী থাকে?

উঃ তামাক হলো একপ্রকার মাদক দ্রব্য। এর মধ্যে থাকা বিষাক্ত উপক্ষারটি হলো নিকোটিন। তামাকের ধোঁয়ায় কার্বন মনোক্সাইড, কারবাজাল, ভিনাইল ক্লোরাইড প্রভৃতি রাসায়নিক পদার্থ থাকে।



১৪. ধূমপানের ফলে পৃথিবীতে কী হারে মৃত্যু ঘটে।
উঃ। পৃথিবীতে একশো কোটিরও বেশি মানুষ ধূমপানে আসক্ত এবং প্রায় প্রতি ২০ সেকেন্ডে একজনের তামাকের বিষক্রিয়াজনিত কারণে মৃত্যু ঘটে।


২. কোন বয়সের মানুষের কেমন রক্তাল্পতা দেখা যায়?
উঃ। ৬-৩৫ মাসের শিশুদের মধ্যে ৭৮.৯ শতাংশ শিশু রক্তাল্পতায় ভোগে। ১৫-৪৯ বছরের বিবাহিতা মহিলাদের মধ্যে ৫৬. ২ শতাংশ মহিলা রক্তাল্পতায় ভোগেন। ১৫-৪৯ বছরের বিবাহিত পুরুষদের মধ্যে ২৪.৩ শতাংশ পুরুষ রক্তাল্পতায় ভোগেন।


রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর :
১. স্বাস্থ্যবিধান ব্যবস্থার বিভিন্ন উপাদানগুলি কী ?
উ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) র হিসাব অনুসারে গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলোতে চিকিৎসা-বাড়ো ৬০ শতাংশই খরচ হয় স্বাস্থাবিধানের অভাবজনিত জলবাহিত রোগের চিকিৎসায় ।প্রতি বছর এইসব রোগের জন্য ২২ কোটিরও বেশি শ্রমদিবস নষ্ট হয়। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচির একশো শতাংশ বাস্তবায়ন সুনিশ্চিত করতে হবে।
(i) স্বাস্থ্যবিধান ব্যবস্থার বিভিন্ন উপাদানগুলো হলো মানুষের মলমূত্রের স্বাস্থ্যসম্মত নিকাশি ব্যবস্থা অর্থাৎ স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয়ের ব্যবহার সুনিশ্চিত করা।
 (ii) আবর্জনা ও গবাদিপশুর মলমূত্রের স্বাস্থ্যস
নিকাশির ব্যবস্থা করা। বাড়ির আবর্জনার প্রকৃতি অনুসারে দুটি পৃথক ভাটি তৈরি করা।
(iii) বর্ষা ও উদ্‌বৃত্ত নিরাপদ নিকাশি ব্যবস্থা।
 (iv) নিরাপদ পানীয় জলের নিরাপদ উৎস, নিরাপদ পদ্ধতিতে সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা
(v) খাদ্য সুরক্ষা তথা গৃহের স্বাস্থ্যবিধান।
 (vi) ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা।
(vii) গ্রামের দূষণমুক্তি, পরিবেশের

২. আয়োডিনের অভাব কেন হয়?

উর। আয়োডিনের ঘাটতি একটি প্রাকৃতিক চক্রের মতো চলে। সমুদ্রের আয়োডিন সূর্যের আলোয় জারিত হয়ে উদ্দাবয়ী  আয়োডিনে পরিণত হয়। আবহাওয়ার এই আয়োডিন বৃষ্টি বা তুষারপাতের ফলে মাটিতে ফিরে আসে এবং নদী বা হ্রদের মাধ্যমে আবার সমুদ্রের জলে ফিরে যায়। কিন্তু এটি যে পরিমাণে নষ্ট হয়, তার চেয়ে ফিরে আসে কম। এটি সংশোধনের কোনো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নেই। তাই জমিতে আয়োডিনের ঘাটতি থেকে যায় এবং জমির ফসলেও আয়োডিনের ঘাটতি থাকে।
সুতরাং প্রাকৃতিক উৎস থেকে আমরা যে পরিমান আয়োডিন পাই তা আমাদের দৈহিক চাহিদার তুলনায় কম হয়ে থাকে।



৩. শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে আয়োডিনের অভাবে কী কী রোগ হতে পারে ?
উঃ। আয়োডিনের অভাবে জীবনের বিভিন্ন সময়ে নানারকম শারীরিক রোগও হতে পারে। এগুলিকে বলা হয় আয়োডিনের অভাবজনিত উপসর্গ।
শিশুদের ক্ষেত্রে এর খারাপ পরিণাম সবচেয়ে বেশি। এর অভাবে শিশু জড়বুদ্ধি সম্পন্ন হয়। পড়াশুনো অন্যান্য ক্ষেত্রে খারাপ প্রদর্শন করে। আয়োডিনের অভাবে শিশুরা বামনও হতে পারে। শিশুর কথা বলা ও কানে শোনার অসুবিধা অথবা কথা বলতে না পারা, কানে শুনতে না পেতে পারে। এছাড়া, গলগণ্ড, চোখে ট্যারাভাব হতে পারে এবং শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশ নাও হতে পারে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে আয়োডিনের অভাবে কর্মক্ষমতা ও ইচ্ছার অভাব, স্থূলতা, গলগণ্ড, হঠাৎ গর্ভপাত, গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।



৪. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচি কী ?
উঃ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর হিসাব অনুসারে গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলিতে চিকিৎসা ব্যায়ের ৬০ শতাংশই খরচ হয় স্বাস্থ্যবিধানের অভাবজনিত জলবাহিত রোগের চিকিৎসায়। এইসব রোগের জন্য প্রতি বছর ২২ কোটিরও বেশি শ্রমদিবস নষ্ট হয়। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য কর্ম সূচির
১০০ শতাংশ বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। স্বাস্থ্যবিধানের মূল উদ্দেশ্য সংক্রামক রোগের যে পদ্ধতি বা শৃঙ্খল তাকে ভাঙতে হবে।


৫. বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যবিধান করে নির্মল বিদ্যালয় গড়ে তুলতে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার?
উঃ। (i) বিদ্যালয়ের পানীয় জলের উৎস সর্বদা নিরাপদ ও সুরক্ষিত হতে হবে।
 (ii) বালক ও বালিকাদের জন্য পৃথক শৌচাগার পরিচ্ছন্ন ও চালু থাকতে হবে এবং সেখানে জলের
বন্দোবস্ত থাকতে হবে।
 (iii) প্রতিটি শৌচাগারের ভিতরে বা নিকটে সাবান রাখতে হবে।
(iv) খাওয়ার আগে ও পরে এবং শৌচাগার ব্যবহারের আগে ও পরে, হাত অপরিষ্কার হলে হাত ধোয়ার জন্য সাবানের ব্যবস্থাসহ জলের সংস্থান, নলবাহিত জলের ব্যবস্থা, বেসিনের ব্যবস্থা প্রভৃতির বন্দোবস্ত সুনিশ্চিত করতে হবে।
 (v) বিদ্যালয়ের ভিতরে কঠিন বর্জ্য পৃথকীকরণ দ্বারা পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য পৃথক জায়গায় ফেলা এবং পচনশীল বর্জ্য থেকে সার তৈরির ব্যবস্থা রাখতে হবে।

 (vi) বিদ্যালয়ের পরিবেশ যেমন সবুজ হবে, তেমনি বিদ্যালয়ের পরিসরে ফুলের বাগান, সবজির বাগান, ফলের গাছ থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা গ্রামবাসীদের সাহায্য নিয়ে জৈব সার দিয়ে ওই বাগানের পরিচর্যাও করবে। বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত নোংরা জল বাগানে ব্যবহার করে বাগান ও গাছগাছালির পরিচর্যায় পড়ুয়াদের শামিল করতে হবে।

(vii) বিদ্যালয়ের রান্নাঘরে ধোঁয়াহীন উনুন, শৌচাগারে পাম্প, বারান্দায় পাম্প, নলবাহিত জল প্রভৃতির অত্যাধুনিক সুবিধা থাকতে হবে।
(viii) বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিলের থালা-বাসন, চাল, ডাল,আনাজ, সবজি ধোয়ার জন্য সুরক্ষিত উৎসের জলের ব্যবস্থা করা। পড়ুয়ারা যেখানে মিড-ডে মিল খায় তার সার্বিক পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
 (ix) রান্নার কাজে যুক্ত মহিলাদের রান্নার আগে ও পরিবেশনের আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া সুনিশ্চিত করা।
(x) প্রতিদিন বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ, খাবার খাওয়ার ঘর, শৌচাগার ও পরিসর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার
জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
 (xi) বিদ্যালয়ের প্রার্থনাসভা ও শ্রেণিপাঠের সময়ের মধ্যেও আবশ্যিক