বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর কবিতা পঞ্চম শ্রেণি bangla হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
পঞ্চম শ্রেণির বাংলা
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হাতে-কলমে প্রশ্নের উত্তর
১. নিচে প্রশ্নগুলি উত্তর নিজের ভাষায় লেখ।
১.১ কোন কোন বাংলা মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয় ?
উত্তর - আষাঢ় শ্রাবণ মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয়
১.২ মেঘলা দিনে আকাশ ও তোমার চারপাশের প্রকৃতি কেমন রূপ ধারণ করে?
উত্তর
: মেঘলা দিনে আকাশ গুমোট হয়ে থাকে। পরে এই মেঘ জমাট বেঁধে প্রকৃতি বর্ষার
অপরূপ সাজে সেজে বর্ষার জলে চারদিকে সবুজের সমারোহ। এই সময়ে সারাদিন কখনও
ঝিরঝির করে, কখনও মুষলধারায় বৃষ্টি হয়। এই সময় নদনদী, খাল, পুকুর জলে
ভরে যায়।
উত্তর : ইংরেজি ২০২১, ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের দিন সকাল বেলা আমাদের বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ উৎসব অনুষ্ঠিত
১.৩ ষ্টির সলো জড়িয়ে আছে— তোমার জীবনে মনে রাখার মতো এমন কোনো ঘটনার কথা লেখো।
হল।
এদিন সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। চারদিক জলে জল। রাস্তায় জল জমেছে,
বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বাড়ছে। আমাদের বাড়ি থেকে বিদ্যালয় হাঁটা পথ।
সকাল নটার সময় বিদ্যালয়ের পোশাক পরে জুতো জোড়া হাতে নিয়ে আমি আর আমার
বন্ধু রাস্তায় নামলাম। মাথায় ছাতা, হাতে জুতো নিয়ে জলের মধ্যে হেঁটে
বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলাম। বৃষ্টি তখন এক কমেছে। আমাদের মতো আরও অনেকে
এসেছে। কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন
শিক্ষক মহাশয় এসেছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক মহাশয় চমৎকার ভাষা ছিলেন।
তিনি বললেন, ভূমিখণ্ডের তুলনায় ৩ শতাংশ উদ্ভিদ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ২৩ শতাংশেরও কম উদ্ভিদ রয়েছে, ফলে এখানে বৃষ্টিপাতের
পরিমাণ খুবই কম। অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয়ের মাঠের চারদিকে এবং কিছু টবে
বৃক্ষরোপণ করা হল। বর্ষার দিনে হাঁটু জল পার হয়ে বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ উৎসবে যোগদান করে আনন্দ লাভ করা আমার জীবনে মনে রাখার মতো একটি ঘটনা।
১.৪ পুকুরে. টিনের চালে, গাছের পাতায় বৃষ্টি পড়ার শব্দগুলো কেমন হয় লেখো।
হুর : পুকুরে-টুপটুপ,
টিনের চালে-টপটপ,
গাছের পাতায়-টিপটিপ।
২.'ক' স্তম্ভের সঙ্গে 'খ' স্তম্ভ মেলাও
উত্তর :
ঝাপসা > অস্পষ্ট
ছেলেবেলা > শৈশব
বিছানা > শয্যা
দুরন্ত > দামাল
বান > বন্যা
৩. বেমানান শব্দের তলায় দাগ দাও :
৩.১ সূর্য, মেঘ, বৃষ্টি, আকাশ, বাড়ি।
উত্তর ঃ বাড়ি
৩.২ ডোবে ডোৰে, লোভে লোডে, পলে পলে, দেশে দেশে, টাপুর টুপুর।
উত্তর : টাপুর টুপুর।
৩.৩ গাছপালা, মেঘ, হাওয়া, বাদল, মানিক।
উত্তর : মানিক।
৩.৪ মা, খোকা, দৌরাত্ম্য, হাসিমুখ, শিবঠাকুর।
উত্তর : শিবঠাকুর।
৩.৫ মেঘের খেলা, লুকোচরি, টাপুর টুপুর, নদী, সুয়োরানি।
উত্তর : সুয়োরানি।
৪. বিপরীতার্থক শব্দ কবিতা থেকে বেছে নিয়ে লেখো ঃ রাত, বার্ধক্য, খরা, পুরোনো, শান্ত।
উত্তর ঃ রাত-দিন,
বার্ধক্য — ছেলেবেলা,
খরা—বান,
পুরোনো—নতুন,
শান্ত—দুরন্ত।
৫. বিশেষ্য ও বিশেষণ খুঁজে নিয়ে লেখো :
একশো মানিক, দুরন্ত ছেলে, ৰাদলা হাওয়া, গুরুগুরু ,বুক, ঝাপসা গাছপালা
উত্তর :
বিশেষ্য > বিশেষণ
মানিক > একশো
ছেলে > দুরন্ত
হাওয়া > বাদলা
গাছপালা > ঝাপসা
বুক > গুরুগুরু
৬. ক্রিয়ার তলায় দাগ দাও
৬.১ কাঁসর ঘণ্টা বাজল ঠঙ্ঠঙ্।
উত্তর : কাঁসর ঘণ্টা [বাজল] ঠঙ্ঠঙ্।
৬.২ কত খেলা পড়ে মনে।
উত্তর : কত খেলা [পড়ে] মনে।
৬.৩ শুনেছিলেম গান।
উত্তর : [শুনেছিলেম] গান।
৬.৪ বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর।
উত্তর : বিষ্টি [পড়ে] টাপুর টুপুর।
৬.৫ বাইরেতে মেঘ ডেকে ওঠে।
উত্তর : বাইরেতে মেঘ [ডেকে]ওঠে।
৭. সৃষ্টি— এমন 'ই' রয়েছে—এরকম পাঁচটি শব্দ লেখো ?
উত্তর : বৃষ্টি, মিষ্টি, চেষ্টা, তেষ্টা, কষ্ট।
৮. নীচের শব্দগুলোয় দুটো করে শব্দ লুকিয়ে আছে, আলাদা করে লেখো ঃ
হাছপালা, ছেলেবেলা, হাসিমুখ, লেখাজোকা
গাছপালা
গাছ > পালা
ছেলেবেলা
ছেলে> বেলা
হাসিমুখ
হাসি> মুখ
লেখাজোকা
লেখা>জোকা
৯। সাজিয়ে লেখো । লেছেবেলা, রিকোচুল
উত্তর : লেছেবেলা > ছেলেবেলা
রিকোচুলু → লুকোচুরি
১০. শূন্যস্থান পূরণ করো :
১০.১আকাশ ঘিরে......জুটেছে।
উত্তর ঃ আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে।
১০.২ বাদলা.......মনে পড়ে।
উত্তর ঃ বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে।
১০.৩ মনে পড়ে......আলো।
উত্তর ঃ মনে পড়ে ঘরটি আলো।
১০.৪ ঘরেতে.......ছেলে।
উত্তর : ঘরেতে দুরন্ত ছেলে।
১০.৫ বাইরে কেবল.....শব্দ।
উত্তর : বাইরে কেবল জলের শব্দ।
১১.১রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর - ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান।
১১.২ কোন বইয়ের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর : Songs Offering'-বই এর জন্য।
১১.৩ বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি তাঁর কোন্ বই থেকে নেওয়া হয়েছে ?
উত্তর : 'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি তাঁর 'শিশু' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
১২। মাঠে বা নদীতে বৃষ্টি পড়ছে এমন একটি ছবি আঁকো ও রং করো :
উত্তর : ছবি নিজেরা এঁকে শিক্ষকমশাইকে দেখাও।
১৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১৩.১ বৃষ্টির দিনে কবির মনে কোন গান ভেসে আসে ?
উত্তর : বৃষ্টির দিনে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে ছেলেবেলার মায়ের গাওয়া 'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান' গানটি ভেসে আসে।
১৩:২ বৃষ্টিতে নদীর এপার এবং ওপারের যে বর্ণনা কৰি দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর
: আলোচ্য কবিতায় বাদল দিনে কবি নদীর এপার এবং ওপারের সুন্দর বর্ণনা
দিয়েছেন। নদীর এপারে মেঘলা আকাশ কিন্তু বৃষ্টি এখনও শুরু হয়নি। আর নদীর
ওপারে বৃষ্টি পড়ছে তাতে দূরের গাছপালা ঝাপসা দেখা যাচ্ছে।
১৩.৩ 'সেদিনও কি এমনিতরো/মেঘের ঘটাখানা' – কোন দিনের কথা বলা হয়েছে? সেদিনের প্রকৃতির বর্ণনা দাও।
উত্তর : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলেবেলার দিনগুলির কথা বলা হয়েছে।
কবি
বলছেন, বাদলদিনে সীমাহীন আকাশ কালো মেঘে পরিপূর্ণ। প্রকৃতি শস্যশ্যামলা,
চারদিক সবুজের সমারোহে সজীব। বাদল দিনে আকাশে কালো মেঘের লুকোচুরির খেলা
চলে। দুরন্ত ছেলে মেঘের শব্দ শুনে ভয় পেয়ে ঘরের কোণে চুপ করে বসে মায়ের
কাছে রূপকথার নানান গল্প শোনে।
১৩.৪ মেঘের খেলা কবির মনে কোন্ কোন্ স্মৃতি বয়ে আনে?
উত্তর
: বাদলদিনে সারা আকাশ জুড়ে ঘন মেঘের খেলা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে
ছেলেবেলার অনেক স্মৃতি বয়ে নিয়ে আসে। সীমাহীন আকাশে মেঘের ওপর মেঘ জমে
অবিরাম কালো মেঘের খেলা কবিকে ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার
স্মৃতি মনে
করিয়ে দেয়। মনে পড়ে মায়ের কাছে শোনা 'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল
বান' গানটি। এইরকম অবিরাম বৃষ্টিঝরা দিনে দূরন্ত ছেলের সমস্ত দুরন্তপনা
দাপাদাপি বন্ধ হয়ে যায়। শান্ত ছেলের মতো চুপ করে ঘরের এক কোণে সে বসে
মায়ের কাছে সুয়োরানি, দুয়োরানি, কঙ্কাবতীর বাধা ইত্যাদি রূপকথার গল্প
শোনে। এসব স্মৃতি কবির মনকে
উদাস করে। কবির বারে বারে এমন বৃষ্টিঝরা বাদল দিনে মায়ের সেই ঘুমপাড়ানি গানের কথা মনে পড়ে।
•
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' যেমন একটি বর্ষার কবিতা,
তেমনই তিনি বর্ষা নিয়ে অনেক গান লিখেছেন। সেইরকম একটি গান এবার কবিতার
সঙ্গে মিলিয়ে পড়ছি এবং সুরে গাইতে চেষ্টা করছি।
উত্তর :
বাদল-বাউল
বাদল-বাউল বাজায় রে একতারা-
সারা বেলা ধ'রে ঝরোঝরো ঝরো ধারা।।
জামের বনে ধানের ক্ষেতে আপন তানে আপনি মেতে
নেচে নেচে হলো সারা।।
ঘন জটার ঘটা ঘনায় আঁধার আকাশ-মাঝে,
পাতায় পাতায় টুপুর টুপুর নুপুর মধুর বাজে।
ঘর-ছাড়ানো আকুল সুরে উদাস হয়ে বেড়ায় ঘুরে
পুবে হাওয়া গৃহহারা।।
•
বিষয়বস্তু ঃ বাদলদিনে একতারা বাজিয়ে বাউল গান ধরেছে। গানের মধ্য দিয়ে
গায়ক বর্ষা প্রকৃতির রূপ সুন্দরভাবে ব্যক্ত করেছে। বর্ষাকালে সারাদিন ধরে
অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে। বৃষ্টি তার নিজের খেয়ালে জাম গাছে, ধানখেতে নেচে
চলেছে।
সারা আকাশ কালো মেঘের ঘনঘটায় আঁধার রূপ ধারণ করেছে। তারই মাঝে
গাছের পাতায় টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ার শব্দে নূপুরধ্বনি বেজে চলেছে। ঘর
ছাড়া বাউল সন্ন্যাসীর আকুল সুর চারদিকে ঘুরে ঘুরে উদাস করছে।
• টীকা ঃ বাউল — ঈশ্বরভক্ত সাধক সম্প্রদায় যাঁরা গান গেয়ে এঁদের সাধনা প্রচার করেন তাদের বলা হয় বাউল। এঁরা হিন্দু অথবা মুসলমান কোনো ধর্মেই বিশ্বাসী নন। এঁদের সহজিয়া সাধক বলা হয়।
কিছু অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
এককথায় উত্তর দাও :
১.কেবলমাত্র ঘণ্টার শব্দ আমরা কখন শুনতে পাই?
উত্তর : ছুটির সময় ও মন্দিরে।
২। ছেলেবেলার গানের কথা কখন শিশুকবির মনে পড়ে?
উত্তর ঃ বাদল দিনে।
৩। বার কোথায় আসে ?
উত্তর : নদীতে।
৪। দুরন্ত ছেলে কখন দাপাদাপি করে না?
উত্তর : বাদল দিনে।
৫। রূপকথার গল্পে কার অভিমানের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর ঃ কঙ্কাবতীর।
৬। বাদলা দিনে দস্যি ছেলে চুপ করে কী করে ?
উত্তর : গল্প শোনে।
দু-এক কথায় উত্তর দাও :
১। দিনের আলো কখন নিভে যায় ?
উত্তর : সূর্যদেব অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দিনের আলো নিভে যায়।
২. সন্ধ্যাবেলা আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে কেন ?
উত্তর : সন্ধ্যাবেলা চাদের আলোকে ঢেকে দেওয়ার জন্য আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে।
৩. মন্দিরে কখন কাঁসর-ঘণ্টা বেজে ওঠে?
উত্তর : মন্দিরে পূজার সময় বা আরতির সময় কাঁসর-ঘণ্টা বেজে ওঠে।
৪. ঝাপসা গাছপালা কখন দেখা যাচ্ছে?
উত্তর ঃ নদীর অপর পারে বৃষ্টিধারায় গাছপালা ঝাপসা দেখাচ্ছে।
৫. মেষ নতুন ফুলের বনে কী দিয়ে যায় ?
উত্তর ঃ মেঘ নতুন ফুলের বনে বৃষ্টি দিয়ে যায়।
৬. বাদল দিনে ঘরের দেয়ালে ছায়ার রূপ কেমন?
উত্তর ঃ বাদল দিনে ঘরের দেয়ালের ছায়ার রূপ কালো কালো।
৭. লুকোচুরি খেলার কথা কবির কখন মনে পড়ে?
উত্তর-মেঘের ওপর মেঘের খেলা দেখে কবির ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার কথা মনে পড়ে।
৮.কাকে কেউ কী কারণে মানা করে না?
উত্তর:-: আকাশ জুড়ে যেসব মেঘ সীমানার বাইরে খেলা করে, দেশে দেশে উড়ে বেড়ায় তাদেরকে কেউ মানা করে না।
৯. মায়ের মুখের কোন গান শিশু-কবির মনে পড়ে?
উত্তর : শিশু-কবির মনে পড়ে মায়ের মুখের গান, “বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান।”
পড়ে টাপুর টুপুর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হাতে-কলমে প্রশ্নের উত্তর
১. নিচে প্রশ্নগুলি উত্তর নিজের ভাষায় লেখ
১.১ কোন কোন বাংলা মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয় উত্তর - আষাঢ় শ্রাবণ মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয়
১.২ মেঘলা দিনে আকাশ ও তোমার চারপাশের প্রকৃতি কেমন রূপ ধারণ করে?
উত্তর : মেঘলা দিনে আকাশ গুমোট হয়ে থাকে। পরে এই মেঘ জমাট বেঁধে প্রকৃতি বর্ষার অপরূপ সাজে সেজে বর্ষার জলে চারদিকে সবুজের সমারোহ। এই সময়ে সারাদিন কখনও ঝিরঝির করে, কখনও মুষলধারায় বৃষ্টি হয়। এই সময় নদনদী, খাল, পুকুর জলে ভরে যায়।
উত্তর : ইংরেজি ২০২১, ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের দিন সকাল বেলা আমাদের বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ উৎসব অনুষ্ঠিত
১.৩ ষ্টির সলো জড়িয়ে আছে— তোমার জীবনে মনে রাখার মতো এমন কোনো ঘটনার কথা লেখো।
হল। এদিন সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। চারদিক জলে জল। রাস্তায় জল জমেছে, বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বাড়ছে। আমাদের বাড়ি থেকে বিদ্যালয় হাঁটা পথ। সকাল নটার সময় বিদ্যালয়ের পোশাক পরে জুতো জোড়া হাতে নিয়ে আমি আর আমার বন্ধু রাস্তায় নামলাম। মাথায় ছাতা, হাতে জুতো নিয়ে জলের মধ্যে হেঁটে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলাম। বৃষ্টি তখন এক কমেছে। আমাদের মতো আরও অনেকে এসেছে। কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক মহাশয় এসেছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক মহাশয় চমৎকার ভাষা ছিলেন। তিনি বললেন, ভূমিখণ্ডের তুলনায়
৩ শতাংশ উদ্ভিদ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ২৩ শতাংশেরও কম উদ্ভিদ রয়েছে, ফলে এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম। অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয়ের মাঠের চারদিকে এবং কিছু টবে বৃক্ষরোপণ করা হল। বর্ষার দিনে হাঁটু জল
পার হয়ে বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ উৎসবে যোগদান করে আনন্দ লাভ করা আমার জীবনে মনে রাখার মতো একটি ঘটনা।
১.৪ পুকুরে. টিনের চালে, গাছের পাতায় বৃষ্টি পড়ার শব্দগুলো কেমন হয় লেখো।
হুর : পুকুরে-টুপটুপ,
টিনের চালে-টপটপ,
গাছের পাতায়-টিপটিপ।
২.'ক' স্তম্ভের সঙ্গে 'খ' স্তম্ভ মেলাও
উত্তর :
ঝাপসা > অস্পষ্ট
ছেলেবেলা > শৈশব
বিছানা > শয্যা
দুরন্ত > দামাল
বান > বন্যা
৩. বেমানান শব্দের তলায় দাগ দাও :
৩.১ সূর্য, মেঘ, বৃষ্টি, আকাশ, বাড়ি।
উত্তর ঃ বাড়ি
৩.২ ডোবে ডোৰে, লোভে লোডে, পলে পলে, দেশে দেশে, টাপুর টুপুর।
উত্তর : টাপুর টুপুর।
৩.৩ গাছপালা, মেঘ, হাওয়া, বাদল, মানিক।
উত্তর : মানিক।
৩.৪ মা, খোকা, দৌরাত্ম্য, হাসিমুখ, শিবঠাকুর।
উত্তর : শিবঠাকুর।
৩.৫ মেঘের খেলা, লুকোচরি, টাপুর টুপুর, নদী, সুয়োরানি।
উত্তর : সুয়োরানি।
৪. বিপরীতার্থক শব্দ কবিতা থেকে বেছে নিয়ে লেখো ঃ রাত, বার্ধক্য, খরা, পুরোনো, শান্ত।
উত্তর ঃ রাত-দিন,
বার্ধক্য — ছেলেবেলা,
খরা—বান,
পুরোনো—নতুন,
শান্ত—দুরন্ত।
৫. বিশেষ্য ও বিশেষণ খুঁজে নিয়ে লেখো :
একশো মানিক, দুরন্ত ছেলে, ৰাদলা হাওয়া, গুরুগুরু ,বুক, ঝাপসা গাছপালা
উত্তর :
বিশেষ্য > বিশেষণ
মানিক > একশো
ছেলে > দুরন্ত
হাওয়া > বাদলা
গাছপালা > ঝাপসা
বুক > গুরুগুরু
৬. ক্রিয়ার তলায় দাগ দাও
৬.১ কাসর ঘণ্টা বাজল ঠঙ্ঠঙ্।
উত্তর : কাসর ঘণ্টা বাজল ঠঙ্ঠঙ্।
৬.২ কত খেলা পড়ে মনে।
উত্তর : কত খেলা [পড়ে] মনে।
৬.৩ শুনেছিলেম গান।
উত্তর : [শুনেছিলেম] গান।
৬.৪ বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর।
উত্তর : বিষ্টি [পড়ে] টাপুর টুপুর।
৬.৫ বাইরেতে মেঘ ডেকে ওঠে।
উত্তর : বাইরেতে মেঘ [ডেকে]ওঠে।
৭. সৃষ্টি— এমন 'ই' রয়েছে—এরকম পাঁচটি শব্দ লেখো ?
উত্তর : বৃষ্টি, মিষ্টি, চেষ্টা, তেষ্টা, কষ্ট।
চ. নীচের শব্দগুলোয় দুটো করে শব্দ লুকিয়ে আছে, আলাদা করে লেখো ঃ
হাছপালা, ছেলেবেলা, হাসিমুখ, লেখাজোকা
গাছপালা
গাছ > পালা
ছেলেবেলা
ছেলে> বেলা
হাসিমুখ
হাসি> মুখ
লেখাজোকা
লেখা>জোকা
৯। সাজিয়ে লেখো । লেছেবেলা, রিকোচুল
উত্তর : লেছেবেলা > ছেলেবেলা
রিকোচুলু → লুকোচুরি
১০. শূন্যস্থান পূরণ করো :
১০.১আকাশ ঘিরে......জুটেছে।
উত্তর ঃ আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে।
১০.২ বাদলা.......মনে পড়ে।
উত্তর ঃ বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে।
১০.৩ মনে পড়ে......আলো।
উত্তর ঃ মনে পড়ে ঘরটি আলো।
১০.৪ ঘরেতে.......ছেলে।
উত্তর : ঘরেতে দুরন্ত ছেলে।
১০.৫ বাইরে কেবল.....শব্দ।
উত্তর : বাইরে কেবল জলের শব্দ।
১১.১রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর - ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান।
১১.২ কোন বইয়ের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর : Songs Offering'-বই এর জন্য।
১১.৩ বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি তাঁর কোন্ বই থেকে নেওয়া হয়েছে ?
উত্তর : 'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি তাঁর 'শিশু' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
১২। মাঠে বা নদীতে বৃষ্টি পড়ছে এমন একটি ছবি আঁকো ও রং করো :
উত্তর : ছবি নিজেরা এঁকে শিক্ষকমশাইকে দেখাও।
১৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১৩.১ বৃষ্টির দিনে কবির মনে কোন গান ভেসে আসে ?
উত্তর : বৃষ্টির দিনে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে ছেলেবেলার মায়ের গাওয়া 'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান' গানটি ভেসে আসে।
১৩:২ বৃষ্টিতে নদীর এপার এবং ওপারের যে বর্ণনা কৰি দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর : আলোচ্য কবিতায় বাদল দিনে কবি নদীর এপার এবং ওপারের সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। নদীর এপারে মেঘলা আকাশ কিন্তু বৃষ্টি এখনও শুরু হয়নি। আর নদীর ওপারে বৃষ্টি পড়ছে তাতে দূরের গাছপালা ঝাপসা দেখা যাচ্ছে।
১৩.৩ 'সেদিনও কি এমনিতরো/মেঘের ঘটাখানা' – কোন দিনের কথা বলা হয়েছে? সেদিনের প্রকৃতির বর্ণনা দাও।
উত্তর : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলেবেলার দিনগুলির কথা বলা হয়েছে।
কবি বলছেন, বাদলদিনে সীমাহীন আকাশ কালো মেঘে পরিপূর্ণ। প্রকৃতি শস্যশ্যামলা, চারদিক সবুজের সমারোহে সজীব। বাদল দিনে আকাশে কালো মেঘের লুকোচুরির খেলা চলে। দুরন্ত ছেলে মেঘের শব্দ শুনে ভয় পেয়ে ঘরের কোণে চুপ করে বসে মায়ের কাছে রূপকথার নানান গল্প শোনে।
১৩.৪ মেঘের খেলা কবির মনে কোন্ কোন্ স্মৃতি বয়ে আনে?
উত্তর : বাদলদিনে সারা আকাশ জুড়ে ঘন মেঘের খেলা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে ছেলেবেলার অনেক স্মৃতি বয়ে নিয়ে আসে। সীমাহীন আকাশে মেঘের ওপর মেঘ জমে অবিরাম কালো মেঘের খেলা কবিকে ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার
স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। মনে পড়ে মায়ের কাছে শোনা 'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান' গানটি। এইরকম অবিরাম বৃষ্টিঝরা দিনে দূরন্ত ছেলের সমস্ত দুরন্তপনা দাপাদাপি বন্ধ হয়ে যায়। শান্ত ছেলের মতো চুপ করে ঘরের এক কোণে সে বসে মায়ের কাছে সুয়োরানি, দুয়োরানি, কঙ্কাবতীর বাধা ইত্যাদি রূপকথার গল্প শোনে। এসব স্মৃতি কবির মনকে
উদাস করে। কবির বারে বারে এমন বৃষ্টিঝরা বাদল দিনে মায়ের সেই ঘুমপাড়ানি গানের কথা মনে পড়ে।
• রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' যেমন একটি বর্ষার কবিতা, তেমনই তিনি বর্ষা নিয়ে অনেক গান লিখেছেন। সেইরকম একটি গান এবার কবিতার সঙ্গে মিলিয়ে পড়ছি এবং সুরে গাইতে চেষ্টা করছি।
উত্তর :
বাদল-বাউল
বাদল-বাউল বাজায় রে একতারা-
সারা বেলা ধ'রে ঝরোঝরো ঝরো ধারা।।
জামের বনে ধানের ক্ষেতে আপন তানে আপনি মেতে
নেচে নেচে হলো সারা।।
ঘন জটার ঘটা ঘনায় আঁধার আকাশ-মাঝে,
পাতায় পাতায় টুপুর টুপুর নুপুর মধুর বাজে।
ঘর-ছাড়ানো আকুল সুরে উদাস হয়ে বেড়ায় ঘুরে
পুবে হাওয়া গৃহহারা।।
• বিষয়বস্তু ঃ বাদলদিনে একতারা বাজিয়ে বাউল গান ধরেছে। গানের মধ্য দিয়ে গায়ক বর্ষা প্রকৃতির রূপ সুন্দরভাবে ব্যক্ত করেছে। বর্ষাকালে সারাদিন ধরে অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে। বৃষ্টি তার নিজের খেয়ালে জাম গাছে, ধানখেতে নেচে চলেছে।
সারা আকাশ কালো মেঘের ঘনঘটায় আঁধার রূপ ধারণ করেছে। তারই মাঝে গাছের পাতায় টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ার শব্দে নূপুরধ্বনি বেজে চলেছে। ঘর ছাড়া বাউল সন্ন্যাসীর আকুল সুর চারদিকে ঘুরে ঘুরে উদাস করছে।
• টীকা ঃ বাউল — ঈশ্বরভক্ত সাধক সম্প্রদায় যাঁরা গান গেয়ে এঁদের সাধনা প্রচার করেন তাদের বলা হয় বাউল। এঁরা
হিন্দু অথবা মুসলমান কোনো ধর্মেই বিশ্বাসী নন। এঁদের সহজিয়া সাধক বলা হয়।
কিছু অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
এককথায় উত্তর দাও :
১.কেবলমাত্র ঘণ্টার শব্দ আমরা কখন শুনতে পাই?
উত্তর : ছুটির সময় ও মন্দিরে।
২। ছেলেবেলার গানের কথা কখন শিশুকবির মনে পড়ে?
উত্তর ঃ বাদল দিনে।
৩। বার কোথায় আসে ?
উত্তর : নদীতে।
৪। দুরন্ত ছেলে কখন দাপাদাপি করে না?
উত্তর : বাদল দিনে।
৫। রূপকথার গল্পে কার অভিমানের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর ঃ কঙ্কাবতীর।
৬। বাদলা দিনে দস্যি ছেলে চুপ করে কী করে ?
উত্তর : গল্প শোনে।
দু-এক কথায় উত্তর দাও :
১। দিনের আলো কখন নিভে যায় ?
উত্তর : সূর্যদেব অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দিনের আলো নিভে যায়।
২. সন্ধ্যাবেলা আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে কেন ?
ত্তর : সন্ধ্যাবেলা চাদের আলোকে ঢেকে দেওয়ার
জন্য আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে।
৩. মন্দিরে কখন কাঁসর-ঘণ্টা বেজে ওঠে?
উত্তর : মন্দিরে পূজার সময় বা আরতির সময় কাঁসর-ঘণ্টা বেজে ওঠে।
৪. ঝাপসা গাছপালা কখন দেখা যাচ্ছে?
উত্তর ঃ নদীর অপর পারে বৃষ্টিধারায় গাছপালা ঝাপসা দেখাচ্ছে।
৫. মেষ নতুন ফুলের বনে কী দিয়ে যায় ?
উত্তর ঃ মেঘ নতুন ফুলের বনে বৃষ্টি দিয়ে যায়।
৬. বাদল দিনে ঘরের দেয়ালে ছায়ার রূপ কেমন?
উত্তর ঃ বাদল দিনে ঘরের দেয়ালের ছায়ার রূপ কালো কালো।
৭. লুকোচুরি খেলার কথা কবির কখন মনে পড়ে?
উত্তর-মেঘের ওপর মেঘের খেলা দেখে কবির ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার কথা মনে পড়ে।
৮.কাকে কেউ কী কারণে মানা করে না?
উত্তর:-: আকাশ জুড়ে যেসব মেঘ সীমানার বাইরে খেলা করে, দেশে দেশে উড়ে বেড়ায় তাদেরকে কেউ মানা করে না।
৯. মায়ের মুখের কোন গান শিশু-কবির মনে পড়ে?
উত্তর : শিশু-কবির মনে পড়ে মায়ের মুখের গান, “বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান।”