আকাশে দুই বন্ধু পঞ্চম শ্রেণি বাংলা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা
আকাশের দুই বন্ধু
শৈলেন ঘোষ
হাতেকলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
১. নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও :
১.১ আকাশের দিতে তাকিয়ে তুমি কী কী দেখতে পাও?
উত্তর ঃ আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি পাখি, চাঁদ, সূর্য, তারা ইত্যাদি দেখতে পাই।
১.২ আকাশে তুমি কী কী উড়তে দেখেছ?
উত্তর ঃ আকাশে আমি বক, চিল, শকুন ও অন্যান্য পাখি এবং বিমান উড়তে দেখেছি।
১.৩ কোন্ কোন্ উৎসবে তুমি ঘুড়ি উড়তে দেখেছ?
উত্তর : পৌষ সংক্রান্তি তে নদী মেলায় আমি ঘুড়ি উড়তে দেখেছি।
১.৪ আকাশ কেমন থাকলে ঘুড়ি ওড়াতে সুবিধা হয়। ঘুড়ি ওড়াতে গেলেই বা কী কী লাগে ?
উত্তর ঃ আকাশ স্বচ্ছ, নির্মল, মেঘমুক্ত থাকলে ঘুড়ি ওড়াতে সুবিধা হয়।
ঘুড়ি ওড়াতে গেলে ঘুড়ি, লাটাই, সুতো লাগে। ঘুড়িতে মাখ্যা দিতে হয়।
১.৫ ঘুড়ি সাধারণত কোন্ কোন্ জিনিস দিয়ে তৈরি? সুতোয় মাঞ্জুা দিতে কী কী লাগে ?
উত্তর : ঘুড়ি সাধারণত রঙিন কাগজ, কাপকাঠি দিয়ে তৈরি হয়।
সুতোয় মাখা দিতে সাদা সুতো, রং, কাচগুঁড়ো, সাবুর মাড় ইত্যাদি লাগে।
১.৬ ‘আকাশের দুই বন্ধু' গল্পে দুটি জিনিস নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলেছে। অপ্রাণীবাচক দুটি জিনিস নিজেদের মধ্যে কথা বলেছে, এমন আর কোন গল্প তুমি জানো ?
উত্তর : আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর ‘উদ্ভিদের জীবন', নবকৃয় ভট্টাচার্যের লেখা 'কাজের লোক' ইত্যাদি গল্প আমি জানি।
২. নীচের এলোমেলো শব্দগুলো সাজিয়ে লেখো :
উত্তর;;
ঠি প কা কা:- কাপকাঠি।
নি নি না চো কা বা : নাকানিচোবানি ।
না জ্ব আ ব–আবর্জনা।
কর ঘু পা—ঘুরপাক।
৩. 'ক' আর 'খ'-স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :
উত্তর :
মা- পাখি- ডিমে তা দেয়
ছানাপোনা - কিচিরমিচির করে
চোখ -পিটপিটিয়ে দেখে
বাজনা - বাজে
ফুল - ফোটে
নদী - বয়ে যায়
৪. ঠিক উত্তরটা বেছে নিয়ে প্রতিটি বাক্য আবার লেখো :
৪.১. এমনি করে পৃথিবী রোজ (নতুন/পুরোনো) হচ্ছে।
উত্তর ঃ এমনি করে পৃথিবী রোজ নতুন হচ্ছে।
৪.২ বুকের ঝাপকাঠি/কাপকাঠি) ছিটকে গেলে, সে তখন একটা কাগজের টুকরো।
উত্তর : বুকের কাপকাঠি ছিটকে গেলে, সে তখন একটা কাগজের টুকরো।
৪.৩ একসঙ্গে লড়াই না করলে কেউ বোধহয় (বিস্তার/নিস্তার) পায় না।
উত্তর : একসঙ্গে লড়াই না করলে কেউ বোধ নিস্তার পায় না।
৫.নীচে অনুচ্ছেদের বাক্যগুলিতে দেখো কোন্ কোন্ শব্দে মনে হচ্ছে কাজ শেষ হয়ে গেছে, আর কোন কোন শব্দে মনে হচ্ছে কাজ শেষ হয়নি, সেগুলি আলাদা করে লেখো ঃ
উত্তর : ওদের কিনে আনা হয়েছে দোকান থেকে। —কাজ শেষ হয়েছে।
উৎসবের দিনে উড়বে ওই দুটো ঘুড়ি।—কাজ শেষ হয়নি।
তারপরে লাট খেতে খেতে ওরা লড়াই করবে আকাশে। —কাজ শেষ হয়নি। কে যে ভোকাট্টা হয়ে কোথায় পড়বে,
কেউ জানে না। —কাজ শেষ হয়নি। কেউ গড়িয়ে পড়তে পারে গাছে, কিংবা ইলেকট্রিক তারে।—কাজ শেষ হয়নি।
লুটিয়ে পড়তে পারে কারও ছাদে, নয়তো নদীর জলে।—কাজ শেষ হয়নি।
নদীর জলে নাকানিচোবানি খেয়ে তার বুকের কাপকাঠি ছিটকে গেলে, সে তখন কেবলই একটা ফাটা কাগজের টুকরো।—কাজ শেষ হয়নি। তখন কেউ চোখ ফিরিয়ে দেখবে না তাকে।—কাজ শেষ হয়নি।
৬. চাদিয়াল আর পেটকাটা— গল্পে ঘুড়ি দুটোর নাম পেলে। আরো অনেকরকম নাম হয় ঘুড়িদের, ছোটো দলে ভাগ হয়ে নিজেরা কথা বলে দ্যাখো আর কোনো ঘুড়ির নাম নিজেরাই জানো কিনা। নয়তো, বাড়িতে-স্কুলে বড়োদের কাছে জেনে নাও, তারপর লেখো।
উত্তর : ঘুড়ির নাম—একতে, দোতে লেজওয়ালা ঘুড়ি, বাঁশমার, পতাকামার, চাপরাস, গলাকাটা ইত্যাদি।
৭. ঘুড়িদের প্যাচের লড়াইয়ে একটা অদ্ভুত ফল হয়েছে গল্পে। মানুষের হিসেবে দু-দলই হেরেছে, ঘুড়িদের উদ্যোগে জিতেছে দুজনেই। তুমি কি ঘুড়ির লড়াই দেখেছ কখনো? এমন অদ্ভুত ফল কিন্তু সচরাচর হয় না। সচরাচর এমন লড়াইয়ে যেটা হয়, সেটা চার-পাঁচ লাইনে লেখো।
উত্তর ঃ ঘুড়িদের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত দুটি ঘুড়িই প্রথম থেকে একে অপরকে কাটতে চায়। একবার এ ওর ঘাড়ের ওপর দিয়ে আর একবার অন্যটি তার ঘাড়ের ওপর দিয়ে যায়। এভাবে হঠাৎই একটা ঘুড়ি ভোকাট্টা হয়ে কেটে যায়, অন্যটি আকাশে উড়তে থাকে।
৮. চাঁদিয়াল আর পেটকাটা—এই দুই ঘুড়ি আকাশ থেকে নীচের পৃথিবীকে দেখে অনেক গল্প করেছে নিজেরাই। মনে করো, তুমি উড়ে যেতে পেরেছ আকাশে, সঙ্গে তোমার বন্ধুও আছে। আকাশ থেকে নীচের পৃথিবীকে দেখে কী গল্প করবে তোমরা, সেটা লেখো :
উত্তর ঃ গতবছর পুজোর ছুটিতে আমি, আমার বাবা মা, আমার প্রিয় বন্ধু জয়ন্ত এবং তার বাবা মা এই ছয়জন মিলে শিলং বেড়াতে গিয়েছিলাম। শিলং যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিমানযোগে আমরা গুয়াহাটি যাই। এই প্রথম আমি ও জয়ন্ত বিমানে আকাশে উড়লাম। দিনের আকাশে নিজেদের কখনও ঘুড়ি আবার কখনও পাখি বলে মনে হচ্ছিল। আকাশ থেকে নীচের পৃথিবীকে দেখতে বেশ ভালো লাগে। ওপর থেকে গাছপালা, ঘরবাড়ি, মানুষজন, নদী, যানবাহন
সবই দেখা যাচ্ছে, তবে খুব ছোটো আকারে। সাদা সুতোর মতো নদীগুলি এঁকেবেঁকে গেছে। বিমানযোগে আকাশপথে যাওয়ার সময় আমার একটু ভয় ভয় করলেও গুয়াহাটি শহরে সমতল ভূমিতে নামার সময় আমার বেশ ভালো লেগেছে।
৯. অর্থ লেখো :
কুঁড়ি, ৰাহার, গোলাম, মুক্ত।
উত্তর ঃ কুঁড়ি—ফুল ফোটার আগের অবস্থা।
বাহার—রূপ।
গোলাম—ভৃত্য, চাকর।
মুক্ত—বাঁধনহারা।
১০. সমার্থক শব্দ লেখো :
নদী, আকাশ, গাছ, বন্ধু, সাগর।
উত্তর : নদী – প্রবাহিণী,
তরঙ্গিণী। আকাশ — গগন, নভঃ । গাছ—বৃক্ষ, পাদপ। বন্ধু – সখা, প্রিয় সঙ্গী।
সাগর— সমুদ্র, সিন্ধু, পারাবার, জলধি।
১১. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো : চিৎকার, আনন্দ, ঠিক, অসহায়, সাধ্য।
উত্তর : চিৎকার—চুপচাপ।
আনন্দ—নিরানন্দ।
ঠিক—ভুল।
অসহায় — সহায়।
সাধ্য—অসাধ্য।
১২. বাক্যরচনা করো
বন্ধুত্ব, চোখ, দয়া, ভোকাট্টা, উল্লাস।
উত্তর : বন্ধুত্ত্ব বজায় রাখা কঠিন।
চোখ;— শকুনের চোখের দৃষ্টি খুব তীক্ষ্ণ।
দয়া;-ভগবান সকলকে দয়া করেন।
ভোকাট্টা:—হরির ঘুড়িটা তাড়াতাড়ি ভোকাট্টা হয়ে গেল।
উল্লাস:; খেলার মাঠে মোহনবাগান জেতার জন্য তাদের সমর্থকরা উল্লাস করছে।
১৩. কোনটি কোন প্রকারের বাক্য লেখো
১০.১ মনে মনে বলব, বাঃ! -
উত্তর : বিস্ময়বোধক বাক্য
১৩.২ তুই কেমন করে জানলি?
উত্তর : প্রশ্নবোধক বাক্য
১৩.৩ বরফ নাকি খুব ঠাণ্ডা!
উত্তর : বিস্ময়বোধক বাক্য
১৩.৪ জানে শুধু আকাশ।
উত্তর : অন্ত্যর্থক বাক্য
১০.৫ খাবার চাইছে মায়ের কাছে।
উত্তর : নির্দেশক বাক্য
১৪. কোনটি কোন ধরনের শব্দ, ঝুড়ি থেকে বেছে নিয়ে আলাদা করে লেখো
দেখা, বড়ো, প্রাণ,নতুন, কে, ওদের,
ঠান্ডা, শক্ত, ভয়, সবুজ, ভাবছে, মুক্ত, কেউ, সুতো, যে, লড়াই, আর, ওই, ডাক, ওর, আমরা, রক্ষা, টান, রাখে।
উত্তর :
বিশেষ্য
ভয়,প্রাণ,মুক্ত, সুতো, লড়াই, ডাক, রক্ষা, টান, কেউ
বিশেষণ
ঠান্ডা, শক্ত, বড়ো, নূতন, সবুজ
সর্বনাম
কে,ওদের, ওই, ওর ,আমরা
অব্যয়;-
আর, যে
ক্রিয়া;-
দেখা , ভাবছে, রাখে।
১৫. ক্রিয়ার নীচে দাও দাও !
১৫.১ কে জানত, একদিন হঠাৎ ওদের দেখা হবে।
উত্তর : কে জানত, এদিন হঠাৎ ওদের দেখা হবে।
১৫.২ আবর্জনা নিয়ে কে আর দয়া দেখায়।
উত্তর : আবর্জনা নিয়ে কে আর দয়া দেখায়।
১৫.৩ এমনি করে রোজ পৃথিবী নতুন হচ্ছে।
উত্তর ঃ এমনি করে রোজ পৃথিবী নতুন হচ্ছে
১৫.৪-উল্লাসে ভরে যায় চারিদিক।
উত্তর : উল্লাসে ভরে যায় চারিদিক।
১৫.৫ জানে শুধু আকাশ।
উত্তর : জানে শুধু আকাশ।
১৬.১অরুণ বরুণ কিরণমালা' বইটি কার লেখা ?
উত্তর : “অরুণ বরুণ কিরণমালা' বইটি শৈলেন ঘোষের লেখা।
১৬.২ তার অন্যান্য দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : তাঁর অন্যান্য দুটি বইয়ের নাম 'টুইটুই', 'আমার নাম টায়রা'।
১৬.৩ তোমার পাঠ্য 'আকাশের দুই বন্ধু' গল্পটি কোন বই থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : 'আকাশের দুই বন্ধু' গল্পটি 'স্বপ্ন দেখি রূপকথায়' বই থেকে নেওয়া হয়েছে।
১৭. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১৭.১ গল্পে প্রকৃতির বৈচিত্র্যময়, সুন্দর রূপ কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তর : আকাশের দুই বন্ধু' গল্পে লেখক প্রকৃতির এক বৈচিত্র্যময় সুন্দর রূপকে তুলে ধরেছেন। এই প্রকৃতিতে শুধুমাত্র মানুষই বসবাস করে তা নয়, এখানে গাছপালা, পশুপাখি, এরাও বাস করে। একটি বীজ মাটিতে পুঁতলে ধীরে ধীরে
সেটি থেকে গাছ বের হয়, তারপর সবুজ পাতা, ফুলের কুঁড়ি এবং সবশেষে ফুল ফোটে, সে কথাই লেখক বলেছেন।
আবার, গাছে যে পাখি থাকে তাতে মা-পাখি তার ডিমে তা দিলে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়, তারপর তারা কিচিরমিচির করে। এরপর একদিন ডানা মেলে আকাশে উড়ে যায়।
১৭. ২ পেটকাটা ও চাঁদিয়ালের কীভাবে দেখা হয়েছিল ? তাদের বন্ধুত্বই বা কীভাবে গড়ে উঠল?
উত্তর-পেটকাটা ও চাঁদিয়াল দুটি কাগজের ঘুড়ি। এরা আকাশে উড়ছিল। উড়তে উড়তেই এদের দেখা হয়েছিল এরা দুজনেই বুঝেছিল যে, মানুষ এদের নিয়ে শুধুমাত্র খেলা করে। এদের প্রতি মানুষের কোনো অনুভূতি বা সমবেদনা নেই।এরা আকাশে উড়তে উড়তে নানান সুখদুঃখের গল্প করতে থাকে। নীচে নদী, মানুষজন, সবই দেখো প্রাণপণ দুজনেই একসঙ্গে বাঁচার চেষ্টা করে। এভাবেই তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠল।
১৭.৩ বন্ধুত্বকে অটুট রাখতে তারা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল?
উত্তর-বন্ধুত্বকে অটুট রাখতে তারা ভেবেছিল যদি সুতো প্যাচের সময় তারা দুজনেই জট পাকিয়ে ছিড়ে ফেলতে পারে,তবে হয়তো তারা রক্ষা পেতে পারে। উপড়ে যেতে পারে আকাশে একসঙ্গে। তখন কেউ তাদের ধরতে পারবে না, তারাও অসহায় বোধ করবে না। পুরোপুরি মানুষের হাত থেকে মুক্তি পাবে তারা।
১৭.৪ তাদের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত কীভাবে সফল হল ?
উত্তর ? পেটকাটা ও চাঁদিয়াল দুই ঘুড়ির মধ্যে প্যাচের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে দুজনেই প্রাণপণ জেতার চেষ্টা করতে থাকল। মানুষের কাছে তারা হার মানতে চায় না। দুজনেই সুতোয় টান মারতে থাকে। এভাবে হঠাৎই সত্যি সত্যি উপড়ে গেল একসঙ্গে দুটি ঘুড়ি। খুশিতে দুজনেই মাথা নাড়তে নাড়তে উড়ে গেল। এভাবেই তাদের পরিকল্পনা সফল হয়েছিল।
১৭.৫ গল্পে আকাশ কীভাবে দুটি বন্ধু-ঘুড়ির বন্ধু হয়ে উঠল?
উত্তর : পটকাটা ও চাঁদিয়াল এরা যেমন দুই বন্ধু, আবার এদের দুজনের বন্ধু হয়ে গেল আকাশ। ওদের আনন্দে ভেসে থাকার জায়গা হল আকাশ। আকাশের বুকে ওরা সুখ-দুঃখের গল্প করে। আকাশে ভাসতে ভাসতে ওরা যে কোথায় হারিয়ে যায় তা আমরা কেউ জানি না, জানে কেবল আকাশ, কেননা আকাশ ওদের বন্ধু।
তালনবমী গল্পের প্রশ্নের উত্তর দেখুন।