প্রশ্ন-অদ্ভত আতিথেয়তা গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো
প্রশ্ন-অদ্ভত আতিথেয়তা গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো
উত্তর- প্রত্যেক গদ্যের নামকরণ হয় তার বিষয়বস্তু বা প্রধান চরিত্র অবলম্বনে। এখানে গদ্যটি রচিত হয়েছে একটি বিশেষ বিষয়কে অবলম্বন করে। এই গল্পের বিষয়বস্তু হলো 'অতিথিসৎকার'। আরব ও মুরগণ পারস্পরিক শত্রু ছিলেন। এরা একে অন্যকে নির্দ্বিধায় হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করতেন না। কিন্তু তাঁদের ধর্মপরায়ণতার ছিল অতুলনীয় শুধু তাই নয় অতিথিপরায়ণ হিসেবেও তারা যথেষ্ট সুপরিচিত ছিলেন। প্রয়োজনে যেমন শত্রু হত্যা করতে দ্বিধা করতেন না, তেমনি শত্রু অতিথি হলে প্রাণ দিয়ে তাঁকে রক্ষা করতেন। আরব জাতির অতিথিপরায়ণতাই এই গল্পের মূল বিষয়বস্তু।
আরব জাত্রি এই দৃঢ়তা এবং সেইসঙ্গে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পাশাপাশি তাদের ধর্মপরায়ণতা ও অতিথিপরায়ণতার দৃষ্টান্ত এই গদ্যে তুলে ধরা হয়েছে। মানুষের সঙ্গে মানুষের সৌহার্দ্যের সম্পর্ক অথচ মানুষ পরস্পরের শত্রু হয়ে সেই। স্বাভাবিক সম্পর্ক বিনষ্ট করে ফেলে। অতিথির প্রতি আমাদের মনোভাব কেমন হবে সেটাই এই গদ্যের বিষয়। অর্থাৎ অতিথি যখন গৃহে আসেন তখন তাঁকে রক্ষা করা মানুষের ধর্ম। অতিথি যখন বাইরে যান তখন তিনি শত্রু হলে তাঁকে হত্যার মধ্যে কোনো পাপ নেই। লেখক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সেই বিষয়টিই খুব চমৎকারভাবে গল্পের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাই এই গদ্যের নাম 'অদ্ভুত আতিথেয়তা' যথার্থ হয়েছে বলেই মনে হয়।