বোঝাপড়া কবিতায় নামকরণের সার্থকতা বিচার কর
প্রশ্ন বোঝা পড়া কবিতার নামকরণের সার্থকতা বিচার কর।
উত্তর-কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'বোঝাপড়া' কবিতাটি 'ক্ষণিকা' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। সাধারণত বোঝাপড়া দুটি মানুষের মধ্যে হয়। কিন্তু এখানে কবি কেবলমাত্র দুজন ব্যক্তি বা বস্তুর মধ্যে বোঝাপড়ার কথা বলেননি। তিনি ব্যক্তিমনের অন্তরের সঙ্গে ব্যক্তি মানুষের বোঝাপড়ার কথা বলেছেন। মানুষ অপেক্ষা অধিকাংশ সময়ে মানুষের নিজের ছায়া বড়ো হয়ে দাঁড়ায়। সে কিছুতেই অন্যের কাছে নত হতে চায় না। সে ভাবে যে এর ফলে হয়তো বা তার নিজের
গৌরব কমে যাবে। কিন্তু এভাবে যে নিজের গৌরব বৃদ্ধি করা সম্ভব নয় তা মানুষ বোঝে না সে কেবল নিজের কথা ভাবে, নিজের বিষয়ে বলে। কবি নিজের অন্তরের সঙ্গে সেই বোঝাপড়ার কথা, সেই মানসিক যোগাযোগের কথাই বলতে
চেয়েছেন। তিনি কবিতাটিতে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির অবস্থার মানিয়ে চলার কথা কবি বলেছেন। মানিয়ে চলা হলো জীবনের একটি বিশেষ অঙ্গ। এই কাজটি যে পারে সে অন্যদের চেয়ে শ্রেয়। যে পারে না সে অন্যের ওপর দোষারোপ করে।
কবি এই দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করেছেন। তিনি অন্যের দোষ দেখার চেয়ে নিজের ত্রুটিগুলি সংশোধন করা যে অনেকাংশে শ্রেয় তা-ই বোঝাতে চেয়েছেন। তাই কবিতাটির নামকরণ তিনি 'বোঝাপড়া' দিয়েছেন। বিশ্বকবির এই নামকরণের পিছনে যে ভাবার্থ রয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই 'বোঝাপড়া' নামকরণটি সার্থক হয়েছে।